মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নিজেদের মধ্যে অভিন্ন মুদ্রা চালু করতে চায় দক্ষিণ আমেরিকার দুই দেশ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। এ লক্ষ্যে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে দেশ দু’টি। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজেদের মধ্যে অভিন্ন মুদ্রা প্রতিষ্ঠাসহ বৃহত্তর অর্থনৈতিক একীকরণের লক্ষ্য নিয়েছে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা এবং আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজের লেখা যৌথ এক নিবন্ধে একথা বলা হয়েছে।
আর্জেন্টিনার ওয়েবসাইট পারফিলে ওই নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা আমাদের বিনিময়ের প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে, নিয়মগুলোকে সহজ ও আধুনিকীকরণ করতে এবং স্থানীয় মুদ্রার ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে চাই।’
নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘আমরা একটি অভিন্ন দক্ষিণ আমেরিকান মুদ্রার বিষয়ে আলোচনা আরও অগ্রসর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি যা আর্থিক এবং বাণিজ্যিক উভয় ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে, একইসঙ্গে এর পরিচালন ব্যয় এবং আমাদের বাহ্যিক ঝুঁকিও হ্রাস করতে পারে।’
রয়টার্স বলছে, নিজেদের মধ্যে অভিন্ন মুদ্রা চালুর ধারণা মূলত গত বছর ফার্নান্দো হাদ্দাদ এবং গ্যাব্রিয়েল গালিপোলোর লেখা একটি নিবন্ধে উত্থাপিত হয়েছিল। ফার্নান্দো হাদ্দাদ বর্তমানে ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রী এবং গ্যাব্রিয়েল তার নির্বাহী সচিব। গত বছরের এই প্রচারণার সময় তারা বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলাকেও উল্লেখ করেছিলেন।
দক্ষিণ আমেরিকায় ব্রাজিলের প্রধান ও সর্ববৃহৎ ব্যবসায়িক অংশীদার আর্জেন্টিনা। আর তাই চলতি মাসের শুরুতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ঐতিহ্য বজায় রেখে লুলা তার প্রথম বিদেশ সফরের জন্য আর্জেন্টিনাকে বেছে নেন।
অন্যদিকে প্রতিবেশী আর্জেন্টিনাও ওই সফরটিকে ল্যাটিন আমেরিকান অ্যান্ড ক্যারিবিয়ান স্টেটস (সিইএলএসি) গোষ্ঠীতে ব্রাজিলের প্রত্যাবর্তন হিসেবে চিহ্নিত করে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর নির্দেশে ব্রাজিল ২০১৯ সালে এই গোষ্ঠী থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। মূলত কিউবা এবং ভেনিজুয়েলার উপস্থিতির কারণে আঞ্চলিক গোষ্ঠীতে অংশগ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলেন বলসোনারো।
রয়টার্স বলছে, নিজেদের লেখা ওই নিবন্ধে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের মধ্যে আঞ্চলিক সংহতি জোরদার করার জন্য উভয় প্রেসিডেন্টই ভালো সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়েছেন। এছাড়া উভয় নেতা মার্কোসুর বাণিজ্য ব্লককে শক্তিশালী করার ওপরও জোর দিয়েছেন।
ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা ছাড়াও এই বাণিজ্য ব্লকে প্যারাগুয়ে এবং উরুগুয়েও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এমনকি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই ব্লকটি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রী হাদ্দাদ সম্প্রতি দুঃখও প্রকাশ করেছেন।
অবশ্য একদিন আগেই ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছিল, নিজেদের মধ্যে অভিন্ন মুদ্রা চালুর জন্য প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করার বিষয়ে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা এই সপ্তাহে ঘোষণা দেবে।
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এই সপ্তাহে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসে একটি শীর্ষ সম্মেলনে এই পরিকল্পনার ব্যাপারে আলোচনা হবে। অভিন্ন এই মুদ্রার নাম হতে পারে ‘সুর’ (দক্ষিণ) এবং আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়াতে ও মার্কিন ডলারের ওপর নির্ভরতা কমাতে এই মুদ্রা কিভাবে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে সেই বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।
অবশ্য উভয় দেশের রাজনীতিবিদরা ২০১৯ সালে অভিন্ন মুদ্রা চালুর এই ধারণাটি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। কিন্তু সে সময় ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এর বিরোধিতা করা হয়েছিল।
প্রাথমিকভাবে এটি দ্বিপাক্ষিক প্রকল্প হিসাবে শুরু হবে। পরবর্তীতে ল্যাটিন আমেরিকার অন্য দেশগুলোকে এতে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।