Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সাত বছর পর রাজশাহী মহানগর ও জেলা বিএনপির নতুন কমিটি

| প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রাজশাহী ব্যুরো : দীর্ঘ সাত বছর পর বিএনপির রাজশাহী জেলা ও মহানগর কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে গত মঙ্গলবার। এ দু’টি কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার পর থেকে এখানকার বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে শুরু হয়েছে ব্যাপক গুঞ্জন। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে সভাপতির দায়িত্বে থাকা দুই জায়ান্ট লিডার মিজানুর রহমান মিনু ও নাদিম মোস্তফা বাদ পড়ায় এ নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
রাজশাহী মহানগর কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সিটি মেয়র ও বিএনপির বন ও পরিবেশ-বিষয়ক সম্পাদক মো: মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ত্রাণ- বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও নগর বিএনপিসাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলনকে। আর জেলা কমিটির সভাপতি করা হয়েছে সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপুকে। আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এক সময়ের ডাক সাইটে ছাত্রদল নেতা মতিউর রহমান মন্টুকে। মহাসচিব এ দু’টি কমিটিকে অনুমোদন দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। অবশ্য ইতোমধ্যে মহানগর বিএনপির ৩৭ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। রাজশাহী বিএনপির জেলা ও মহানগর কমিটি গঠন করা হয়েছিল ২০০৯ সালে। জেলা সভাপতি হয়েছিলেন অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা আর সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট কামরুল মনির। এনিয়েও শুরুতে বিভেদ সৃষ্টি হয়। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজন দু’মেরুতে অবস্থান নেন। তা জিইয়ে ছিল এতদিন। আর মহানগর বিএনপির সভাপতি হন মিজানুর রহমান মিনু আর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন। জেলা ও মহানগর দু’কমিটির সভাপতি দলের উপর পুরো প্রভাব বিস্তার করে ছিলেন। এরমধ্যে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বিপুল ভোটে সিটি মেয়র নির্বাচিত হবার পর তাকে ঘিরে নতুন মেরুকরণ হয়। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে পার করেছে বিগত কমিটি সাত বছর। আর মিনু ও নাদিমের মধ্যে সম্পর্ক ছিল সাপে-নেউলে। আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে দল প্রচ- ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যুগ্ম-মহাসচিব রিজভী আহমেদকে নিয়েও ছিল মেরুকরণ। ফলে এখানে দলের চেয়ে ভাই-কেন্দ্রীক রাজনীতি ছিল বেশি।
বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিলে মিজানুর রহমান মিনুকে যুগ্ম-মহাসচিবের পদ থেকে বিএনপির উপদেষ্টা পদে রাখা হয়। আর নাদিম মোস্তফা বিগত কমিটিতে বিশেষ সম্পাদকের পদ পেলে এবারের কমিটিতে কোনো পদ পাননি। রাজশাহীর বিএনপির রাজনীতিতে দুই জায়ান্ট নেতা এবার স্থানীয় কমিটির পদ দু’টি হারালেন। কেন তাদের স্থানীয় রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়া হলো, তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। তাদের কট্টর সমর্থকরা হতাশ হয়ে বলছেন, যাই বলুক মিনু ভাইÑ নাদিম ভাইয়ের বিকল্প নাই। সদ্য ঘোষিত কমিটিতে ঠাঁই পাওয়ার জন্য শুরু হয়েছে দৌড়ঝাপ। যাদের নাম এসেছে তাদের নিয়ে চলছে আলোচনা। কে কোন ঘরানার তা নিয়ে হিসাব- নিকাশ শুরু হয়েছে। মহানগর কমিটি নিয়ে তেমন উত্তাপ না ছড়ালেও জেলা কমিটি নিয়ে উত্তাপ রয়েছে। বিশেষ করে একজন প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতার ঘনিষ্ঠ বলে কজন জেলা সভাপতি ও সেক্রেটারি হওয়ার জন্য মুখিয়ে ছিলেন। কিন্তু তা না হওয়ায় তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। জেলা কমিটিতে ডাক সাইটে নেতা মাঠের লড়াকু নেতা আবু সাঈদ চাঁদের নাম গুরুত্বের সাথে আলোচিত হলেও বাস্তবে তা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তার সমর্থকরা। সদ্য ঘোষণা করা কমিটি বিষয়ে জানতে স্থানীয় বেশ কজন নেতার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা এ মুহূর্তে এসব নিয়ে মুখ খুলতে রাজী হননি। তাদের বক্তব্য সবে শুরু বিষয়টা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। ঘোষিত কমিটির সভাপতি সিটি মেয়র মো: মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের প্রতিক্রিয়া ছিল চেয়ারপারসন ও মহাসচিব যা ভালো মনে করেছেন, তা করেছেন। আমার উপর যে আস্থা বিশ্বাস নিয়ে দায়িত্ব দিয়েছেন, তার কোনো অমর্যাদা করব না। আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার পর তাদের নিয়ে দলকে গতিশীল করতে চাই। এখানে কোনো বিভেদ নেই। যাতে না হয়, সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকব। প্রয়োজন সবার সহযোগিতা।
জেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান মন্টু বলেন দোয়া করবেন ম্যাডাম যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা সবাইকে সাথে নিয়ে যেন পালন করতে পারি। আমাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর মূল কাজ হবে দলকে শক্তিশালী করা। বিদায়ী মহানগর সভাপতি সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনুর সাথে আলাপকালে তিনি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, হাইকমান্ড যা ভালো মনে করেছে, তাই করেছে। আমি দলের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব। এখানে ব্যাক্তির চেয়ে দল বড়। নতুন কমিটির জন্য শুভ কামনা রইল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি

১৩ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ