Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ইসরাইলকে কেরির হুঁশিয়ারি শক্ত থাকতে বললেন ট্রাম্প

ওবামা প্রশাসনের বিরুদ্ধে নেতানিয়াহুর ক্ষোভ

| প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ফিলিস্তিন ইস্যুতে ক্রমেই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন ও নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এবার ট্রাম্প তার ক্ষমতা গ্রহণের আগ পর্যন্ত ইসরাইলকে ‘শক্ত’ থাকতে বলেছেন। আর বিপরীতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বসতি স্থাপন বন্ধ না হলে সংকট সমাধান সম্ভব নয় বলে ইসরাইলের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। গত বুধবার এক টুইটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করা পর্যন্ত ইসরাইলকে শক্ত থাকতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরাইল একসময় ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও এখন আর নেই। ইসরাইলকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও অসম্মান করা হচ্ছে। এ অবস্থার অবসান হবে। ট্রাম্পের এই টুইটের কিছুক্ষণ পর ৭০ মিনিটের দীর্ঘ একটি ভাষণে ইসরাইলের বসতি স্থাপনের সমালোচনা করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। ভাষণে তিনি নিন্দা প্রস্তাবে ভেটো না দেয়ার কারণও তুলে ধরেন। কেরি বলেন, অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইসরাইলের অব্যাহত বসতি স্থাপনের নিন্দা করে নিরাপত্তা পরিষদে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তাতে বাধা দেয়নি। কারণ, দুই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা অর্জনে এছাড়া ভিন্ন কোনো উপায় ছিল না। আমাদের লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক ও ইহুদিরাষ্ট্র হিসেবে ইসরাইল যাতে প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি ও নিরাপদে টিকে থাকতে পারে, তা নিশ্চিত করা। এই ভেটো ছিল ইসরাইল ও আমাদের স্বার্থে। কেরি আরো বলেন, ‘এখন যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তা চলতে দেয়ার মানে হলো, একদিকে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি দখল অব্যাহত রাখা, অন্যদিকে দুই রাষ্ট্রের বদলে একটি রাষ্ট্রকে টিকে থাকতে দেয়া। আরব জনসংখ্যা যে দ্রুতগতিতে বাড়ছে তাতে ইসরাইলের পক্ষে একইসঙ্গে ইহুদি ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকা অসম্ভব। অ্যাজেন্ডার ভিত্তিতে ইসরাইলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে চাইছেন। অপরদিকে, ইসরাইল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে দেয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির ভাষণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গত বুধবার এক ভাষণে জন কেরি অভিযোগ করেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরাইলের বসতি নির্মাণ চলমান থাকায় দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ও মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া হুমকির মুখে রয়েছে। আর এজন্য ইসরাইলকেই দায়ী করেন তিনি। কেরির ভাষণের কয়েক মিনিট পরেই এক বিবৃতিতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি কেরির ভাষণকে ইসরাইলবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। নেতানিয়াহু বলেন, ওই বক্তব্য ছিল ভারসাম্যহীন এবং মাত্রাতিরিক্তভাবে ইসরাইলি বসতিকেন্দ্রিক। তিনি আরো বলেন, কেরি তার ভাষণে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী অভিযানের পক্ষে অবিরাম বলে গেছেন। তিনি আরো বলেন, সমস্যার মূলে রয়েছে ফিলিস্তিনিদের ইসরাইলকে স্বীকৃতি না দেয়া। আর তা দেখতে পাচ্ছেন না কেরি।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) দীর্ঘদিনের রীতি ভেঙে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইসরাইলি বসতিবিরোধী প্রস্তাবে ভেটো না দিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করে যুক্তরাষ্ট্র। এদিন ভেটো দেয়ার পরিবর্তে ভোটদান থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয় ওবামা প্রশাসন। এধরনের প্রস্তাব থেকে ইসরাইলকে বাঁচিয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের প্রথা থেকে সরে আসে তারা। কেরি বলেন, দুই রাষ্ট্র নীতির জন্য কয়েক বছর ধরে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও তা এখন জটিলতায় পড়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার আশাবাদ মুঠো ফসকে বেরিয়ে যাচ্ছে তখন সচেতনভাবে আমরা নীরব থেকে ও কিছু না করে থাকতে পারি না। কেরির এ ভাষণের কয়েক মিনিট পরেই এক বিবৃতিতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সমালোচনা করেছেন। তিনি কেরির ভাষণকে ইসরাইলবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, নিরাপত্তা পরিষদে নিন্দা প্রস্তাবে ভোট গ্রহণের আগে ওবামা প্রশাসনের কাছে ভেটো দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকার ঘটনায় টুইটারে ট্রাম্প লিখেছেন, অবস্থা বদলাবে ২০ জানুয়ারির পর। সেদিন ওবামার শেষ দিন ও ট্রাম্পের প্রথম দিন। ফিলিস্তিন ও ইসরাইলবিষয়ক পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ওবামা ও ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান একেবারেই পরস্পরের বিপরীত। ওবামা প্রশাসন চায় দুই দেশের মধ্যকার সমস্যার দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান হোক। অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরাইলি বসতি স্থাপন বন্ধের পাশাপাশি ১৯৬৭ সালের প্রস্তাবিত সীমানা অনুযায়ী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের পক্ষেই ওবামা প্রশাসনের বর্তমান অবস্থান। বিবিসি, রয়টার্স।



 

Show all comments
  • Shibly ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১১:৫৮ এএম says : 0
    Eye Wash.....
    Total Reply(1) Reply
    • Rubina ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ২:০৯ পিএম says : 4
      amar kase o serokom e mone hosse
  • লোকমান ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ২:০৯ পিএম says : 0
    আশা করি জাতিসংঘ তাদের অবস্থানে অটল থাকবে।
    Total Reply(0) Reply
  • সোহেল ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ২:২২ পিএম says : 0
    ইসরাইলের পক্ষে অবস্থা নেয়া হবে আমেরিকার একটি বড় ভুল ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাম্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ