Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লোহাগড়া হাসপাতালে ওষুধ ও উপকরণ সঙ্কট

প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৫৭ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬

নড়াইল জেলা সংবাদদাতা : নড়াইলের লোহাগড়া হাসপাতালে জরুরি ওষুধসহ চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত উপকরণের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে সাধারণ চিকিৎসা সেবা। শিগগিরই এ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে হাসপাতালটিতে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত এক বছর ধরে এই সংকট চলছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত উপকরণ না পাওয়ায় রোগী ও তাদের স্বজনদের বাইরে থেকে বাড়তি দামে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন গরিব ও দুস্থ রোগীরা। এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসক, সেবিকাসহ জনবলেরও অভাব রয়েছে। ফলে বহির্বিভাগ ও ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাছাড়া হাসপাতালে রয়েছে শয্যা সংকট। পর্যাপ্ত শয্যা না থাকায় রোগীদের মেঝে কিংবা বারান্দায় রেখে সেবা দেয়া হচ্ছে।
গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে কাগজে-কলমে হাসপাতালটি ৫০ শয্যার কার্যক্রম শুরু করেছে। এর পরে রোগীদের কাছ থেকে ৫০ শয্যার জন্য সেবামূল্য আদায় করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাস্তবে আজও হাসপাতালে ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু হয়নি। বর্তমানে হাসপাতালে প্রাণ রক্ষাকারী গুরুত্বপূর্ণ ওষুধসহ রক্তের ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সরঞ্জামাদির সংকট চলছে। এতে গরিব ও দুস্থ রোগীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। সরকারি হাসপাতালে এসে রোগীর অভিভাবকদের বাইরে থেকে রক্তের ব্যাগ কিনতে হচ্ছে।
শামুখ খোলা গ্রামের সৈয়দ আরিফুজ্জামান (৫০) দীর্ঘদিন যাবৎ রক্ত স্বল্পতায় ভুগছেন। তিনিও এই হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের ১০ নম্বর বেডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আরিফুজ্জামান সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমার শরীরে প্রায়ই রক্ত দেয়া লাগে। প্রতিবার ২৫০ টাকা করে গুনলেও হাসপাতাল থেকে একবারও বিনামূল্যে রক্তের ব্যাগ আমাকে সরবরাহ করেনি এমনকি অনেক ওষুধ বাহির থেকে কিনতে হয়েছে।
লোহাগড়া সাংবাদিক ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী আশরাফ বলেন, সাড়ে ৩ লাখ মানুষের জন্য উপজেলায় একটি মাত্র হাসপাতাল। অসহায় ও গরিব রোগীদের রক্তের প্রয়োজনে কোনো বøাড ব্যাংক নেই। তাছাড়া প্রয়োজনীয় ওষুধও বিনামূল্যে পাওয়া যায় না। এসব ক্ষেত্রে সরকারের কঠোর নজর দেয়া উচিত।
হাসপাতালের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) সুষমা মল্লিক বলেন, এ বছরে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৭০ ব্যাগ রক্ত আমাদের মাধ্যমে রোগীদের শরীরে দেয়া হয়েছে। দিন দিন এ ধরনের রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্তের ব্যাগ সরবরাহ নেই। বছরের শুরুতে নড়াইল সিভিল সার্জন অফিস থেকে মাত্র ৫০ ব্যাগ পেয়েছিলাম যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বি.এম কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, গরিব ও দুস্থ রোগীদের জন্য লোহাগড়া হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ জীবন রক্ষাকারী ওষুধ এবং রক্তের ব্যাগ থাকা প্রয়োজন। যদি রক্তের ব্যাগ সরবরাহ কম থাকে তাহলে অবশ্যই প্রয়োজন অনুযায়ী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সরবরাহ বৃদ্ধি করা উচিত। তা না হলে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় হতে পারে। আমরা উপজেলাবাসী চাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন নাহার বলেন, রক্তের ব্যাগ বর্তমানে সরবরাহ নেই তাই হাসপাতাল থেকে রোগীদের এই সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সঙ্কট

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৬ জানুয়ারি, ২০২৩
৬ জানুয়ারি, ২০২৩
২০ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ