পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : ৩৯টি মুসলিম দেশের সামরিক জোটের সদরদপ্তর হচ্ছে রিয়াদ। আর এর নেতৃত্বে থাকবেন পাকিস্তানের সাবেক সেনা প্রধান রাহিল শরিফ। সম্প্রতি পাকিস্তানের সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল রাহিল শরিফকে ৩৯ মুসলিম দেশের নতুন সামরিক জোটের কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচ লাখ সৈন্যের পাকিস্তানি বাহিনীকে তিন বছর নেতৃত্ব দেয়া রাহিলের নাম ঘোষণার পর তার নিজের দেশেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মাদ আসিফ গত শুক্রবার জিও টিভির এক আলোচনা অনুষ্ঠানে রাহিলের এই নতুন নিয়োগের খবর প্রকাশ করেন। তিনি জানান, এ বিষয়ে কয়েক দিন আগে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করা হয়েছে, তবে ওই চুক্তির বিস্তারিত তিনি জানেন না। আসিফ বলেন, পাকিস্তান সরকারের সম্মতিতেই গতবছর নভেম্বরে অবসরে যাওয়া জেনারেল (অবসর প্রাপ্ত) রাহিলকে জোটের প্রধান হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সউদি আরবের নেতৃত্বে মূলত সুন্নি মুসলিম দেশগুলোর এই জোটের প্রথম ঘোষণা আসে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে। তবে জোটের কাজের ধরণ কেমন হবে সে বিষয়টিও এখনও স্পষ্ট করা হয়নি। সে সময় সউদি আরবের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা, প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং কৌশল প্রণয়নের কাজ ওই অপারেশন সেন্টার থেকেই হবে। জাতিসংঘ সনদ, ওআইসি সনদ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সনদ ও চুক্তি অনুসরণ করেই পরিচালিত হবে এর কার্যক্রম। তবে সউদি আরবের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের কাছ থেকে এই জোটের বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।
গার্ডিয়ান লিখেছে, সউদি আরব আর ইরানের সঙ্গে বন্ধুত্বে ভারসাম্য রাখতে পাকিস্তানকে সব সময়ই বেগ পেতে হয়েছে। ধনী দাতা দেশ সউদি আরবে কাজ করে দেশে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে বহু পাকিস্তানি। আবার প্রতিবেশী ইরানের কাছ থেকে গ্যাস এনে জ্বালানি সঙ্কট মেটানের পরিকল্পনা থেকেও পাকিস্তান সরতে পারেনি। সুন্নি প্রধান সউদি আরব ও শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরোনের বিরোধ পাকিস্তানে জাতিগত সহিংসতা জিইয়ে রাখতেও ভূমিকা রেখেছে বলে বিশ্লেষকদের মত। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই দেশের বিরুদ্ধেই পাকিস্তানে তাদের পছন্দের জঙ্গি দলকে সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে।
অবসর প্রাপ্ত জেনারেল রাহিল শরিফকে সউদি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রধান করার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের শিয়া দল মজলিশ ওয়াহদাত-ই-মুসলেমিন। ওই পদ না নিতে রাহিল শরিফের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। আবার আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মত কট্টর সুন্নি দল রাহিল শরিফের এই নিয়োগকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ হাসান আশকারি রিজভী তাদের সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন, ইসলামিক মিলিটারি অ্যালায়েন্স টু ফাইট টেরোরিজম এখনও কার্যক্রম শুরু করেনি। এ জোট নেটোর মডেল অনুসরণ করবে, না জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর মত ভূমিকা নেবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এই জোট বাহিনী কতটা নন-পার্টিজান থাকবে। এখন পর্যন্ত এর নেতৃত্বে আছে সউদি আরব। সুতরাং ইরান, ইরাক বা সিরিয়া এটা ভালোভাবে নেবে না। পাকিস্তানে তালিবানবিরোধী অভিযান চালিয়ে জঙ্গিবাদ কমিয়ে আনতে পারায় প্রশংসিত হন অবসর প্রাপ্ত জেনারেল রাহিল শরিফ। গার্ডিয়ান, বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।