পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচন
আরও ৪ বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন
দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সরকার আরও ৪টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠান অনুমোদন দিয়েছে। মাদারীপুর, ফরিদপুর, নোয়াখালী এবং কিশোরগঞ্জে এসব বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে।
গতকাল বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) গভর্নিং বোর্ডের ৫ম সভায় এ সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বেজা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যথাযথভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। সরকার উন্নয়নের জন্য প্রাইভেট সেক্টরকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের দেয়া সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে বিনিয়োগ করুন।
যত্রতত্র কলকারখানা নির্মাণ করা যাবে না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন থেকে আমাদের কৃষি জমি, পরিবেশ, প্রতিবেশ রক্ষা করতে হবে। কৃষি জমি রক্ষা করতে হবে ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। অপরিকল্পিত শিল্পায়ন পরিবেশের জন্য হুমকি। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট স্থানে শিল্পায়ন করতে সরকারের নেওয়া পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই শিল্পায়নের জন্য নির্দিষ্ট এলাকায় কলকারখানা স্থাপন করতে হবে। সভায় স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ওয়ান স্টপ সেবা দিতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন বিধান করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। অর্থনৈতিক অঞ্চল বিষয়ক নীতিমালার খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুর রহমান চুন্নু, বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবিরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বেজার বর্তমান কর্মকান্ডের অগ্রগতি ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
বিশেষ সংবাদদাতা : ‘আগামী নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও কঠিন হবে’ এমন ইঙ্গিত দিয়ে দলের নেতাদের সাংগঠনিক কর্মকা- জোরদারের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী নির্বাচন কঠিন হবে। ওই নির্বাচনে জিততেই হবে। এ লক্ষ্যে সবাইকে যার যার এলাকায় গিয়ে কাজ করতে হবে। দলের নেতা, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি আরো বলেন, আগামী নির্বাচন হবে প্রতিযোগিতামূলক; গতবারের মতো নয়। প্রেসিডেন্ট যে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন, সেখানে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। তাই ওই নির্বাচনে বিজয়ী হতে এখন থেকেই সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নিতে হবে। গত বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ‘গণভবনে’ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী ও উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে দলীয় নেতাদের তিনি এসব কথা বলেন। তার সভাপতিত্বে এ বৈঠক সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয়ে প্রায় রাত ৯টা পর্যন্ত চলে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নাসিক (নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন) নির্বাচন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। নিজেদের মধ্যে হানাহানি না করে দলীয় নেতাদের প্রতি ঐক্যের আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে উপস্থিত সকল নেতাকে সতর্ক করে দেন এ বলে যে, পরকে যেন কেউ আপন না ভাবেন। নিজেদের লোকদেরই আপন করে নেয়ার পরামর্শ দেন। তিনি যে কোনো নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থীদের পাশে থাকার পাশাপাশি জেলা পরিষদ নির্বাচনে দল মনোনীতদের পরাজিত করে বিদ্রোহীরা কেন জিতল সে বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়ার নির্দেশ দেন।
বৈঠকে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অনুষ্ঠেয় মতবিনিময় সভায় যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের জন্য প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সরকার ইসি গঠনে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রস্তাব ও সুপারিশমালা তৈরির জন্য ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচটি ঈমাম (হোসেন তওফিক ইমাম) কমিটির আহ্বায়ক এবং ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, মো: রশিদুল আলম, অ্যাম্বাসেডর মো: জমির, অ্যাডভোকেট মো: আবদুল বাসেত মজুমদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আবদুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, আইন-বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মতিন খসরুকে সদস্য নির্বাচিত করা হয়। উল্লেখ্য, ওই কমিটি আগামী ১১ জানুয়ারি বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সংলাপের সময় আওয়ামী লীগের পক্ষে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনসংক্রান্ত প্রস্তাব ও সুপারিশমালা তুলে ধরবে। তার আগে প্রস্তাবনা সংগঠনের সভাপতি শেখ হাসিনাকে অবহিত করে চূড়ান্ত করা হবে। কেন্ত্রীয় কার্যনির্বাহী ও উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, এইচটি ইমাম, রাশিদুল আলম এবং দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বক্তৃতা করেন। এইচটি ইমাম বলেন, ইসিতে বিএনপি যেসব নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে, তারা এখনো কাজ করছেন। কাজেই আমাদের এ নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আর সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সংবিধান অনুযায়ী ইসি গঠনে প্রেসিডেন্টকে দলীয় প্রস্তাব দেয়ার বিষয়টি উত্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামায়াত-শিবিরের ষড়যন্ত্রে মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যাকা-কে বাস্তব রূপ দিতে সত্য গোপন করে তাকে ‘খারাপ মানুষ হিসেবে’ উপস্থাপনের জন্য একশ্রেণির মিডিয়ার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, একটা জিনিস ভাবতে আমার খুব খারাপ লাগছে যে, মাঝখানে একটা ঘটনা ঘটে গেল। একটা বাচ্চা ওর গুলিতে আহত হলো। সেটা নিয়ে পত্রপত্রিকা এমনভাবে লেখালেখি করে তার চরিত্র হনন করা হলো। অথচ প্রকৃত ঘটনাটা কেউ তুলে ধরল না। যেহেতু ওর লাইসেন্স করা অস্ত্র¿ ছিল; সে জন্য সবসময় সতর্ক ছিল। তাই সে ওখান থেকে কোনোরকমে বেঁচে আসে এবং গোলাগুলিতে বাচ্চাটি আহত হয়। যে আহত হয় সেও আমাদের আওয়ামী লীগেরই এক কর্মীর ছেলে। কিন্তু সেটাকে এমনভাবে মিডিয়ায় লেখা হলো, তার বিরুদ্ধে মামলাও হলো। স্বাভাবিকভাবে মামলা হলে অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল হয়। অস্ত্রটাও সিজ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এই যে তার অস্ত্রটা নিয়ে যাওয়া হলো ওই সময় থেকে সে (লিটন) সবসময় একটা আতঙ্কে থাকতো তাকে আক্রমণ করা হবে। ঠিক সেটাই ঘটল। তার বাসার ভেতরে ঢুকে গুলি করে তাকে হত্যা করল।
শেখ হাসিনা বলেন, লিটন স্বাধীনতার পক্ষের ছিল বলেই জীবন দিতে হলো। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এবং জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ছিল বলেই এমনটা হলো। ২০১৩-১৪ ও ১৫ সালে সুন্দরগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় জামায়াত-বিএনপির বিভীষিকার রাজনীতির কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তখন লিটনই ওইসব ভুক্তভোগী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। ওই আন্দোলনের নামে জামায়াত অনেক নাশকতা করতে চেয়েছিল। লিটন তাদের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে। সে জন্য তার ওপর জামায়াতের ক্ষোভ ছিল। আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, আমি জানি না, ওদের আর কী লক্ষ্য আছে। আন্দোলন করে সরকার উৎখাতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন গুপ্তহত্যা শুরু করেছে। এটাই তাদের চরিত্র। এরাই তো বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। খুনি-অপরাধীর সঙ্গী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি অন্যায় করেন, অন্যায় প্রশ্রয় দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।