Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

‘স্যার, আমরা চুরি করিনা কাজ করে খাই’

| প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পুলিশের পা ধরে তিন ভাইয়ের আকুতি
চট্টগ্রাম ব্যুরো : ‘স্যার, আমরা চুরি করতে জানি না, কাজ করে খাই। আমার ভাই চোর নয়, তাকে ছেড়ে দিন।’ এভাবে ব্যস্ত সড়কে কান্নাকাটি আর হাতে পায়ে ধরেও পুলিশের মন গলাতে পারেনি তিন কিশোর সহোদর। চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে এক ভাইকে ধরে নিয়ে থানায় পুড়েছেন পুলিশের এসআই সোহেল।
গত রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভাই আবদুর রহিমকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে থানার ফটকে অঝোরে কাঁদছিল দুই ভাই মো. রাসেল ও রায়হান। কোতোয়ালী থানা হাজতখানার দেয়াল ধরে কাঁদছিল রহিমও। কিন্তু তাদের কান্না পুলিশের কান পর্যন্ত পৌঁছেনি।
গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুর দেড়টায় নগরীর কাজীর দেউড়ি থেকে ১৪ বছরের কিশোর আবদুর রহিমকে আটক করে পুলিশ। এ সময় মোটরসাইকেলে বসা কোতোয়ালী থানার এএসআই সোহেলের পা জড়িয়ে ধরে চুরি করেনি বলে কান্নাকাটি শুরু করে আবদুর রহিম। সাথে থাকা ছোট ভাই রাসেলও এএসআই সোহেলের অপর পাটি জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
খবর পেয়ে ছুটে আসে আরেক ভাই রায়হানও। তিন ভাই মিলে ব্যস্ত সড়কে পুলিশ কর্মকর্তার হাত পা ধরে করুণ কাকুতি মিনতি করতে শুরু করে। এ সময় সেখানে মানুষের ভিড় জমে যায়। তাদের তিন ভাইয়ের দাবি তারা চোর নয়। কাজির দেউড়ি বাজারে মাছের দোকানে চাকরি করে জীবন চালায় তারা।
ছোটবেলা থেকেই এ বাজারে কাজ করছে তারা। বাজারের ব্যবসায়ী এমনকি ক্রেতারাও তাদের চিনে। তিন ভাইয়ের কান্নাকাটিতে উপস্থিত লোকজনের চোখেও পানি আসে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। দুই ভাইকে ধাক্কা মেরে ফেলে রহিমকে নিয়ে যাওয়া হয় কোতোয়ালী থানায়। সন্দেহভাজন হিসেবে রাহিমকে আটক করে মোটরসাইকেলে বসিয়ে থানায় নিয়ে যায় এসআই সোহেল।
মো. রাসেল বলেন, কিছুদিন আগে নাকি সিডিএ মার্কেটের তিনতলা থেকে একটি ল্যাপটপ চুরি হয়েছে। আজ আমার ভাই বাজারে মাছের দোকানে কাজের ফাঁকে চা খেতে এসেছিল। এ সময় বন্ধুদের সঙ্গে তিনতলায় উঠেছিল কথা বলতে। এ সময় রানা নামের এক ভদ্রলোক তাকে ধরে কিল-থাপ্পড় মারতে থাকে। পরে পুলিশে সোপর্দ করে।
বলতে বলতে কাঁদতে থাকে রাসেল। বললেন, বাবা মারা গেছেন রমজানে। রেখে গেছেন তিন ভাই এক বোন। তিন ভাই কাজীর দেউড়ি মাছের দোকানে শ্রমিকের কাজ করি। পরিশ্রম করে কোনো রকমে সংসার চালাই। আমরা চুরি করি না।
যোগাযোগ করলে এএসআই সোহেল বলেন, ল্যাপটপ চুরির মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র শীল আমাকে বলেছেন সন্দেহভাজন একজনকে বাদী আটক করেছেন। আমি তাকে থানায় পৌঁছে দিয়েছি।
বিকাশ চন্দ্র শীল বলেন, ল্যাপটপ কে চুরি করেছে তা কেউ দেখেননি। তিনতলায় কয়েকজন কিশোর আড্ডা মারছে দেখে বাদীর সন্দেহ হয়েছে। তিনি একজনকে আটক করে খবর দিয়েছেন। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে এসেছি। কথাবার্তা বলে সন্দেহজনক মনে না হলে ছেড়ে দেওয়া হবে।
রাতে থানায় যোগাযোগ করা হলে ডিউটি অফিসার রোকেয়া জানান, রহিমকে থানা হাজতে রাখা হয়েছে। চুরির মামলায় আনা হলেও রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।



 

Show all comments
  • Kalam ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ৩:৫৯ এএম says : 0
    amar mone hoy na je seleta chor
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ৭:১২ এএম says : 3
    আমাদের দেশে গরীব ছেলেদের একত্রে বসে চা খাওয়া বা কোথায় বসে আড্ডামারা আজকাল খুবই ভয়ের কারন হয়ে দাড়ীয়েছে। এসব ছেলেপেলেকে খুবই সহজে সন্দেহের তালিকায় নেয়া যায় যদিও এরা ভাল ছেলে এবং এদের আবিভাবক কমজোরি। কিন্তু কেতার দুরস্ত ছেলেরা যতই খারাপ হউক তাদের দিকে হাত বাড়ানো এত সহজ নয় কারন তাদের খুটির জোড় আছে। তাই আজ বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বেড়েগেছে কারন সন্ত্রাসীরা কেতারদুরস্ত। আমাদের পুলিশ জানে তারপরও সেদিকে তাদের নজর নেই এটাই দুঃখজনক। এখানে বাদী কোন কারন ছাড়াই একজনকে সন্দেহ করে ধরে পুলিশে দিল আর পুলিশ তাকে ধরে নিয় গেল উৎস না দেখে, ঘটনাটা বুঝা গেল না। বাদী যাকে তাকে সন্দেহ করতে পারে কিনা এটা একটা প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। এভাবে যদি যাকে খুশি তাকে দেখলেই সন্দেহ হয় তাহলে সাধারনের চলাফেরা করাটা কঠিন হয়ে উঠবে নাকি পুলিশ ভাইজান???? দেখা যাক আমাদের বিজ্ঞ পুলিশ বাহিনীর সদস্য এখানে কি করেন??? পত্রিকার প্রতি অনুরোধ রইল এই সংবাদটার শেষ যেন আমরা জানতে পারি ধন্যবাদ।
    Total Reply(2) Reply
    • ২৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ৯:০৬ পিএম says : 4
      Valo laglo comment ta, head's of you for your dearing comment
    • Sazidul ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ৪:৪৩ পিএম says : 4
      Amader deser police ei rakom kisu korar nei bhai. kotha bolle jekono ekta mamlai attached kore dibe so kew kotha bolte sahos paina. amar samne 10 taka projonto ghush niyece savar bus stand. era etoy nise neme gese j bole ses kora jabena. but top level eto kisu to janena janle ei police guloke punishment babostha korto. vul hole khoma korben dear all
  • ডাঃ কামরুজজামান ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ৭:৪২ এএম says : 0
    এ ধরনের খারাপ পুলিশের কারনে দেশের সমসত পুলিশ বাহিনীর বদনাম, মাননীয় সরকার মহদয়ের কাছে আমার নিবেদন এই ধরনের অসত পুলিশ কে লাথি মেরে বের করা হউক। কারন এরা দেশ কে ভাল বাসে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ৭:৫৮ এএম says : 0
    The Bangladesh became as like as police state.What ever they like they are doing to the people.
    Total Reply(0) Reply
  • Jasim Uddin Bhuiyan ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:১৩ পিএম says : 0
    It is possible only in Bangladesh, I believe no where in the world that can be possible. Without any kind of solid proof or evidence how dare a police officer arrested a citizen of the country
    Total Reply(0) Reply
  • Papon Khan ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:১৪ পিএম says : 1
    আর এসব কারনেই police এর উপর মানুষ আস্তা হারিয়ে ফেলেছে
    Total Reply(0) Reply
  • Md Alamin Hossen ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:১৫ পিএম says : 2
    মাছের বাজারে যে ছেলেটি কাজ করে জীবনধারন করে সে ল্যাপটবের কি বুঝবে।হয়তো ছেলেটি নির্দোষ হতে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • Pabel ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:১৫ পিএম says : 0
    police k সম্মান করব কি ভাবে।এই সব কাজ করলে সম্মান আসবে কি করে।
    Total Reply(0) Reply
  • Razikul Islam ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:১৬ পিএম says : 0
    hai r police....
    Total Reply(0) Reply
  • Asiq ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:১৮ পিএম says : 2
    যারা আকুতি বোঝেন না তাদের কাছে আকুতি করে কি হবে ।আললাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন ।আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • ফয়েজ ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:৩৮ পিএম says : 0
    যেভাবে পুলিশ জনগণের উপর নির্যাতন করছে, এর কি কোনও ই প্রতিকার নাই? সন্দেহ ভাজন বলে যাকে তাকে উঠিয়ে নিচ্ছে! পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করার কোনো আইন নাই? আমি আইন সম্পর্কে তেমন কিছুই জানিনা। তাই লিখলাম।
    Total Reply(0) Reply
  • salim ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ৩:৩৫ পিএম says : 0
    চুরির মামলায় তাকে নিয়ে গেছে ভাগ্য ভাল সে তো গুম হয়নি
    Total Reply(0) Reply
  • Md Ashaqur Rahman ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ৮:৪৭ পিএম says : 0
    Sotik todanto kora hok, Nirdus holeo Police ke Taka kiso korbe?
    Total Reply(0) Reply
  • UDDIN ২৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:৪৯ এএম says : 0
    ALL POSSIBLE IN THIS COUNTRY
    Total Reply(0) Reply
  • Duranto Ami ২৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ৭:৫৭ এএম says : 0
    They r not Police, they r ......................................
    Total Reply(0) Reply
  • বাবুল হোসাইন রনি ২৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:১৯ পিএম says : 0
    পুলিশ জনগনের বন্দু এই কথাটি কি মিথ্যা হয়ে যাবে? ঐ থানার ওসি কোথায় থাকে সে কি বলে
    Total Reply(0) Reply
  • sazidul ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ৪:৪৭ পিএম says : 0
    we know the Bangladeshi police is very low level. there take any amount from public. sometimes ago I see 1 (one) police member taken 10 taka from auto rickshaw drive.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ