Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, পুলিশের ফাঁকা গুলি আহত ১০

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৮:১৪ পিএম

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে আওয়ামী লীগের দুইগ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। সড়কে নেতাকর্মীদের অবস্থানের কারনে দুই ঘন্টা টাঙ্গাইল-মশয়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ প্রায় ৩১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও ৬ রাউন্ড টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত রবিবার আওয়ামী লীগের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবীতে ঘাটাইল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলার আনেহলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তালুকদার মোহাম্মদ শাহজাহান। পরে তারা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও কলেজমোড় চত্বরে টায়ারে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করে। তাদের দাবী জামাত বিএনপির সমন্বয়ে হ্ইাব্রিড, পক্ষপাতদুষ্ট ও অনিয়মনতান্ত্রিক ও অসাংগাঠিনিকভাবে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের দাবী ঘোষিত ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির ২৯ জনই জামাত বিএনপি ঘরনার ও অনুপ্রবেশকারী। তারা বর্তমান কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবুর বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনে মনোননয়ন বানিজ্য কমিটির পদ বানিজ্যের অভিযোগ করেন।
পদবঞ্চিতদের ওই কর্মসূচির প্রতিবাদে ঘোষিত নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীরা আজ সোমবার বিকাল তিনটায় ঘোষিত কমিটির নেতাকর্মীরা উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে ওই ঘটনার প্রতিবাদ ও শান্তি সমাবেশের আয়োজন করেন। অপরদিকে পদবঞ্চিত অংশের নেতাকর্মীরা কলেজমোড় চত্বরে পাল্টা সমাবেশের আয়োজন করে। দুপক্ষের নেতাকমীরা লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ দুইপাশে অবস্থান নেয়। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় প্রশাসন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন। পুলিশ উপজেলা বাসষ্ট্যান্ড চত্বরে অবস্থান নেয়। দুপক্ষের মাহসড়কে অবস্থানের কারনে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এক পর্যায়ে দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে । এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দুপক্ষের দাবী। গুরুতর আহত হলো বাহাদুর আলম খান (৫৫), ফজলুর রহমান (৬৫), আবুল কাশেম (৬৫), সালাহউদ্দিন শাহীন (৫০), মোঃ শাহীন।
নবগঠিত কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু এঘটনার জন্য তারা সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানাকে দায়ীী করেন। তিনি জানান দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে আজ সোমবার বিকালে জামাত-বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে দলীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। শান্তি মিছিল বাসষ্ট্যান্ড চত্বরে গেলে সাবেক এমপি রানার অনুসারীরা নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ৫ জন নেতাকর্মী গুরতর আহত হয়। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য স্থানীয় প্রশসনের কাছে অনুরোধ জানান।
পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের পক্ষে আনেহলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তালুকদার মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, বর্তমান কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু একজন দুর্নীতিবাজ। দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি ৭ থেকে ৮ শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তৃনমূলের নিবেদিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে পদ বানিজ্যের মাধ্যমে তিনি জামাত-বিএনপি লোক নিয়ে কমিটি গঠন করেছেন। তৃনমূলের নেতাকর্মীরা এই কমিটি মানে না। যে পর্যন্ত এই কমিটি বাতিল না করা হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন ও কর্মসূচি চলমান থাকবে।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, এ ঘটনায় প্রায় দুই ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। যার কারনে জনভোগন্তির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে বাধ্য হয়ে পুলিশ ৬ রাউন্ড টিয়ারশেল ও শর্টগানের ৩১ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়ে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্তনে আনে ও যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আহত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ