Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেষ ছুটির দিনে মেলায় কেনাকাটার ধুম

| প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বিদায়ের সুর বাজছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার। নতুন করে সময় না বাড়ালে আগামী মঙ্গলবার এবারের মেলার পর্দা নামবে। সে হিসেবে গতকাল ছিল বাণিজ্যমেলার শেষ ছুটির দিন। শেষ ছুটির দিনে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় রয়েছে মেলায়।
শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই মেলার পথে ছিল ভিড়। দুপুর ১২টার পর দর্শনার্থীদের ঢল পরিণত হয় রীতিমতো জনসমুদ্রে। বেড়ে যায় প্যাভিলিয়ন ও স্টলের কর্মকর্তাদের কর্মচাঞ্চল্য। প্রথমদিকের মতো গতকালও ইলেকট্রনিক্স পণ্য, রান্নার সামগ্রী ও পোশাকের দোকানগুলোতে ছিল চোখে পড়ার মতো ভিড়।
মেলায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসেন ঝিনাইদহ থেকে আব্দুর সবুর। তিনি বলেন, পরিবারের সবাই মেলার প্রথম থেকেই মেলায় আসার আবদার করছে। তাদের আবদার পূরণ করতে এবং বাসার জন্য কিছু সামগ্রী কিনতে মেলায় এসেছি।
মিরপুর থেকে আসা মো: মাহফুজুর রহমান বলেন, এবার দিয়ে মেলায় তিনদিন এলাম। আগের দুই দিন কিছু কিনিনি, শুধু দাম শুনে গেছি। এখন দু’টি প্যান্ট ও দুটি টি-শার্ট কিনেছি। দাম আগের দিন যা শুনেছি তার থেকে কম নিয়েছে। অন্য একজন বলেন, বেসরকারি একটি কোম্পানিতে চাকরি করি। বেতন পেয়েছি গত ৫ তারিখে। বেতনের টাকার একটি অংশ মেলার জন্য বরাদ্দ করে রেখেছিলাম। ছোট বাচ্চার খেলনা ও একটি পোশাক কিনেছি। বড় ছেলের জন্য কিনেছি দু’টি প্যান্ট। আর বাসার জন্য একটি রাইস কুকার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন ও একটি বেøন্ডার কিনেছি।
মেলায় পাঁচ বন্ধুরসহ দল বেঁধে ঘুরতে এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো: আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বন্ধুরা মিলে মেলায় ঘুরতে এসেছি। দু-একটা জিনিস কিনেছি। যতক্ষণ ভালো লাগে বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে দেখব। বন্ধুরা মিলে আড্ডা দেবো, আনন্দ করব। এদিকে ছুটির টানা দুই দিনের বিক্রিতে বেশ খুশি স্টলের মালিকরাও। তবে মেলার সময় বাড়ানোর যে গুঞ্জন রয়েছে তা নিয়ে খুশি নন স্টলের কর্মীরা। তাদের দাবি মেলার সময় যেন বাড়ানো না হয়।
বিক্রয় পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে একটি স্টলের মালিক মালেক হোসেন বলেন, শুক্রবার বিক্রি বেশ ভালো হয়েছে। এবারের মেলায় প্রথম থেকেই বিক্রি পরিস্থিতি বেশ ভালো। অন্তত আগের ৩ বছরের চেয়ে অনেক ভালো বলেও তিনি জানান।
জানা গেছে, মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলার শেষদিকে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে পড়েছে কেনাকাটার ধুম। উপচে পড়া ভিড়ে হাজার হাজার ক্রেতা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তারা। তারপরও আশাতীত বিক্রিতে তৃপ্ত তারা। মেলার প্রথম ২৫ দিনে ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট বাংলাদেশী ব্র্যান্ড ওয়ালটনের বিক্রি বেড়েছে গতবারের তুলনায় ৩২ শতাংশেরও বেশি। মেলা শেষে প্রবৃদ্ধি ৫০ শতাংশে উন্নীত হবে বলে সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা।
জানা গেছে, চলতি বাণিজ্যমেলায় ৫ শতাধিক মডেলের ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল পণ্য নিয়ে এসেছে ওয়ালটন। আছে শতাধিক মডেলের নতুন পণ্য। এর মধ্যে রয়েছে ২ মডেলের ল্যাপটপ; প্রিমো এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশিপ এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন ‘এক্সফোর প্রো’ ছাড়াও ২০টি নতুন মডেলের স্মার্টফোন; অত্যাধুনিক বিভিন্ন প্রযুক্তি ও ডিজাইনের বিশ্ব মানসম্পন্ন ১২টি নতুন মডেলের গøাস ডোর, ডিজিটাল ডিসপ্লে, সাইড সাইড সাইড, ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার, ব্যাচেলর, ফ্রস্ট ও নন-ফ্রস্ট রেফ্রিজারেটর; ফুল এইচডি ও এলইডি টেলিভিশন, বেশ কিছু নতুন মডেলের এয়ারকন্ডিশনারসহ ডোনাট মেকার, স্যান্ডউইচ মেকার, ওয়াটার হিটার/গিজার, শরীরের ওজন মাপার যন্ত্র, বেøন্ডার, রাইসকুকার ইত্যাদি। এসেছে সিলড লেড এসিড রিচার্জেবল ব্যাটারি, এলইডি বাল্ব, এলইডি প্যানেল লাইট, ওয়াল মাউন্টেড এলইডি টিউবলাইট, ইলেকট্রিক সুইস-সকেট, হোল্ডার, ফ্যান রেগুলেটরসহ অসংখ্য পণ্য।
ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের কর্মকর্তারা জানান, মেলায় ওয়ালটন পণ্যের মধ্যে রয়েছে ১১২ মডেলের রেফ্রিজারেটর, ৯ মডেলের ডিপ ফ্রিজ, ৬৬ মডেলের এলইডি টিভি, ২২টি মডেলের ল্যাপটপ, প্রায় ৭০টি মডেল ও কালারের ট্যাব, স্মার্ট ও ফিচার ফোন, ১০ মডেলের এয়ার কন্ডিশনার, আয়রন, রিচার্জেবল পোর্টেবল ল্যাম্প ও টর্চলাইট, ২৩ মডেলের রাইসকুকার, ৪৬ মডেলের এলইডি লাইট, ১৩ মডেলের জেনারেটর, বেøন্ডার ও ইলেকট্রিক কেটলি, ১৪টি করে মডেলের কভার প্লেট মেটালিক বø্যাক ও ইলেকট্রিক সুইস, ৯ মডেলের কিচেন কুকওয়্যার, ১২ মডেলের সুইস-সকেট, ৮টি মডেলের গ্যাস স্টোভ (এনজি ও এলপিজি), ৭ মডেলের মাইক্রোওয়েব ওভেন ও ওয়াল মাউন্টেড টিউব লাইট, ৬টি করে মডেল রয়েছে সিলড লেড এসিড রিচার্জেবল ব্যাটারি, সুইং মেশিন ও কভার প্লেটের, ৫টি করে মডেলের ইলেকট্রিক ওভেন, রুম হিটার, ওয়াশিং মেশিন ও এলইডি টিউবলাইট, ৪ মডেলের অটো ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার, ওয়াটার পিউরিফায়ার, ইলেকট্রিক জাংশন বক্স ও এলইডি প্যানেল লাইট, ৩টি করে মডেলের ওয়াটার ডিসপেনসার, ভ্যাকুয়াম ফ্লাস্ক, কেক মেকার, সিলিং ফ্যান, ২ মডেলের মাল্টি কারি কুকার, ওয়াটার হিটার/গিজার, হেয়ার স্ট্রেইনার, শরীরের ওজন মাপার যন্ত্র, রুটি মেকার, এয়ার কুলার, প্রেসার কুকার, দেয়াল ফ্যান, রিচার্জেবল ফ্যান ও হোল্ডার। এছাড়া রয়েছে ১টি করে মডেলের অটোমেটিক ভোল্টেজ প্রোটেক্টর, ইলেকট্রিক লাঞ্চ বক্স, হেয়ার ড্রায়ার, প্রাইস কম্পিউটিং ওয়েট মেশিন, মপ সেট, ভেজিট্যাবল (সালাদ) মেকার, স্যান্ডউইচ মেকার, ডোনাট পেলেট এক্সেসরিজ, কফি মেকার, টোস্টার, এয়ার ফ্রায়ার, ফ্যান রেগুলেটর ও পাওয়ার ব্যাংক।
ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন ইনচার্জ মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, বিক্রির ধুম পড়েছে। প্যাভিলিয়নে ক্রেতাদের শামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। দেখার চেয়ে এখন কেনার লোকই বেশি। তিনি জানান, গত বছরের চেয়ে এবার তাদের বিক্রি বেড়েছে আশাতীত। গত বছরের মেলায় তারা ৭ কোটি ৮২ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেছিলেন। তাদের প্রত্যাশা এবার ১০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শেষ

২০ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ