নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
জাহেদ খোকন : ক্লাব কর্মকর্তাদের দফায় দফায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে প্রবেশ। সেখানে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন। হোটেল থেকে খেলোয়াড়রা বাফুফে ভবনে ফিরলে সেখানেই তারা অবরুদ্ধ। তাদেরকে ঘিরে ক্লাব কর্মকর্তাদের মহড়া। পরে ফুটবলারদের পুলিশি প্রহরায় নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার ঘোষণা জাতীয় দলের ম্যানেজার ইলিয়াস হোসেনের। সবশেষে শেখ জামাল বাদে ঢাকা ও চট্টগ্রাম আবাহনী এবং শেখ রাসেলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফুটবলারদের ভবন ত্যাগ। এ সবই ছিলো গতকালের ঘটনা। এদিন জাতীয় দলের ফুটবলারদের নিয়ে দিনভর এমন নাটকই মঞ্চস্থ হয়েছে বাফুফে ভবনে।
নাটকের শুরু সোমবার রাতে। বাহরাইনের বিপক্ষে ম্যাচ হেরে জাতীয় দল তখন হোটেলে পূর্বাণীতে। রাত সাড়ে আটটায় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের পরিচালক শেখ ইকবাল খোকন নিজের ফুটবলারদের নিয়ে যেতে আসেন। কিন্তু তিনি সফল হননি। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এর রেশ রয়ে যায় গতকালও। তখন সকাল সাড়ে ১১টা। হোটেল পূর্বাণী থেকে সরাসরি বাফুফে ভবনে নিয়ে আসা হয় জাতীয় দলের ফুটবলারদের। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই মহড়ায় ছিলেন চার ক্লাবের কর্মকর্তারা। উদ্দেশ্য জাতীয় দলে থাকা নিজ নিজ খেলোয়াড়দের ক্লাবে নিয়ে যাওয়া। ক্লাব কর্মকর্তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় ভবনে। কিন্তু তাতেও যেন কাজ হচ্ছিল না। ফুটবলারদের সঙ্গে টানা-হ্যাচড়ার অবস্থায় চলে যায় পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে জাতীয় দলের সঙ্গে সভায় বসেন ম্যানেজার ইলিয়াস হোসেন ও দলনেতা আজমল আহমেদ তপন। বাফুফে থেকে দেয়া একটি আবেদনে অধিনায়ক মামুনুল ইসলামসহ প্রায় অধিকাংশ ফুটবলাররাই ভবন থেকে সরাসরি বাড়ি যাওয়ার কথা লেখেন। সাবেক তারকা ফুটবলার ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ফুটবল কমিটির কো-চেয়ারম্যান আবদুল গাফফার অন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে উপস্থিত হন ভবনে। লক্ষ্য ক্লাবের আগের চুক্তিবদ্ধ ১১ জন ফুটবলারকে নিয়ে যাওয়া। এরা হলেন- মামুনুল ইসলাম, রায়হান হাসান, শহিদুল আলম সোহেল, সোহেল রানা, শেখ আলমগীর কবির রানা, ইয়াসিন খান, ইয়ামিন মুন্না, জামাল ভূঁইয়া, নাসির উদ্দিন চৌধুরী, সাখাওয়াত হোসেন রনি ও মোনায়েম খান রাজু। শেখ জামালের সঙ্গে এরা চুক্তিবদ্ধ বলে ১১ জনকে নিয়ে যেতেই ক্লাব কর্মকর্তারা বাফুফেতে উপস্থিত হন। একই সঙ্গে আবাহনীর সত্যজিৎ দাস রুপু, শেখ রাসেলের সালেহ জামান সেলিম এবং চট্টগ্রাম আবাহনীর শাকিলও উপস্থিত হন। অনেকটাই মারমুখি অবস্থার সৃষ্টি হয়।
ঠিক তখনি জাতীয় দলের ম্যানেজার ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘ক্লাব কর্মকর্তারা সবাই নীচে গিয়ে দাঁড়ান। ফুটবলাররা যেখানে যেতে চায়, তাদেরকে সেখানেই দিয়ে আসা হবে পুলিশি প্রহরায়। পরে তাদের সঙ্গে আপনারা যোগাযোগ করবেন।’ এরপরই ভবনের কনফারেন্স রুখে থাকা ফুটবলাদের জন্য তৃতীয় তলায় পুলিশি প্রহরা বাড়ানো হয়। গাফফার বলেন, ‘আমাদের ক্লাবের সঙ্গে ওই ১১ জনের চুক্তি নবায়ন হয়েছে। অতএব তারা আমাদেরই খেলোয়াড়।’ তবে অধিনায়ক মামুনুল বলেন ভিন্ন কথা, ‘আমাদেরকে একটি সাদা কাগজে সই করতে বলা হয়েছিল। আমরা সই করে টাকা নিয়েছি। তবে ওই টাকা ক্লাব থেকে গেল মৌসুমের তৃতীয় পেমেন্ট হিসেবেই নিয়েছি।’ নাটকের তখনো বাকি। চার ক্লাবের কর্মকর্তারা তাদের ফুটবলারদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকলেও বিফল হয় শেখ জামালের সব প্রচেষ্টা। শেখ জামালকে খেলোয়াড়দের না দেয়া হলেও চট্টগ্রাম আবাহনী, ঢাকা আবাহনী ও শেখ রাসেল ঠিকই তাদের খেলোয়াড়দের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে গেছে। আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু গাড়ী ভরে অজানা গন্তব্যে নিয়ে যান জাহিদ হাসান এমিলি, ইয়াসিন খান, তপু বর্মন, শহিদুল আলম সোহেল, জুয়েল রানা, ওয়ালী ফয়সাল, নাবিব নেওয়াজ জীবন ও হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসকে। চট্টগ্রাম আবাহনীর ম্যানেজার শাকিলের সঙ্গে গেছেন অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম, রায়হান হাসান, সোহেল রানা, ইয়ামিন মুন্না এবং নাসির উদ্দিন চৌধুরী। অন্যদিকে শেখ রাসেলের সালেহ জামান সেলিমরা তুলে নিয়ে গেছেন সাখাওয়াত হোসেন রনি, জামাল ভূঁইয়া, মোনায়েম খান রাজু, আতিকুর রহমান মিশু, শেখ আলমগীর কবির রানা, নাসিরুল ইসলাম ও গোলকিপার রাসেল মাহমুদ লিটনকে। তিন ক্লাব যখন একেক করে খেলোয়াড়দের নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন আবদুল গাফফার ও রুপুর মধ্যে কিছুটা কথা কাটাকাটি হয়। শেখ পর্যন্ত খালি হাতেই বেরিয়ে যেতে হয় গাফফারকে। ক্ষুব্ধ কণ্ঠে গাফফার উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা শেখ জামালের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। হ্যাটট্রিক শিরোপা বঞ্চিত করার জন্যই এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।’ অবশেষে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী নাটকের সমাপ্তি ঘটে বেলা তিনটায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।