পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর কর্মকা- খানিকটা দমিয়ে দিলেও তাইওয়ান নিয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আকাক্সক্ষাকে খাটো করে দেখার উচিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নস। ওয়াশিংটনে জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার তিনি এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। শি তার বাহিনীকে ২০২৭ সালের মধ্যে স্বশাসিত তাইওয়ানে আক্রমণ চালাতে প্রস্তুত হতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে ‘গোয়েন্দা তথ্যের হিসাবে’ যুক্তরাষ্ট্র জানে, বলেছেন বার্নস। “এর অর্থ এই নয় যে তিনি ২০২৭ বা অন্য কোনো বছরে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন, তবে এটি তার মনোযোগ ও আকাক্সক্ষা বিষয়ে গুরুদ্ব দেওয়ার বিষয়টি মনে করিয়ে দিচ্ছে। “আমাদের সিআইএ-র মূল্যায়ন হচ্ছে, আমি তাইওয়ান বিষয়ে প্রেসিডেন্ট শির আকাক্সক্ষাকে খাটো করে দেখিনা,” বলেছেন তিনি। ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনী ও তাদের অস্ত্রশস্ত্রের ‘দুর্বল কার্যকারিতা’ দেখে চীনের নেতা ‘স্তম্ভিত ও বিচলিত’ হয়ে পড়েন এবং সেখান থেকে শিক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও জানান এ সিআইএ কর্তা। ইউক্রেনে রুশ সেনা ঢোকার অল্প কিছুদিন আগেই মস্কো ও বেইজিং তাদের মধ্যে ‘সীমাহীন বন্ধুত্বের’ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল, তাদের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কও দিনদিন জোরদার হচ্ছে, যা এরইমধ্যে পশ্চিমাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাশিয়া তার প্রতিবেশী দেশে অভিযান শুরুর পর চীনেরও তাইওয়ানে একই ধরনের অভিযানে নামার সম্ভাবনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। বেইজিং তাইওয়ানকে তার বিচ্ছিন্ন প্রদেশ মনে করে; মূলভূখ-ে দ্বীপটিকে একীভূত করতে বলপ্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না তারা। অন্যদিকে তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন দেশ মনে করে; আর যুক্তরাষ্ট্র মুখে ‘এক চীন’ নীতিতে বিশ্বাসী হলেও তাইওয়ানকে রক্ষায় সামরিক সহযোগিতা দিতে তারা আইনিভাবেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চীন ইউক্রেনে অভিযানের জন্য রাশিয়াকে দোষারোপ না করলেও, মস্কোকে সরাসরি সহযোগিতা করা থেকে বিরত রয়েছে। এর আগে, ইউক্রেন যুদ্ধের ফল নির্ধারণে আগামী ছয় মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র পরিচালক বিল বার্নস। বৃহস্পতিবার তিনি জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ভাষণে এই ভবিষ্যদ্বাণী করেন বলে জানিয়েছে সিএনএন। তিনি বলেন, “আমি মনে করি যা হতে চলেছে তা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আলোচনায় বসতে আগ্রহী হবেন- এমনটি আমাদের হিসাবের মধ্যে নেই। ফলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, আগামী ছয় মাসে মূল বিষয়টি ঘটবে যুদ্ধক্ষেত্রেই।” বার্নস আরো বলেন, “আমার ধারণা, পুতিন এখন দৃঢ়ভাবেই মনে করছেন যে, তিনি সময়কে তার অনুকূলে কাজে লাগতে পারেন। তাই যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ মোড় পরিবর্তন আগামী ছয় মাসে ঘটবে বলে আমাদের মনে হচ্ছে।” এই সময়ের মধ্যে ‘পুতিনের ঔদ্ধত্য খর্ব’ হতে পারে উল্লেখ করে বার্নস বলেন, এটি স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, তিনি (পুতিন) ইউক্রেইনে আর অগ্রসর হতে পারবে না কেবল তাই নয়, বরং একটি একটি করে মাস অতিবাহিত হতে থাকার সঙ্গে সঙ্গে এ পর্যন্ত তার অবৈধভাবে দখল করে নেওয়া অঞ্চলগুলো হারানোর ঝুঁকি অনেক অনেক বেশি বেড়ে যাবে।” “যুদ্ধের এই পরবর্তী অধ্যায় পুরোপুরি গরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলেই আমি মনে করি,” বলেন তিনি। বার্নস আরও বলেন, “পুতিন বিশ্বাস করেন, ইউরোপে রাজনৈতিক অবসাদ দেখা দিলে কিংবা যুক্তরাষ্ট্র বিভ্রান্ত হয়ে পড়লে তিনি ইউক্রেনকে মুচড়ে ফেলতে পারবেন বা তার সেনাবাহিনী অভিযান সফল করার নতুন একটি সুযোগ পেয়ে যেতে পারে।” সরাসরি সামরিক সরঞ্জাম দিলে বেইজিংও মস্কোর মতোই পশ্চিমাদের কঠোর নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারে। “অংশীদারিত্ব বিষয়ে তাদের দুই দেশের পারস্পরিক প্রতিশ্রুতিকে খাটো করে দেখা ভুল বলে মনে করি আমি, তবে তাদের বন্ধুত্ব সীমাহীন নয়,” বলেছেন বার্নস। বার্নস তার বক্তৃতায় এই প্রসঙ্গে কিছু না বললেও চীনকে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের মুখোমুখি হওয়া ‘সর্ববৃহৎ ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ’ অভিহিত করেন। “চীনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা মাত্রাগত দিক থেকেই অনন্য। সব খাতে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে, কেকল সামরিক বা আদর্শগতভাবেই নয়, অর্থনৈতিক, প্রযুক্তি, সাইবারজগত থেকে শুরু করে মহাকাশ, সর্বত্র। বিশ্বব্যাপী এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার যে ধরন, তাতে এটি সোভিয়েতের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেয়েও তীব্র হয়ে যেতে পারে,” বলেছেন তিনি। রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।