Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেষ আধ ঘণ্টায় ছন্দপতন

| প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশ : ৫৯৫/৮ ডি. ও ৬৬/৩

নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস : ৫৩৯/১০
(চতুর্থ দিন শেষে)
শামীম চৌধুরী
প্রথম তিন দিন স্বপ্নের মতোই খেলেছে বাংলাদেশ। ওয়েলিংটনের সবুজ পিচ এবং বাতাসের সঙ্গে লড়ে সাকিব-মুশফিকুরের ৩৫৯ রানের রেকর্ড পার্টনারশিপের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৯৫ স্কোরে ইনিংস ঘোষণার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে বাংলাদেশ। চতুর্থ দিনেও ছন্দটা ধরে রেখে চালকের আসনে বাংলাদেশ ছিল দিনের খেলা শেষ হওয়ার আধ ঘণ্টা আগেও। নিউজিল্যান্ডকে প্রথম ইনিংসে লিড নিতে দেয়নি বাংলাদেশ। পেস বোলার কামরুল ইসলাম রাব্বীর বোলিংয়ে (৩/৮৭) ৫৬ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে। বদলি উইকেট কিপার হিসেবে পাঁচটি ক্যাচে বিশ্বরেকর্ড করেছেন ইমরুল কায়েস। তবে প্রথম ইনিংসে একগুচ্ছ রেকর্ডের পরও চতুর্থ দিনটা হাসিমুখে শেষ করতে পারেনি বাংলাদেশ। বিশ্বরেকর্ড গড়ে ইমরুলের ইনজুরির ধাক্কায় বেসামাল হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং। তামীমের সঙ্গে তার দারুণ বোঝাপড়ায় ৪৬ রানের পর ঝাঁপিয়ে ক্রিজে পড়ে কুঁচকির ব্যাথায় কাতর ইমরুল মাঠ থেকে হাসাপাতালে,তাতেই কাতর বাংলাদেশ! তার ওই চলে যাওয়ার দৃশ্য এতোটাই ব্যথিত করেছে যে, আহত হয়ে তার চলে যাবার পর মাত্র ২০ রানে ফিরে গেছে বাংলাদেশের তিন ব্যাটসম্যান! দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৬৬/৩, লিড ১২২ রানের। তারপরও পঞ্চম দিনের কঠিন পরীক্ষার মুখে বাংলাদেশ।
সম্প্রতি ভারত সফরে প্রথম ইনিংসে ৪৭৭ রান করে ম্যাচ বাঁচাতে পারেনি ইংল্যান্ড। সাম্প্রতিক এই অতীত মাথায় রেখে আজ নামতে হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের। দুই মাস আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে আট উইকেটে এবং হ্যামিল্টন টেস্টে ১৩৮ রানে জয়ের অতীতটাও আর একটি ঘটনার পুনরাবৃত্তির স্বপ্ন দেখাচ্ছে নিউজিল্যান্ডকে। হ্যামিল্টন টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে ৩৬৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের ওপেনিং জুটির স্বপ্ন দেখানো ১৩১ রানের পর অবশিস্ট ৯৯ রানে শেষ পাকিস্তান! নিকট অতীতে এই ঘুরে দাঁড়ানো কিংবা ক্রাইস্টচার্চে পাকিস্তানকে তৃতীয় ইনিংসে মাত্র ১৭০ রানে অল আউটের মতো সুখ স্মৃতি থেকেও টনিক পেতে পারে নিউজিল্যান্ড।
ল্যাথামের ক্যারিয়ার সেরা ১৭৭ রানের ইনিংসের ম্যাচে চতুর্থ দিনের শেষ আধ ঘণ্টায় ওয়েলিংটন টেস্টে এমন রঙ বদলের জন্য দায়টা অবশ্যই ব্যাটসম্যানদের। বাঁ-হাতি স্পিনার স্যান্টনারের বলে মুমিনুলের সঙ্গে দৌড়ে চার রান নিয়ে পরের গুডলেন্থ বলে কাট করতে যেয়ে তামীমের বোল্ড আউটে ফিরে যাওয়াটাই ( ২৫) বড় দুর্ভাবনায় ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ দলকে। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ে ভুলের অনুশুচনা থেকে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলে ওয়াটলিং এবং পঞ্চম বলে সাইদিকে ফিরিয়ে দিয়ে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো বোলিংয়ে নিজেকে ধরেছেন মেলে মাহামুদুল্লাহ (২/১৫)। তবে ওয়েগনারের শর্ট বলে লেগ গøান্স করতে যেয়ে উইকেটের পেছনে তার ক্যাচ দিয়ে আসাটা ছিল মহা অন্যায় (৫)। আর মাত্র চারটি বল পাড়ি দিলেই চলত। কিন্তু নাইট ওয়াচম্যান মিরাজ সিঙ্গলের জন্য ক্যাজুয়াল দৌড় দিয়ে রান আউটে (১) কাঁটা পড়ে ডেকে এনেছেন দলের জন্য বিপদ।
৫০০ স্কোরের ইনিংসের ম্যাচে একটিতেই শুধু হেরেছে বাংলাদেশ। ২০১২ সালে ঢাকা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৫২৭/৪’র জবাবে ৫৫৬ স্কোরেও ম্যাচ বাঁচাতে পারেনি বাংলাদেশ। চতুর্থ ইনিংসে ২৪৫ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি বাংলাদেশ দল। তবে ৫০০ স্কোর পেরুনো অন্য চারটি ম্যাচের মধ্যে জয় একটিতে, অন্য তিনটি ড্র’ করেছে বাংলাদেশ। ওয়েলিংটনে টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (৫৯৫/৮ ডি.) ইনিংসের ম্যাচের গতিপথ চতুর্থ দিন শেষে এমন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে, যেখানে ম্যাচ বাঁচানোর জন্য দরকার অন্তত দু’টি সেশন কাটিয়ে দেয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শেষ

২০ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ