পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের অধিকাংশ শহরে হামলা চালাতে সক্ষম আবাবিল নামের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করলো পাকিস্তান। পরমাণু অস্ত্রবাহী ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য এই ক্ষেপণাস্ত্রের (সারফেস ব্যালাস্টিক মিসাইল-এসএসএম) প্রথম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান। আবাবিলের রেঞ্জ ২২০০ কিলোমিটার। গত মঙ্গলবার আবাবিলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয় বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দফতর (আইএসপিআর)। বিবৃতিতে বলা হয়, আবাবিলের সর্বোচ্চ রেঞ্জ ২২০০ কিলোমিটার। মাল্টিপল ইন্ডিপেন্ডেন্ট রি-এন্ট্রি ভেহিকল (এমআইআরভি) নামে বহুমুখী প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রটি। এই ক্ষেপণাস্ত্রটির বৈচিত্র্যপূর্ণ নকশা এবং অস্ত্রের প্রযুক্তিগত মাপকাঠি পরীক্ষা করে দেখতেই এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। আবাবিল পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এবং শত্রুপক্ষের রাডারের চোখ ফাঁকি দিয়ে নিখুঁতভাবে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সমর্থ। নতুন এ ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরির কারণও ব্যাখ্যা করা হয়েছে আইএসপিআরের বিবৃতিতে। এতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম (বিএমডি) ক্রমেই বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার সক্ষমতা বজায় রাখার বিষয় নিশ্চিত করতেই আবাবিলের পরীক্ষা চালানো হয়েছে। এ মাসের শুরুতে সাবমেরিন থেকে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘বাবর-৩’ এর সফল পরীক্ষার ধারাবাহিকতায় আবাবিলেরও পরীক্ষা হলো। বাবর-৩ এর পরীক্ষার পর পাকিস্তান দাবি করেছিল এর মাধ্যমে দ্বিতীয় স্তরের আক্রমণের সক্ষমতা অর্জন করে পাকিস্তান বড় ধরনের বৈজ্ঞানিক মাইলফলক অর্জন করল। পাকিস্তানের প্রতিবেশী (ভারত) পরমাণু অস্ত্র নিয়ে যে ভাবভঙ্গি করছে এর মাধ্যমে তার জবাবও দেয়া হলো। ভারত মহাসাগরের গভীরে অস্থায়ী প্লাটফর্ম থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়েছিল, তবে ওই এলাকার অবস্থান প্রকাশ না করলেও নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করে। বাবর-৩ ক্ষেপণাস্ত্রটি হচ্ছে সাগর থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য। এটি গত বছরের ডিসেম্বরে উৎক্ষেপিত ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বাবর-২ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। উল্লেখ্য, গত বছর শেষার্ধ্ব থেকে বিরোধপূর্ণ কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে তীব্র বিরোধে জড়িয়ে পড়ে উপমহাদেশের পারমাণবিক শক্তিধর দু’দেশ ভারত-পাকিস্তান। এ উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ হুমকি দেন, আক্রান্ত হলে ভারতে পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করবে পাকিস্তান। পরিসংখ্যান বলছে, পাকিস্তানের হাতে বেশ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যার আওতায় রয়েছে নয়াদিল্লি-কলকাতাসহ ভারতের প্রধান শহরগুলো। পরমাণু বোমা নিক্ষেপের জন্য পাকিস্তানের হাতে থাকা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো হলো ‘নাসর’, ‘হাতফ’, ‘গজনভি’, ‘আবদালি’। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলির রেঞ্জ ৬০ থেকে ৩২০ কিলোমিটার। এছাড়াও পাকিস্তানের হাতে রয়েছে ‘ঘুরি’ এবং ‘শাহিন’ ক্ষেপণাস্ত্র। ক্ষেপণাস্ত্র দুটির রেঞ্জ ৯০০-২৭০০ কিলোমিটার। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে দিল্লি, কলকাতা, মুম্বাই, জয়পুর, আমদাবাদ, পুণে, নাগপুর, ভুপাল এবং লখনৌর মতো শহরে পরমাণু হামলা চালাতে পারবে পাকিস্তান। এদিকে, ভারতের আছে পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র ‘পৃথ্বী’ এবং ‘অগ্নি’। এর মধ্যে পৃথ্বীর রেঞ্জ ১৫০ থেকে ৬০০ কিলোমিটার এবং অগ্নির রেঞ্জ ৭০০ কিলোমিটার। ফলে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি, করাচি, লাহৌর, নওশেরাসহ বড় সব শহরই ভারতের পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় রয়েছে। বর্তমানে ভারতের কাছে ১১০-১২০টি এবং পাকিস্তানের কাছে ১২০-১৩০টি পরমাণু বোমা রয়েছে। মার্কিন সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফিজিশিয়ান্স ফর দ্য প্রিভেনেশন অফ নিউক্লিয়ার ওয়ার এর রিপোর্ট অনুযায়ী ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হলে অন্তত ২ কোটি মানুষের মৃত্যুর আশংকা রয়েছে। রয়টার্স, ইন্ডিয়া টুডে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।