নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
জাহেদ খোকন : সদ্য সমাপ্ত গৌহাটি-শিলং সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে লাল-সবুজদের হয়ে স্বর্ণপদক জয়ীরাই কি শুধু বাংলাদেশের সম্মান বাড়ালেন। অন্য পদকপ্রাপ্তদের কি কোনই অবদান নেই এক্ষেত্রে। এসএ গেমসের ১২তম আসরে চারটি স্বর্ণপদক জয় করেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে তিনটিই জিতেছে মেয়েরা। বাকি একটি পুরুষ। সোনা জয়ের পাশাপাশি লাল-সবুজের ক্রীড়াবিদরা ১৫ রৌপ্য ও ৫৬টি ব্রোঞ্জপদকও জয় করেছেন। কিন্তু দেশে ফেরার পর শুধু মাত্র স্বর্ণপদক জয়ীদেরই মূল্যায়ন হচ্ছে। তারাই ভাসছেন সংবর্ধনায় জোয়ারে। গৌহাটিতে এসএ গেমসে দেশের হয়ে প্রথম স্বর্ণপদক জয়ী ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সিমান্ত আর জোড়া স্বর্ণজয়ী কৃতি সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলার সব দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খেলাধুলায় এ দু’জনকে এগিয়ে নিতে তিনি সব ধরনের সহযোগীতা করবেন বলে ইতোমধ্যে ঘোষণাও দিয়েছেন। পাশাপাশি স্বর্ণজয়ী এ দুই মহিলা ক্রীড়াবিদ পাচ্ছেন একের পর এক সংবর্ধনাও। কিন্তু গেমস থেকে যারা রৌপ্য কিংবা ব্রোঞ্জপদক জয় করে এনেছেন তাদের খবর কেউ নিচ্ছেন না। সহযোগীতার হাত বাড়ানো তো দূরে কথা, সংবর্ধনার কথাও ভাবছেন না কেউ। ক্রীড়াবোদ্ধাদের মনে প্রশ্ন তাহলে কি রুপা বা ব্রোঞ্জপদক জয়ীরা দেশের জন্য কিছুই করেন নি?
বিদেশের মাটিতে দেশের হয়ে পদক জয় করাটা অনেক বড় সম্মানের ব্যাপার। হোক না সেটা সোনা, রুপা কিংবা ব্রোঞ্জ। স্বর্ণপদক জয় বড় সম্মানের হলেও রৌপ্য ও ব্রোঞ্জপদক জয়টাও কম নয়। সোনা জিতলে যেমন বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের পতাকা উড়ে, রুপা ও ব্রোঞ্জ জিতলেও তাই হয়। তাহলে সংবর্ধনা কিংবা আরও পুরস্কার থেকে কেন বঞ্চিত হবেন রৌপ্য বা ব্রোঞ্জপদক জয়ীরা। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) থেকে আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা আগেই ছিল। সেটা দেয়াও হবে। দু’স্বর্ণজয়ী সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলাকে বৃহস্পতিবার যশোরে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সিমান্তকে নিজ গ্রামের বাড়ী মাদারীপুরে দেয়া হবে সংবর্ধনা। সংশ্লিষ্ট ফেডারেশন থেকে অনেকেই তাদের পদকজয়ী ক্রীড়াবিদদের সংবর্ধনা দিচ্ছে এবং দেবে। রৌপ্যজয়ী মহিলা ও ব্রোঞ্জজয়ী পুরুষ হ্যান্ডবল দলকে সংবর্ধনা দিয়েছে ফেডারেশন। কাবাডি ফেডারেশন রুপা জয়ী মহিলা ও ব্রোঞ্জজয়ী পুরুষ দলকে শিগগিরই সংবর্ধনা দেবে বলে জানা গেছে। খো খো ফেডারেশনও সংবর্ধনা দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে রৌপ্যজয়ী পুরুষ ও মহিলা দলকে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন এক্ষেত্রে অন্য ফেডারেশনগুলোরও উচিত তাদের পদকজয়ী ক্রীড়াবিদদের সংবর্ধনা দেয়ার। কারণ স্বর্ণজয়ীরা দেশকে গর্বিত করলে অন্যেরাও তাই করেছেন। স্বর্ণজয়ীরা নিজ নিজ এলাকায় সংবর্ধনা পেলে অন্য পদক জয়ীরা কেন পাবেন না? তারাও তো দেশের সম্পদ এবং নিজ এলাকার গর্বিত সন্তান।
২০১০ ঢাকা এসএ গেমসে বাংলাদেশ ১৮ স্বর্ণ, ২৩ রুপা ও ৫৬টি ব্রোঞ্জ জিতলেও এবার সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গৌহাটি-শিলংয়ে লাল-সবুজদের স্বর্ণপদক জয়ে ধ্বস নেমেছে। কেন এই ধ্বস? জানা গেছে, এর নেপথ্যে রয়েছে বিভিন্ন কারণ। ঢাকা এসএ গেমসে দুই স্বর্ণ জেতা উশু এবার পাঁচটি ব্রোঞ্জপদক জিতেছে। এই ডিসিপ্লিন থেকে কেন সোনা আসেনি লাল-সবুজদের। এ বিষয়ে বাংলাদেশ উশু অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম-সম্পাদক দুলাল হোসেন বলেন, ‘বার বার আমাদের ইভেন্ট পরিবর্তন করা হয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশ থেকে ৩ ফেব্রæয়ারি সকাল সাতটায় বিমান বন্দরে পৌঁছলেও পৌঁনে একটায় গৌহাটি বিমান বন্দরে পৌঁছি। সেখানে ছয়ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেছি আমরা। তারপর আমাদের যে খেলা ৮ ফেব্রæয়ারি শুরু হওয়ার কথা ছিল, তা ৭ ফেব্রæয়ারি এগিয়ে আনা হয়। একেবারেই অপ্রস্তুত ছিল ক্রীড়াবিদরা। নানাভাবে আয়োজকরা গড়িমসি করেছে। এতেই বিপত্তি ঘটে আমাদের। স্বর্ণজয়ের ধারাবাহিকতায় থাকার কথা দিয়ে দেশ ছাড়লেও, শেষ পর্যন্ত কথা রাখতে পারিনি আমরা।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।