Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখর কুমিল্লার শালবন বিহার

| প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : হৈচৈ, আনন্দ-উল্লাস, বনভোজন আর সবুজ নীলিমার মাখামাখি অরণ্যে ঘুরে বেড়ানোর প্রিয় ঋতু শীত। বছরের এসময়টিতে কুমিল্লার দর্শনীয় স্থানগুলোতে দেশি-বিদেশি পর্যটক, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ভ্রমণ আর এলাকা বা সংগঠনকেন্দ্রিক বনভোজন পার্টির ঢল নামে। কুমিল্লা কোটবাড়ীর শালবন বিহার, বৌদ্ধবিহার, শালবনের আদিবাসী পল্লী, বার্ড, রাজেশপুর ফরেস্ট, ময়নামতি ওয়্যার সিমেট্রি এখন দেশি-বিদেশি পর্যটক ও বনভোজন করতে আসা দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত। শীতের এ সময়টিতে কুমিল্লার এসব নৈসর্গিক সৌন্দর্যের স্থানগুলোর মধ্যে কোটবাড়ীর ময়নামতি শালবন বৌদ্ধবিহার ও জাদুঘর অন্যতম। এখানে দেশি-বিদেশী পর্যটক আর কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে। কুমিল্লা শহর থেকে আট কিলোমিটার পশ্চিমে কোটবাড়ী। এখানে রয়েছে শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর। প্রায় ৩৭ একর জায়গাজুড়ে শালবন বিহার বাংলাদেশের প্রাচীন বৌদ্ধবিহার। সমতল থেকে যার উচ্চতা প্রায় ৫০ ফুট। বুদ্ধ রাজাদের সময় সপ্তম থেকে অষ্টম শতাব্দীতে এ শালবন বৌদ্ধবিহার স্থাপিত হয়। আর ময়নামতি জাদুঘরে রয়েছে অসংখ্য পুরাকীর্তি। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় রয়েছে ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান দু’টি। প্রতিদিন শতশত দেশি পর্যটক-দর্শনার্থী ছাড়াও বিদেশি পর্যটকের সমাগম ঘটে ঐতিহাসিক শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরে। এবারে শীতের শুরুতেই দেশি-বিদেশি পর্যটক আর বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পিকনিক পার্টি, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সফর ও স্কুলের পরীক্ষা শেষে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে পারিবারিক ভ্রমণে মুখরিত হয়ে ওঠে ঐতিহাসিক শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর। হাজারো দর্শনার্থী সামলাতে হিমশিম পোহাতে হয় প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তরের নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের। শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ২০ জন আর্মড ব্যাটালিয়ন আনসার পর্যটকদের নিরাপত্তার ব্যাপারে নিয়োজিত রয়েছেন। ময়নামতি জাদুঘর, শালবন বিহার দেখতে আসা জার্মানী নাগরিক ভালদিস্লাভ বলেন, ‘এখানকার ইতিহাস সমৃদ্ধ নিদর্শনগুলো আমার মন কেড়েছে। কুমিল্লার সবকিছু অনেক সুন্দর। জাদুঘরে প্রাচীন অনেক কিছু দেখেছি। আমি মুগ্ধ। আর এখানকার সিকিউরিটি ব্যবস্থা অনেক উন্নত।’ কুমিল্লা ময়নামতির শালবন বিহার ও জাদুঘরের কাষ্টোডিয়ান আহমেদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘শালবন বৌদ্ধবিহার ও জাদুঘরের মতো দু’টি ঐতিহাসিক বড় প্রতিষ্ঠান আমরা অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পরিচালনা করছি। বৌদ্ধ বিহারের ভেতরে পর্যটকরা নিরাপদে জায়গাটি পরিদর্শন করে থাকেন। এখনও বৌদ্ধবিহারের সীমানার ভেতর খনন কাজ চলছে। প্রতি বছরই প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন আবিস্কারের জন্য খনন কাজ হয়ে থাকে। বৌদ্ধবিহারের মূল পরিচিতির দুইটি লেখা ভেতরে স্থাপন করা হয়েছে। যা দর্শনার্থী বা পর্যটকদের দৃষ্টিতে পড়ছে। এছাড়া এখানকায় প্রাপ্ত প্রতœসম্পদগুলো বৌদ্ধবিহার সংলগ্ন ময়নামতি জাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য রাখা রয়েছে। প্রতিবছর শীত মৌসুমে পর্যটক ও দর্শনাথীর সংখ্যা বেড়ে থাকে। শীত মৌসুমে প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ হাজার দেশি বিদেশি পর্যটক এখানে আসেন। বৌদ্ধবিহার ও জাদুঘর দেখতে আসা পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টির উপর আমরা বেশি নজর দিচ্ছি’।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পর্যটক


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ