চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
মো. আবু তালহা তারীফ : উম্মত রাসূল (সা:)-এর আমরা। আমরা সকলে হজরত মুহাম্মদ (সা:)কে আল্লাহর নবী ও রাসূল বলে স্বীকার করি। আমরা প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা:) এর উম্মত তাই উম্মতদের সকল বিষয় তিনি খেয়াল রাখতেন। উম্মতদের ক্ষতিকর বিষয়সমূহ হল বিপদগমিতা, ত্রুটিমুক্ত আমল, পার্থিব জীবনে সুখময় ভাবে জীবন পরিচালনা করা, পরকালীন যাবতীয় ক্ষতিকর ও অনিষ্টকর বিষয় থেকে বাঁচানোর জন্য বিশ্বভূষণে তাশরীফ এনেছিলেন বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত আলোর দিশারী হজরত মুহাম্মদ (সা:)। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমাদের কাছে এসেছেন তোমাদের মধ্যে থেকে এক মহামর্যাদানবান রাসূল যিনি তোমাদের ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপদগামী হওয়া হওয়ার খুবই উদ্বিগ্ন এবং সৎকর্মের প্রতি ধাবমান হওয়ার বড়ই আশাবান। তিনি মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল দয়ালু”। (সরা তাওবা-২২৮)
রাসূল (সা:) উম্মতদের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি থেকে বাঁচানোর জন্য অবিরাম চেষ্টা করছেন। কোন কাজ করলে নেক আমল হয় এবং কোনটি করল নাফারমানি হয়, সে সম্পর্কে তার উম্মতদের শিক্ষা দিয়েছেন। উম্মতদের ইহকালীন ও পরকালীন সকল সমস্যার এবং সকল ধরনের ক্ষতি থেকে সর্ব সময় চেষ্টা করেেছন। বিশ্ব খ্যাত তাফসীরে ইবনে কাসিরে বলা হয়েছে, রাসূল (সা:) ইরশাদ করেেছন, আল্লাহ তায়ালা কতিপয় বস্তুকে হারাম করেছেন অথচ তিনি এটাও অবগত আছেন যে, তোমাদের অনেকেই তাতে লিপ্ত হবে। আর আমি তোমাদের হেফাজত করেছি। অথচ তোমরা পতঙ্গের সেই আগুনে ঝাঁপ দিতে উদ্যত হচ্ছো”। আর উম্মতের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা ও মহাক্ষতি যার ওপর আর কোন ক্ষতি নেই, সেটা হল দুনিয়াতা ঈমানহারা হওয়া এবং তারই পরিনতিতে আখিরাতে স্থায়ী জাহান্নামী হওয়া। এ সকল ধরনের ক্ষতি থেকে উম্মতের রক্ষা করার জন্য প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা:) বেশী চিন্তিত থাকতেন। পাহাড়ের চূড়ায় উঠে রাসূল (সা:) সর্ব সময় ভাবতেন কিভাবে মানুষদের অন্যায় অবিচার কাজ থেকে বিরত রাখা যায়। নিজিকে বিলীন করে দিয়েছিলেন তার উম্মতের জন্য। মহান আলাহ তায়ালা বলেন, “ঐ সমস্ত লোক ঈমান আনছে না এ কারণে কি তাদের চিন্তায়ও পেরেশানীতে আপন নিজেকে শেষ করে দিবেন”। (সূরা শুরা-৩)
উম্মতের জন্য মায়াবি নবী হজরত মুহাম্মদ (সা:) সর্ব সময় উম্মতের জন্য পেরেশান ছিল। বদরের যুদ্ধে ৩১৩ জন সাহাবী যখন যুদ্ধ করতে গেল প্রিয় নবী মহান প্রভুর দরবারে তার সাহাবীদের জন্য দোয়া করল হে আল্লাহ এই সাহাবীরা আমার অনেক আদরের এই সাহাবীদের তুমি মেরো না এদের তুমি রক্ষা কর। উহুতে রাসূল (সা:)-এর দাঁত ভেঙ্গেছে, মাথা ফেটেছে খন্দকের যুদ্ধে মাটি বহন করতে করতে নিজ শরীরে দাগ হয়ে গিয়েছে তায়েফে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে তায়েফের দুষ্ট ছেলেরা রাসূল (সা:) এর সাথে ঠাট্টা করেছে গালমন্দ করেছে, তারা রহমাতুলিল আলামিন এর উপর কঙ্কল নিক্ষেপ করেছে। রাসূল (সা:) অজ্ঞান হয়ে পরে যায়। রাসূল (সা:) এর জ্ঞান ফিরলে দাড়করিয়ে পুনরায় পাথর নিক্ষেপ করলে তার সমস্ত শরীর রক্তে লাল হয়ে যায়। পায়ের জুতা রক্তের কারনি পায়ের সাথে জমাট বেঁধে যায়। হাঁটতে পারেন না প্রিয় রাসূল (সা:) চোখের কোনা দিয়ে রক্ত টপটপ করে পড়ে তায়েফের মাটি ভিজছে। ফিরিশতারা এসে রাসূল (সা:) এর নিকট অনুসমতি চাইল তায়েফের এলাকা ধ্বংস করে দেই রাসূল (সা:) উত্তর দিলেন না, তারা বুঝে না, যদি বুঝত তাহলে আমাকে অত্যাচার করত না, তোমরা ওদের ধ্বংস কর না ওদের উপর রহম কর। রহমতের নবী তিনি তার প্রিয় উম্মতের প্রতি খুব মায়া ছিল। কি রকম সে সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “কি রকম সে সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “নবী হাম্মদ (সা:) মুমিনদের ব্যাপাওে এতটুকু স্নেহ মমতা রাখেন যতটুকু মুমিনগণ নিজেরা নিজেদের ব্যাপারেও স্নেহ মমতা রাখেন না। অর্থাৎ মানুষ নিজেকে যতটুকু মহব্বত করে নবী (সা:) তার থেকে বেশী সেই উম্মতকে মহব্বত করেন”। (সূরা আহযাব-৬)
রহমতের নবী রাসূল (সা:) গুনাহগার উম্মতের প্রতি বিশেষ স্নেহশীল ছিলেন। রাসূল (সা:) ইরশাদ করেন, “প্রত্যেক নবী রাসূলকে কবুলের গ্যারন্টি দিয়ে একটি দোয়া করার অনুমতি মহান আল্লাহ তায়ালা দিয়েছিলেন। প্রত্যেক নবী ও রাসূল মহান আল্লাহর দেয়া গ্যারান্টি দেওয়া কবুলিয়াতের দুয়াটি দুনিয়াতে করেছেন, আর মহান আল্লাহ তাদের সেই দোয়াটি কবুল করেছেন, কিন্তু আমি দোয়াটি অখিরাতে আমার সেই কবুলের দোয়াটি গুনাহগার উম্মতের নাজাতের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছি”। (মুসলিম শরীফ)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।