বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে ঃ “একজন শ্রমিক এক দিনের বেতন দিয়ে এক মাসের চাল কিনতে পারে” নরসিংদীর উন্নয়ন মেলায় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী লেঃ কর্ণেল (অব:) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরুর এমন বক্তৃতা নিয়ে নরসিংদীর রাজনৈতিক মহলে চলছে বিভিন্নমুখী আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়। ব্যাপক জনগণের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার। শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। বিরোধী দলীয় কয়েকজন নেতা বলেছেন, প্রতিমন্ত্রীর দেয়া এ বক্তব্য একবারেই উদ্ভট। তারা প্রতিমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, প্রতিমন্ত্রীর বক্তৃতার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। নরসিংদী একটি শিল্প প্রধান এলাকা। এখানকার শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহে লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করে। এখানে ব্যাপকভাবে শ্রম শোষণ হয়। এমন শিল্প-কারখানা কম যেখানে শ্রমিকদেরকে সরকার ঘোষিত মজুরী কমিশন অনুযায়ী বেতন ভাতা দেয়া হয়। এমন হাজার হাজার শিল্প কারখানা রয়েছে যেখানে শ্রমিকদেরকে মাস্টার রুলের ভিত্তিতে চাকুরী করতে হয়। শ্রমিকদের কোন নিয়োগ পত্র নেই। শিশু শ্রম নিষিদ্ধ হলেও কলকারখানাগুলোতে প্রচুর সংখ্যক শিশু শ্রমিক কাজ করছে। শ্রম শোষণের সুবিধার জন্য তারা শিশু শ্রমিকদেরকে চাকুরী দিচ্ছে। শিল্প মালিকরা হাজার হাজার শিশু শ্রমিকদের শ্রম শোষণ করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে। নরসিংদীর এই বাস্তব চিত্রটি মন্ত্রী না হলেও একজন এমপি হিসেবে জানার খুব জরুরী ছিল। নরসিংদী শহর বিএনপির সভাপতি গোলাম কবির কামাল মন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এক দিনের বেতন দিয়ে এক মাসের চাল কেনা একেবারেই অসম্ভব ও অবাস্তব। জেলা যুবদলের আহবায়ক মহসিন হোসাইন বিদ্যুৎ বলেন, প্রতিমন্ত্রী সাহেব আমাদের সবারই শ্রদ্ধেয়। কিন্তু আমরা তার এই বক্তব্যের সাথে এক মত হতে পারলাম না। একজন নির্মাণ শ্রমিক দৈনিক ৪শ’ টাকা মজুরী পায়। এই ৪ শ’ টাকা দিয়ে কিভাবে এক মাসের চাল কিনতে পারে। মন্ত্রী সাহেব শ্রমিক পরিবারের কথা বলেছেন না শুধু শ্রমিকের নিজের খাবারের চালের কথা বলেছেন তা স্পষ্ট নয়। পরিবারের জন্যতো নয়ই, এমনকি নিজের জন্যও সম্ভব নয়।
অন্য এক শ্রমিক নেতা বলেন, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী সরকারের উন্নয়নের প্রশংসা করতে গিয়ে ভাবাবেগে এমন কথা বলে থাকতে পারেন। মন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলা যায় যে, এটা মন্ত্রী সাহেবের অন্ধ আনুগাত্যের বহিঃপ্রকাশ। প্রকৃত পক্ষে প্রতিমন্ত্রীর দেয়া এ তথ্যের সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। একজন শ্রমিককে ১ মাসের চাল কিনতে হলে দৈনিক ৭০০ টাকা বেতন পেতে হবে। মাসে পেতে হবে ২১ হাজার টাকা। আর বাংলাদেশে এমন শ্রমিকের সংখ্যা খুবই নগন্য যারা মাসে ২১ হাজার টাকার উপরে বেতন পায়। বিগত ৮ বছরে সরকারের বহুমুখী উন্নয়নের স্বাক্ষর রয়েছে। আর এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। উন্নয়ন চলতেই থাকবে। কিন্তু সরকারকে উন্নয়নের জন্য বাহবা দিতে গিয়ে উদ্ভট তথ্য দিয়ে প্রকৃত উন্নয়নকে বির্তকিত করা সঠিক হবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।