Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাখমুত শহর চারদিক থেকে ‘ঘিরে ফেলেছে’ ওয়াগনার বাহিনী

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২৩, ৮:০৭ পিএম

রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধরত ওয়াগনার বাহিনী ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বাখমুত শহরের বেশিরভাগ জায়গাই ঘিরে ফেলেছে। গ্রুপটির প্রধান শুক্রবার নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন। এ শহর দখলকে কেন্দ্র করে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনীয় বাহিনীর সঙ্গে তাদের তীব্র লড়াই চলছে যাতে উভয়পক্ষেই ব্যাপক প্রাণহানি ঘটছে।
ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন বলেছেন এখন এই শহর থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য একটাই পথ খোলা আছে। বাখমুত থেকে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য তিনি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রতি আহবান জানিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে একটি বাড়ির ছাদের ওপর ধারণ করা ভিডিওতে প্রিগোঝিন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উদ্দেশ্যে বলেন, ইউক্রেনীয় সৈন্যদের জীবন বাঁচাতে হলে তাদেরকে সরিয়ে নিন।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী স্বীকার করে নিয়েছে যে, তাদের সৈন্যরা বাখমুত শহরে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে। সেখান থেকে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের সরিয়ে নেয়া হতে পারে বলেও তারা ইঙ্গিত দিয়েছে। এর আগে এ শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য সেখানে অতিরিক্ত সৈন্য পাঠানো হয়েছিল। কিয়েভ বলছে, তাদের সৈন্যরা এখনও সেখানে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তারা স্বীকার করেছে এ সপ্তাহে বাখমুতে তাদের অবস্থার অবনতি হয়েছে।
ন্যাশনাল গার্ড অব ইউক্রেনের একজন ডেপুটি কমান্ডার ভলোদিমির নাজারেঙ্কো ইউক্রেনীয় একটি টিভি চ্যানেলকে বলেছেন বাখমুতের পরিস্থিতি “গুরুতর” এবং “সারাক্ষণই সেখানে যুদ্ধ” হচ্ছে। তিনি বলেন, “তাদের কতো প্রাণহানি ঘটছে সেটা তারা বিবেচনা করছে না। তারা এখন এই শহর দখল করতে চাইছে। আমাদের সৈন্যদের কাজ হচ্ছে শত্রুর যতো বেশি ক্ষতি করা যায়।” ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিনও বলেছিলেন বাখমুত নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ইউক্রেনীয় সৈন্যরা ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে।
এই শহরে যুদ্ধে উভয়পক্ষের বেশ ক্ষয়ক্ষতি ও বহু সৈন্যের প্রাণহানি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে এই শহরটি দখল করে নিতে পারলে ইউক্রেন যুদ্ধের গত ছ’মাসে রাশিয়ার জন্য এটা হবে বড় ধরনের বিজয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান জানিয়েছেন যে প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাখমুত শহরটিকে তারা চারদিক দিকে ঘিরে ফেলেছেন। ইউক্রেনীয় সৈন্যদের বের হয়ে যাওয়ার জন্য শুধুমাত্র একটা পথ খোলা রাখা হয়েছে।
এ শহরের পশ্চিমাঞ্চলে রয়টার্সের সাংবাদিকরা দেখেছেন ইউক্রেনীয় সৈন্যরা প্রতিরক্ষার জন্য সেখানে নতুন করে পরিখা খনন করছে। ওই শহরে গত কয়েকমাস ধরে যুদ্ধ করছে ইউক্রেনের এরকম একটি ড্রোন ইউনিটের কমান্ডার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে তাদেরকে সেখান থেকে চলে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন ১১০ দিন ধরে তিনি সেখানে যুদ্ধ করছেন। তবে কেন তাদেরকে সরে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেবিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের ডোনেৎস্ক ও লুহানস্কে রসদ-পত্র সরবরাহের জন্য একটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ পথের ওপর এই বাখমুত শহরের অবস্থান। এই শহরের নিয়ন্ত্রণ দখল করতে পারলে রাশিয়া এই এলাকাটিকে ক্রামাটরস্ক ও স্লোভিয়ানস্কের মতো দুটি বড় শহরের দিকে এগিয়ে যাবার জন্য ভিত্তি তৈরি করতে পারবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাখমুত শহরে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে রাশিয়ার পক্ষে পুরো ডনবাস অঞ্চল দখল করে নেয়া আরো সহজ হয়ে উঠবে।
বাখমুত দখল করার জন্য লড়ছে রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ। এ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন। বহু রুশ কারাবন্দীকে এই বাহিনীতে সৈনিক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং তারা সহিংস যুদ্ধের জন্য সুপরিচিত। ইউক্রেনের যুদ্ধ ছাড়াও আফ্রিকার কিছু সংঘাতে তারা জড়িত। সূত্র: বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওয়াগনার বাহিনী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ