Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাকিস্তানের হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে প্রবীণ আইনজীবীকে গুলি করে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ৩:০৬ পিএম

পাকিস্তানের পেশোয়ার হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে বার অ্যাসোসিয়েশনের কক্ষে প্রবীণ আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ আবদুল লতিফ আফ্রিদিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের বরাত দিয়ে পাকিস্তানের গণমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, গতকাল সোমবার এ ঘটনা ঘটেছে।
আবদুল লতিফ আফ্রিদি সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী। তাঁকে হত্যার ঘটনা আইনজীবীদের স্তব্ধ করে দিয়েছে। আইনজীবীরা বলেছেন, একটি যুগের অবসান হলো।
প্রবীণ এই আইনজীবীর মুখপাত্র মুহাম্মদ আসিম বলেছেন, ঘটনার পরপরই তাঁকে পেশোয়ার লেডি রিডিং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সিনিয়র পুলিশ সুপার কাশিফ আব্বাসি বলেছেন, ‘আফ্রিদি বার অ্যাসোসিয়েশনের কক্ষে অন্যান্য আইনজীবীর সঙ্গে বসে ছিলেন। হঠাৎ একজন বন্দুকধারী কক্ষে ঢুকে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করেন।’
বন্দুকধারীর নাম আদনান আফ্রিদি। তাঁকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলেও জানিয়েছেন কাশিফ আব্বাসি। তিনি বলেছেন, ‘হামলাকারী আফ্রিদির পূর্বপরিচিত ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে একটি ছোট অস্ত্র, একটি পরিচয়পত্র ও একটি শিক্ষার্থী কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।’
কাশিফ আব্বাসি আরও বলেছেন, ‘ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরে এ হামলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাকারীর চাচাতো ভাই আফতাব আফ্রিদিকে গত বছর গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি সোয়াতের সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের বিচারক ছিলেন। লতিফ আফ্রিদি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছিল। পরে সোয়াবির একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালত তাঁদের মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন।
এদিকে লতিফ আফ্রিদি হত্যার ঘটনাকে ‘নিরাপত্তার ত্রুটি’ বলে অভিহিত করেছে পেশোয়ার হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন। আইনজীবীরা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, ‘নিরাপত্তাব্যবস্থা কতটা ত্রুটিপূর্ণ হলে একজন হামলাকারী অস্ত্র নিয়ে বারকক্ষে ঢুকে পড়তে পারে!’
পেশোয়ার হাইকোর্ট বার কাউন্সিলের দপ্তর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণেই অবস্থিত। হাইকোর্টের প্রবেশপথে নিয়মিত কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে। কেবল পরিচয়পত্র দেখেই লোকজনকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।
১৯৪৩ সালে জন্মগ্রহণ করা আবদুল লতিফ আফ্রিদি ১৯৬৮ সালে পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেছিলেন। এরপর দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে তিনি একজন সফল আইনজীবী হিসেবে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় অধিষ্ঠিত করেছিলেন। আবদুল লতিফ আফ্রিদি ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া পেশোয়ার হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে তিনি একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে আইনজীবী মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আবদুল লতিফ আফ্রিদির নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেছেন, ‘খাইবার পাখতুনখাওয়ায় ক্রমবর্ধমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রাদেশিক সরকারের এ বিষয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ