বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : ব্যাপক ফলনসমৃদ্ধ আমন ধান কাটার মৌসুম শেষ না হতেই বাজারে চালের দাম বেড়েছে। গত ৬ দিনে নরসিংদীসহ দেশের পাইকারী বাজারে বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। খুচরা চাটাইয়ে প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে তিন টাকা বেশি দামে। এর আগে ধান কাটা শুরুর আগে চালের দাম্য বৃদ্ধি পায় কেজি প্রতি এক টাকা। সেই দর স্থিতাবস্থায় থাকার মধ্যেই গত এক সপ্তাহে চালের দাম কেজি প্রতি আরো দুই টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। জানা গেছে ব্রি ২৮ ও ২৯ ধানের চাল এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪০ টাকা। এখন বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা দরে। নাজিরশাইল ধানের চাল আগে বিক্রি হয়েছে ৪৬ টাকা কেজি, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। মিনিকেট চাল আগে ছিল ৪৬ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা, মোটা চাল স্বর্ণা এক সপ্তাহ পূর্বে বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা। বাংলামতি চাল পূর্বে বিক্রি হয়েছে ৫২ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকা কেজি দরে। একইভাবে কাজললতা বিক্রি হয়েছে ৪২ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকা কেজি দরে।
উৎপাদনের ভরা মৌসুমে চালের মূল্য বৃদ্ধি কালো হাতের কারসাজি বলে জানিয়েছেন সচেতন ক্রেতারা। তারা বলছে এই মুহূর্তে চালের মূল্য বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা আনন্দসহকারে ফসল কেটে ঘরে তুলেছেন। গ্রামাঞ্চলের বাজার ও গ্রোথ সেন্টারগুলোতে চালের খুচরা ক্রেতা কম। কৃষকদের ঘরে প্রচুর চাল ও ধান মজুদ রয়েছে। এরপরও চালের মূল্য বৃদ্ধি নিতান্তই কালো হাতের ইশারা ছাড়া আর কিছুই নয়।
পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে চালের কোনো ঘাটতি নেই। প্রতিটি ঘরেই চালের ব্যাপক মজুদ রয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নরসিংদীতে চাল আমদানি হচ্ছে, কিন্তু এরপরও চালের মূল্য বৃদ্ধির কোনো কারণ জানা যাচ্ছে না। তবে মিল মালিকরা জানিয়েছে, সরকারি গুদামে বর্তমানে চালের মজুদ কম। সরকার আমন চাল কিনে গুদামে মজুদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকার চাল কেনার কারণে বাজারে টান পড়েছে। সরকারি চাল কেনা শেষ না হলে চালের দাম কমার সম্ভাবনা নেই।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে চালের উৎপাদন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে উদ্বৃত্ত জেলাগুলোতে যে পরিমাণ চাল উৎপাদিত হয়, তা ঘাটতি জেলাগুলোর চাহিদা পূরণ করেও উদ্বৃত্ত থাকে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী দেশে চালের বর্তমান উৎপাদন দাঁড়িয়েছে তিন কোটি ৪২ লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন। বেসরকারি হিসাব মতে, দেশের চালের চাহিদা রয়েছে দুই কোটি ৯৫ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন। এ ক্ষেত্রে উদ্ধৃত্ত দাঁড়ায় ৪৬ লাখ ৯৮ হাজার মেট্রিক টন। দেশে এত বেশি পরিমাণ চাল উদ্ধৃত্ত থাকার পরও চালের মূল্য বৃদ্ধি নিছক একটি মুনাফাখোরী। মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা সরকারের দোহাই দিয়ে বাজারে বাড়তি মূল্যে চাল সরবরাহ করছে। আড়তদারেরা বাধ্য হয়েই বাড়তি মূল্যেই চাটাই এবং খুচরা বিক্রেতাদের কাছে চাল বিক্রি করছেন। শুধু তাই নয়, এক শ্রেণির মিলমালিক সুকৌশলে চালের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করছেন। সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে চালের মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছেন। সরকার পূর্ব থেকে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বাজারে চালের দাম আরো বেড়ে যেতে পারে। এ চালের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হবারও আশঙ্কা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।