মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : শপথ গ্রহণের পর পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হাতে চলে এসেছে একক সিদ্ধান্তে পারমাণবিক হামলা চালানোর যন্ত্র নিউক্লিয়ার ফুটবল। অনেকটা সন্তর্পণেই অজ্ঞাত এক সামরিক কর্মকর্তা একটি ব্যাগ নিয়ে আসেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে। এরপরই ট্রাম্পের হাতে চলে আসল এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, যার ফলে এক ঘণ্টার মধ্যেই লাখ-লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। আর এ কারণেই এখন অনেক মানুষের মাথায় প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে যে, এমন পাতলা চামড়া এবং আবেগতাড়িত মেজাজের একজন মানুষের হাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকার পর সেই ভয়ঙ্কর পরিণাম ঠেকাতে আর কি কি রক্ষাকবচ থাকবে বা আদৌ থাকবে কিনা?
খবরে বলা হয়, শেষ কর্মদিবস পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাশে একজন অজ্ঞাত সামরিক কর্মকর্তার দেখা মিলবে। তার হাতে অথবা কাঁধে ঝোলানো থাকবে মোটাসোটা একটি ব্রিফকেস। এ ব্রিফকেসের নাম নিউক্লিয়ার ফুটবল ব্যাগের ভেতরে থাকবে ‘বিস্কিট’ নামে পরিচিত ছোট একটি যন্ত্র। ৫ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য এবং ৩ ইঞ্চি প্রস্থের সেই যন্ত্রের ভেতরেই থাকবে কৌশলগত পারমাণবিক হামলা চালানোর লঞ্চ (নিক্ষেপ) কোড। কিভাবে সেই যন্ত্র ব্যবহার করতে হয় সেটি এরইমধ্যে লোকচক্ষুর অন্তরালে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শেখানো হয়েছে। প্রথমেই বলে রাখা ভালো, ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে যেসব প্ররোচণামূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন সম্প্রতি তার থেকে অনেকটাই সরে এসেছেন। কিছুদিন আগে তিনি নিজেকে এই অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে এমন শেষ ব্যক্তি বলে দাবি করেছেন। যদিও পারমাণবিক হামলা চালানোর আশঙ্কা তিনি উড়িয়ে দেননি। পারমাণবিক হামলার চেইন অব মান্ডে অন্যান্য সিনিয়র কর্মকর্তারাও যুক্ত থাকবেন, যেমন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল জেমস ম্যাটিস। তবে ওয়াশিংটনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তারবিষয়ক বিশেষজ্ঞ মার্ক ফিজপ্যাট্রিক বলছেন, হামলা চালানোর চূড়ান্ত কর্তৃত্ব শুধু প্রেসিডেন্টের ওপরই বর্তাবে। তিনি বলেন, পারমাণবিক হামলা চালানোর ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের কর্তৃত্ব নিয়ে কোন চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের সুযোগ নেই। তবে তিনি নির্দেশ দেওয়া থেকে শুরু করে বোমা নিক্ষেপের আগ পর্যন্ত আরও কিছু মানুষ এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবেন। একজন প্রেসিডেন্ট একাই এ ধরনের বিশাল কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন এমনটা অনেকটাই অবাস্তব। তিনি নির্দেশ দেবেন এবং সাংবিধানিকভাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব সেই নির্দেশ পালন করা। তবে তাত্ত্বিকভাবে বললে, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর যদি প্রেসিডেন্টের মানসিক সুস্থতা নিয়ে কোনও সন্দেহ থাকে; তবে তিনি নির্দেশ পালনে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন। এটিকে একটি অভ্যুত্থান হিসেবে গণ্য করা হবে এবং প্রেসিডেন্ট চাইলে তাকে তৎক্ষণাৎ চাকুরিচ্যুত করে উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী অনুযায়ী, ভাইস-প্রেসিডেন্ট চাইলে প্রেসিডেন্টকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে মানসিকভাবে অসমর্থ ঘোষণা করতে পারেন। তবে সেজন্যেও তার মন্ত্রিসভার অধিকাংশের সমর্থন লাগবে। প্রসঙ্গ উঠতে পারে কিভাবে পারমাণবিক হামলা কাজ করবে? নিউক্লিয়ার ফুটবল নামের ব্রিফকেসের ভেতরে একটি ‘ব্ল্যাক বুক’ আছে; যার ভেতরে কি ধরনের হামলা চালাবেন সেটি নির্ধারণ করতে পারবেন প্রেসিডেন্ট। এর আগে সেটি খোলার জন্য একটি প্লাস্টিক কার্ড ব্যবহার করে তিনি নিজের পরিচয় নিশ্চিত করবেন।সাবেক একজন প্রেসিডেন্ট তার জ্যাকেটের ভেতর ওই কার্ডটি রেখে সেটি ড্রাই ক্লিনার্সের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বলে ওয়াশিংটনে একটি জনশ্রুতি রয়েছে। প্রেসিডেন্ট যখন একটি লম্বা তালিকা থেকে বোমা নিক্ষেপের নির্দেশ দেবেন, তখন প্রথমেই সেটি যাবে পেন্টাগনের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের ওয়ার রুমে। এরপর সেটি যাবে নেব্রাস্কা বিমানঘাঁটির মার্কিন স্ট্র্যাটেজিক কমান্ড সদর দফতরে। সেখান থেকে গোপন কোডের মাধ্যমে নির্দেশটি পাঠানো হবে যারা মূল বোমাটি নিক্ষেপ করবেন তাদের কাছে। তারা তখন ওই কোডটি তাদের কাছে রাখা একটি সেফের (সিন্দুক) ভেতর রাখা কোডের সঙ্গে মিলিয়ে দেখবে। বিবিসি’র নিরাপত্তা বিশ্লেষক ফ্রাঙ্ক গার্ডনার হোয়াইট হাউজের একজন সাবেক সিনিয়র কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলছেন, যদি কোনও দেশের ওপর পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্তে পারমাণবিক হামলা চালানো হয় তাহলে এর সঙ্গে অনেক মানুষই জড়িত থাকবেন। ভাইস-প্রেসিডেন্ট, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং মন্ত্রিসভার একটি বড় অংশ এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা। তবে যদি আকস্মিকভাবে কৌশলগত কোনও হুমকি দেখা যায়; যেমন কোনও শত্রুরাষ্ট্র থেকে মিসাইল আসছে এবং তা কয়েক মিনিটের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাবে বলে নিশ্চিত হওয়া যায় তাহলে এককভাবে পারমাণবিক হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা মার্কিন প্রেসিডেন্টের রয়েছে। বিবিসি, রয়টার্স, এপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।