মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতে দেশদ্রোহের মামলায় তিহার জেলে আটক জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় বা জেএনইউয়ের ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার তার জামিনের আবেদন জরুরি ভিত্তিতে শোনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে জেএনইউতে দেশবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ নিয়ে সারা ভারত জুড়ে তোলপাড় চলছে এবং গত বৃহস্পতিবার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু ছাত্র ও শিক্ষক কানহাইয়া কুমারের মুক্তির দাবিতে দিল্লির রাজপথে মিছিল করেছেন। বিরোধী কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করেছেন, জেএনইউর মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানকে সরকার দেশবিরোধী তকমা দিতে চাইছে। রাজধানী দিল্লির মান্ডি হাউস থেকে যন্তর মন্তর পর্যন্ত গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক এক পদযাত্রায় শামিল হয়েছিলেন। তাদের প্রধান দাবি ছিল রাষ্ট্রদ্রোহে অভিযুক্ত ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট কানহাইয়া কুমারের মুক্তি। খবরে বলা হয়, বিরোধী কংগ্রেসের ভাইস- প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধীও এদিন সকালে প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করেছেন, দেশদ্রোহ মোকাবিলার নামে সরকার জেএনইউ-র মতো প্রতিষ্ঠানকেই ধ্বংস করতে চাইছে। তিনি বলেন, কেউ যদি দেশবিরোধী কাজকর্ম করে দেশের আইন অনুযায়ী নিশ্চয় তার শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু সরকার যেটা করছে, কয়েকজনকে কাঠগড়ায় তুলে একটা গোটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিতে চাইছেÑ তা মানা যায় না। দেশের ছাত্রসমাজের ওপর আরএসএসের মৃত আদর্শকে চাপিয়ে দেয়ার মতো বড় অপরাধ আর কিছুই হতে পারে না। তবে বিরোধী কংগ্রেসও যে তথাকথিত দেশবিরোধী শ্লোগানে সমর্থনের অভিযোগ থেকে নিজেদের দূরত্ব বাড়াতে চাইছে তা গান্ধীর কথায় স্পষ্ট হয়ে গেছে। এরই মাঝে চলছে ভারতে মুক্তচিন্তা আর তর্কের অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে জেএনইউ-র অস্তিত্বের লড়াই।
ছাত্র ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট শায়লা বলছিলেন, একদিকে আমাদের ছাত্রনেতাদের মিথ্যা অভিযোগে আটক করা হচ্ছে, অন্য দিকে আমাদের প্রতিষ্ঠান জেএনইউ’র এক ধরনের ব্র্যান্ডিং করার চেষ্টা চলছে যে আমরা না কি দেশবিরোধী ও সন্ত্রাসবাদী। তো আমরা আসলে কী, সেটা দেখানোর জন্যই আজ আমাদের এই পদযাত্রা। দিল্লির বুকে যখন এই মিছিল হচ্ছে, তখন শহরেরই অন্য প্রান্তে তিহার জেলের তিন নম্বর সেলে আটক কানহাইয়া কুমারÑ যেখানে রাখা হয়েছিল পার্লামেন্টে হামলার ঘটনায় ফাঁসির আসামি আফজল গূড়কেও। নিম্ন আদালত ২ মার্চ পর্যন্ত তার বিচারবিভাগীয় হেফাজত মঞ্জুর করলেও কানহাইয়ার আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে তার জামিনের আবেদন জানিয়েছেন। দেশের শীর্ষ আদালত তা শুনতে রাজিও হয়েছেন।
এই জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করা হবে না, দিল্লির পুলিশ কমিশনার বিএস বাসসি গত বৃহস্পতিবার এমন ইঙ্গিত দিলেও এ কথা মানতে চাননি যে, গত বুধবার আদালতে পেশ করার সময় কানহাইয়া কুমারের ওপর হামলা তারা ঠেকাতে পারেননি। বাসসি দাবি করেন, জনতার ভিড়ে ধস্তাধস্তির মধ্যেও তার অফিসাররা অভিযুক্তকে ঘিরে রেখেছিলেন সামনে ও পেছনের দিক থেকে। তবে ধাক্কাধাক্কিতে কানহাইয়ার একটা চপ্পল শুধু খুলে যায়। এমন কী পুলিশ কর্মীরা তার মাথার সামনে হাত দিয়ে রেখেছিলেন যাতে কোনো ইঁটপাটকেল ছুটে এসে তাকে আঘাত করতে না-পারে। কিন্তু দিল্লি পুলিশ যে নিম্ন আদালতে অভিযুক্তকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, সুপ্রিম কোর্ট প্রকারান্তরে আজ সেটাই মেনে নিয়েছে, তার জামিনের আবেদন শুনতে রাজি হয়ে। এদিকে বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছে জেএনইউ ক্যাম্পাসে ১১ ফেব্রুয়ারিতে দেয়া কানহাইয়া কুমারের সেই বিতর্কিত ভাষণের ভিডিও তাকে গ্রেফতার করার পেছনে যার একটা বড় ভূমিকা ছিল। ওই বক্তৃতায় আরএসএস-বিজেপির দেশপ্রেমের কড়া সমালোচনা করলেও কানহাইয়া একবারও কোনো দেশবিরোধী মন্তব্য করেননি বলেই তার সমর্থকরা দাবি করছেন। বিবিসি, ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।