Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

‘খেলার গুরুত্ব বোঝে পাকিস্তান’

| প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : নিরাপত্তাজনিত সমস্যায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নির্বাসিত পাকিস্তান ক্রিকেট। একই অজুহাতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ও পরে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ সফর বাতিল করে অস্ট্রেলিয়া। তবে বাংলাদেশের চেয়ে ঘরের মাঠে খেলার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি বোঝে সম্ভবত পাকিস্তানই। নিরাপত্তা শঙ্কায় এবার যখন স্বয়ং অস্ট্রেলিয়া, সেই অস্ট্রেলিয়ার দিকে সাহসের হাত বাড়িয়ে দিলো পাকিস্তান।
অ্যাসেজের পর অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে যে ম্যাচটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি উন্মদনা বিরাজ করে তা হল বক্সিং ডে টেস্ট। বড়দিনের পরের দিন মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ঐতিহ্যের এই ম্যাচে এবার অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। ধারণা করা হচ্ছে, এ বছর এক লক্ষাধীক দর্শক মাঠে বসেই এই ম্যাচ উপভোগ করবে। কিন্তু আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া এই ম্যাচকে ঘিরে মেলবোর্নের আকাশে হঠাৎই দেখা দেয় শঙ্কার কালো মেঘ। নিরাপত্তার অজুহাত তোলে স্বয়ং অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাই। পরে অবশ্য সংস্থার পক্ষ থেকে শতভাগ নিরাপত্তার নিশ্চিত করা হয়। প্রাথমিক খবরে শোনা যচ্ছিল, পাকিস্তান খেলার ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেছে। কিন্তু শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে সব শঙ্কা উড়িয়ে খেলার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়েছেন দলের মিডিল অর্ডার ব্যাটসম্যান আসাদ শফিক। সংবাদ সম্মেলনে শফিক জানান, এমন ম্যাচের গুরুত্ব বুঝেই সিরিজটা জীবিত রাখতে চায় পাকিস্তান।
আজহার আলী, আসাদ শফিক, সরফরাজ আহমেদ ও ওয়াহাব রিয়াজের মতো খেলোয়াড়রা ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তান দলে খেলে আসছেন। কিন্তু এবারই প্রথম তাদের সামনে সুযোগ বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলার। তবে এই কারণে নয়। নিপারপত্ত¡ার শঙ্কা নিয়েও তারা খেলতে চান এই ম্যাচের গুরুত্ব জেনেই। এমনটিই জানান সিরিজের প্রথম টেস্টের নায়ক শফিক, ‘আমরা এই খেলার গুরুত্ব বুঝি। এটা বড় একটা টেস্ট ম্যাচ, বক্সিং ডে টেস্ট এটি। এই ম্যাচ দেখেই আমরা পাকিস্তানে বড় হয়েছি, আমরা জানি এই টেস্টের গুরুত্ব কতটুকু।’
শফিকের অনবদ্য ১৩৭ রানে ভর করেই জমে উঠেছিল গ্যাবার প্রথম টেস্ট। ৪৯০ রানের বিশাল লক্ষে শেষ পর্যন্ত ৩৯ রানে হারে পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৪২ রানে অলআউট হওয়া দলের পক্ষে এভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়টিই নতুনভাবে আশা জাগাচ্ছে পাকদের। ৩০ বছর বয়সী ডানহাতিও এটাকে দেখছেন তাদের আত্মবিশ্বাসের জায়গা হিসেবে, ‘বিশেষ করে প্রথম টেস্টের পর আমরা সবাই আশাবাদী। দলের সবাই এ ব্যাপারে একাত্ম।’ তবে বিশাল দর্শকের সামনে সফরকারী দল হিসেবে এমন ম্যাচ খেলা যে সহজ হবে না সেটা স্বীকার করে শফিক বলেন, ‘আমরা এটা (চাপ) অনুভব করব, কারণ আমরা সাধারণত এমন বিশাল দর্শকের সামনে কখনো খেলিনি।’
প্রথমবারের মতো এই মাঠে নামার অপেক্ষায় থাকা শফিক বলেন, ‘এই মাঠের মর্যাদাপূর্ণ ইতিহাস রয়েছে এবং অন্যদের সাথে প্রথমবারের মতো এখানে খেলতে পারা তাদের মতো আমার জন্যও গর্বের।’ সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এই টেস্ট তাদের জন্য হতে পারে আদর্শ জায়গাও। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এ পর্যন্ত চারটি টেস্ট জিতেছে পাকিস্তানÑ দু’টি মেলবোর্নে, দু’টি সিডনিতে। শফিক অবশ্য এতকিছু জানেন না। তার কাছে, ‘প্রতিটা দিনই হলো নতুন দিন এবং প্রতিটা ম্যাচই নতুন ম্যাচ। জয় ছিনিয়ে আনতে অবশ্যই প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে।’
মেলবোর্নে পাকিস্তানের জয় দু’টি ১৯৭৯ ও ১৯৮১ সালে। সর্বশেষ জয়কে শুধু জয় বললে কমই বলা হবে। প্রথম ইনিংসে ৫০০ রান করে স্বাগতিকদের ২৯৩ রানে গুটিয়ে ফলো অনে ফেলে পাকিস্তান। সেই ম্যাচ তারা জেতে ইনিংস ও ৮২ রানে। আর আগের ম্যাচটি জন্ম দিয়েছিল বিষ্ময়ের। ৩৮২ রানের জয়ের লক্ষে তিন উইকেটে ৩০৫ থেকে ৩১০ রানে গুটিয়ে যায় অজিরা। সেই ম্যাচে ৮৬ রানে ৯ উইকেট নিয়েছিলেন সরফরাজ নওয়াজ। এখনো পর্যন্ত যা কোনো পাকিস্তানি ফাস্ট বোলারের সেরা বোলিং ফিগার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ