Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিল্প সংস্কৃতি শুধুমাত্র বিনোদনের উপকরণ নয়, অর্থ উপার্জনেরও মাধ্যম -আসাদুজ্জামান নূর

| প্রকাশের সময় : ১৫ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোক্তার হোসেন মোল্লা, সোনারগাঁ থেকে : শিল্প সংস্কৃতি শুধুমাত্র বিনোদনের উপকরণ নয় এটি অর্থ উপার্জনের একটি মাধ্যম। এখন সরকারীভাবে সৃজনশীল অর্থনীতিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সৃজনশীল অর্থনীতির মাধ্যমে দেশীয় অর্থনীতিকে আরো বেশী চাঙ্গা করা সম্ভব। কারুশিল্পীদের তৈরি কারুপণ্য বিপণনের মাধ্যমে এ সৃজনশীল অর্থনীতিকে আমরা গতিশীল করতে পারি। গতকাল শনিবার সকালে সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে আয়োজিত মাসব্যাপী লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশের স্কুল-কলেজগুলোতে শিক্ষা নেই আছে শুধু পরীক্ষা। জিপিএ পাঁচ পেয়ে উচ্চ শিক্ষায় গিয়ে আর এগুতে পারছে না। আমাদেরকে এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শিক্ষার সাথে সংস্কৃতি চর্চার সমন্বয় ঘটাতে হবে। সমাজে মানবিকতার বিকাশ ঘটাতে না পারলে সরকারের সকল উন্নয়ন ব্যাহত হয়ে যাবে। জঙ্গিবাদ কিন্তু শেকড় গড়তে শুরু করেছে এ থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রয়োজন মানবিক শিক্ষা।
তিনি আরো বলেন, আমরা দানব নয় মানবের সমাজ গড়তে চাই। এ জন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় থাকতে হবে, রাখতে হবে। উন্নয়নকে যারা বাধাগ্রস্ত করতে চায় তাদেরকে যে কোন মূল্যে প্রতিহত করতে হবে। বর্তমান সরকার লোক শিল্পের উন্নয়নে কাজ করছে। অচিরেই সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘরে নতুন ভবন তৈরি করা হবে। তাছাড়া পানাম নগরীর ৫২টি ঐতিহাসিক ভবন সংস্কার করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পরে তিনি উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আক্তারী মমতাজ, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট শামছুল ইসলাম ভূইয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাসিমা আক্তার প্রমুখ।
গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় ফাউন্ডেশন চত্বরে সোনারতরী মঞ্চে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। লোকজ উৎসব প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
ফাউন্ডেশন সূূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে ৫৪ জন কারুশিল্পী মেলায় অংশ নিচ্ছেন। তাদের জন্য ২৭টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নওগাঁ ও মাগুরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি ও মুখোশ, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, রংপুরের শত রঞ্জি, সোনারগাঁওয়ের হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারু শিল্প, নক্শিকাঁথা, বেতের কাররুশিল্প, মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশের কাররুশিল্প, কুমিল্লার তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও সিলেটের ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারু পণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্পসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার মৃৎশিল্প বিভাগের মাটির কাররুশিল্প এ মেলায় স্থান পাচ্ছে।
এছাড়াও মেলায় গ্রামীণ লোকজ সংস্কৃতির অন্যতম মাধ্যম ‘মৃৎশিল্পের প্রাচীন ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধন’ শিরোনামে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। ঢাকা ও রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জন শিল্পী এ প্রদর্শনীতে অংশ নেবেন।
মেলায় কর্মরত কারু শিল্পীর কারু পণ্য উৎপাদন প্রদর্শনীর ২৭টি স্টলসহ সর্বমোট ১৯৩টি স্টল থাকবে। এদের মধ্যে হস্তশিল্প-৪৬টি, পোশাক-৪৩ টি, স্টেশনারি ও কসমেট্টিকস ৩৫টি, খাবার ও চটপটির স্টল-২৫টি, মিস্টির স্টল-১৭টি।
এছাড়াও লোককারু শিল্প মেলা ও লোকজউৎসবে লোকজ নাটক, লোক কাহিনীর যাত্রাপালা, বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান, লালন সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গাঁয়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তী-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী ইত্যাদি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিল্প

২১ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ