Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জুমার দিনের তাৎপর্য ও আমলসমূহ

মাওলানা সাজিদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

সপ্তাহের সাতদিনের মধ্যে জুমুআর দিন হলো সর্বশ্রেষ্ঠ।এই দিনে ইসলামের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। জুমুআর দিনে একজন মুমিনের প্রধান দায়িত্ব হলো জুমুআর নামাজ আদায় করা। পবিত্র কোরআন শরীফে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন ‘হে ইমানদারগণ! জুমুআর দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হবে, তখন তোমরা বেচা-কেনা ছেড়ে আল্লাহর স্বরণে ধাবিত হও।আর এটা হলো তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমুআ : আয়াত ৯)।
হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত এক হাদীসে নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সূর্যোদয় হওয়ার দিন সমূহের মধ্যে সর্বোত্তম দিন হল জুমুআর দিন।আর জুমআর দিন হযরত আদম আলাইহিসসালামকে তৈরী করা হয়েছে। আর এদিনেই তাকে বেহেশতে প্রবেশ করানো হয়েছে। এবং এই দিনেই তাকে বেহেশত থেকে বের করে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছে। আর কিয়ামত জুমআর দিনেই অনুষ্ঠিত হবে।’ (সহীহুল মুসলিম, হাদিস নং : ৮৫৪)।
এছাড়া শুক্রবারের আরো বেশকিছু আমলের ফজিলত রয়েছে : ১। শুক্রবারে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যখন দোয়া করলে কবুল করা হয়। এ সম্পর্কে হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহুর সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অবশ্যই অবশ্যই জুমুআর দিনে এমন একটি সময় আছে; যখন কোনো মুসলিম বান্দাহ আল্লাহর কাছে কল্যাণকর কিছু কামনা করলে অবশ্যই তাকে দেওয়া হয়। (সহীহুল বুখারী ও মুসলিম)।
তবে এই মুহুর্তটি ঠিক কোন সময় এ নিয়ে অনেকগুলো মতামত পাওয়া গেলেও ইবনে হাজম সহ অধিকাংশের আলেমদের মতে দুটি মূহুর্তের একটি। একটি হলো দুই খুতবার মধ্যবর্তী সময় আর আরেকটি সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্তে।
২। সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করা। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমুআর দিনে সুরা কাহাফ তেলাওয়াত করবে, তার ঈমানের জ্যোতি এক জুমুআ হতে আরেক জুমুআ পর্যন্ত চলতে থাকবে।’ (মিশকাত শরিফ, হাদিস নং : ২১৭৫)।
এটা বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর থেকে শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত পড়তে পারবে। এক সাথে পড়া জরুরি নয়। আর না পারলে অন্তত দশ আয়াত তেলাওয়াত করার কথা বলা হয়েছে। সুরায়ে কাহাফ তেলাওয়াতের দ্বারা দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
৩। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর বেশি বেশি দুরুদ পাঠ করা। হাদীসে এসেছে নবি করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘জুমুআর দিন আমার উপর বেশি বেশি করে দুরুদ পাঠ করো।কেননা তোমাদের পাঠকৃত দুরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং : ১০৪৭)। দুরুদ শরিফ পাঠ সম্পর্কে অন্যত্রে নবি করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি নবি করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর একবার দুরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার উপর দশটি রহমত নাযিল করবেন।’ (জামেউত তিরমিযি)।
এছাড়াও জুমুআর দিনে আরো বিশেষ আমল রয়েছে। যেমন : পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া ও সুগন্ধি ব্যবহার করা এবং তাড়াতাড়ি মসজিদে গমন করা ইত্যাদি। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে জুমুআর দিনের বিশেষ আমল আদায়ের মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের তাউফিক দান করুন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ