পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারি সার্ভার হ্যাক করা হয়েছে। সেখানে ঢুকে কর্মকর্তাদের আইডি, পাসওয়ার্ড দিয়ে তৈরি করা হয় জন্মনিবন্ধন সনদ। এক হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকায় এ সনদ দিত তারা। এক হ্যাকারসহ জালিয়াত চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর এমন তথ্য জানিয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। গ্রেফতার পাঁচজন হলেন- মূল হ্যাকার শেখ সেজান, তার সহযোগী সাগর আহমেদ ওরফে জোভান, মেহেদী হাসান, শাকিল হোসেন ও মাসুদ রানা। গ্রেফতার পাঁচজনের মধ্যে চারজনের পড়াশোনা বেশি না হলেও মেহেদী হাসান সোনার গাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। শনিবার চট্টগ্রাম, নড়াইল, ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট চট্টগ্রামের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ লিয়াকত আলী খান গতকাল রোববার নগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইতোপূর্বে গ্রেফতার দুই আসামির জবানবন্দিতে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিন হ্যাকারসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জন্মনিবন্ধন অফিসের অফিশিয়াল সিল, অফিসের প্যাড, সিপিইউ, মনিটর, ল্যাপটপ, প্রিন্টার উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা চট্টগ্রাম, ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, কুমিল্লা, সিলেট, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনসহ ফরিদপুর, বাগেরহাট, নরসিংদী জেলায় কয়েক হাজারের বেশি জন্মনিবন্ধন সনদ দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
লিয়াকত আলী খান আরও বলেন, একাধিক চক্র এ অবৈধ কার্যক্রমে সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। প্রতিটি জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরিতে তারা ১ হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা করে নেন। পরবর্তী সময় ওই ব্যক্তির কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তারা সরকার নির্ধারিত জন্মনিবন্ধন ওয়েবসাইটে ওই ব্যক্তির ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে প্রাথমিক নিবন্ধন করে। ওই তথ্য তথাকথিত একজন হ্যাকারকে দেন। হ্যাকার অবৈধভাবে জন্মনিবন্ধন সার্ভারে প্রবেশ করে একটি জাল সনদ প্রস্তুত করে পুনরায় চক্রের সদস্যদের কাছে দেন। অবৈধভাবে হ্যাকারদের মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন সনদ না নিতে লোকজনকে অনুরোধ জানান পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলী খান। তিনি বলেন, অবৈধভাবে নেওয়া এই সনদ শুধু সার্ভারে দেখা যাবে। কিন্তু সনদে কাউন্সিলরের সিল ও সই সবই জাল। পরবর্তী সময় এ সনদ নিয়ে বিপাকে পড়েন লোকজন।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিট চট্টগ্রামের এডিসি আসিফ মহিউদ্দীন বলেন, এ চক্রের মূলহোতা তথা হ্যাকার সেজান। এইচএসসি পাস এ যুবক গুগলে ঢুকে হ্যাকিং বিষয়ে পারদর্শীতা অর্জন করে। জন্মনিবন্ধন সার্ভার হ্যাক করতে সে থার্ডপার্টি কুকিজ অ্যাপ ব্যবহার করে। কুকিজ হলো ইন্টারনেট ব্রাউজারের ক্যাশ মেমোরিতে জমা হওয়া কিছু ফাইল। যখন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ভিজিট করা হয়, তখন এই কুকিজগুলো ভিজিটকারীর ব্রাউজারে সেভ হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে সরকারি জন্মনিবন্ধন সার্ভারে (লগইন) ঢুকে পাসওয়ার্ডসহ সব তথ্য নিয়ে নেয় সে। আইডি, পাসওয়ার্ডসহ নির্দিষ্ট সময়ের লগইন সেশন চুরি করে নেয় এই হ্যাকার। পরবর্তী সময় চুরি করা কুকিজ তথ্য থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ব্যবহার করে মূল সার্ভারে প্রবেশ করে জন্মনিবন্ধন জালিয়াতির কাজটি করেছে সে। তারা দীর্ঘদিন ধরে এ জালিয়াতির কাজ করে আসছে। ছয় মাস আগে তারা মূল সার্ভার হ্যাক করে নিবন্ধন সনদ দেওয়া শুরু করে।
গত ৮ থেকে ২১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পাঁচটি ওয়ার্ডের আইডি ব্যবহার করে সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে ৫৪৭টি জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু করা হয়। সবশেষ ২৪ জানুয়ারি নগরীর লালখান বাজার ওয়ার্ডে ১৩৩টি জন্মসনদ অবৈধভাবে ইস্যু হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। জন্মনিবন্ধন সনদ জালিয়াতির ঘটনায় এখন পর্যন্ত হওয়া চারটি মামলাই তদন্ত করছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বরখাস্ত অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীনসহ এই পর্যন্ত চারটি মামলায় গ্রেফতার করা হয় ১১ জনকে। সর্বশেষ গ্রেফতার তিনজন হ্যাকার ছাড়া বাকিরা দোকানি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।