পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মেলা ক্রমেই জমতে শুরু করেছে বেচাকেনা। বেড়েছে দর্শনার্থী। ক্রেতা টানতে ব্যবসায়ীরাও ছাড় দিতে শুরু করেছেন। দর্শনার্থীরা এখন শুধুই দেখছেনই না। পণ্য ক্রয় করেই মেলা ছাড়ছেন। ১৩০ টাকার পণ্যের স্টলে ক্রেতাদের দেখা গেছে উপছে পড়া ভীড়। এদিকে মেলার বাইরের পরিবেশ নিয়ে বিব্রত ও হয়রানির কথা জানালেন দর্শনার্থীরা। শুধু তাই নয়, মেলার ভেতরে ১৬ দিন পরেও নতুন নতুন স্টল নির্মাণ করতে দেখা গেছে অনেককেই।
আর বেশি ক্রেতা পেয়ে ব্যবসায়ীদের নিয়োজিত লোকজন ক্রেতাদের হাতে ধরে স্টল পরিদর্শনে আহবান জানাচ্ছেন তাদের সাজানো পণ্য দেখাতে। তাদের অনেকেই ছাড় দিতে শুরু করেছেন। এ ছাড়ের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এখনো দর্শনার্থীদের পণ্যমূল্য নিয়ে রয়েছে অভিযোগ।
গতকাল সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এবার সরকারী ছুটির দিন ছাড়াও গত রোববার ও সোমবার দিনভর মেলায় ছিলো লক্ষাধিক লোকের সমাগম। তবে রাজধানী থেকে আসা বাণিজ্য মেলার দর্শনার্থীদের পরিবহনের যান বিআরটিসি ও স্থানীয় সিএনজি অটোরিকশাওয়ালাদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ে ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন অনেকে।
গতকাল সকালেও দর্শনার্থী তেমন উপস্থিতি না থাকলেও দুপুরের পর থেকে মেলার প্রবেশ করতে দেখা গেছে বিপুল পরিমাণ দর্শনার্থীদের। বেচাকেনাও হয়েছে বেশ। মেলার অভ্যন্তরীণ প্যাভিলিয়ন ও স্টলগুলো ছিলো কানায় কানায় পূর্ণ। বেøজার বিক্রেতা, শীতের কাপড়ে দেয়া হয়েছে বিশেষ ছাড়। ফলে বেড়েছে বেচাকেনা ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি। এদিকে মেলায় আয়োজকরা প্রত্যাশা পুরণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
মেলায় ঘুরতে আসা নরসিংদীর খন্দকার শাহীন বলেন, মেলার সব পরিস্থিতি ভালো লাগলো তবে বাইরের পরিবেশে ক্রেতা বান্ধব নয়। আবার মেলার ভেতরের কিছু পণ্যের দাম বেশি হাঁকা হচ্ছে। ক্রয় করতে অনেকেই হিমশিম খাচ্ছে। ১৩০ টাকার পণ্যের দোকানে ভীড় দেখা গেছে নারী ক্রেতাদের।
মেলার ঘুরতে আসা মধুখালীর গৃহিনী তাহছিনা আক্তার নিশাত বলেন, মেলার স্থায়ী প্যাভিলিয়ন ও আয়োজন আন্তর্জাতিকমানের হয়েছে। তবে ভেতরে থাকা পণ্যগুলোর বেশিরভাগ চকবাজার থেকে রাখা। তারা বিদেশী বললেও সব বিদেশী পণ্য নয় মনে হলো। আর মেলার ভেতরে এখনো নতুন স্টল প্রস্তুত হচ্ছে। তাও নিম্নমানের সাজানো। যা ভালো লাগেনি।
মেলা ঘুরতে আসা হারিন্দার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, এবার মেলায় আগত দর্শনার্থীদের যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো থাকায় লোকজন আসছে বেশি। তবে মেলার ভেতরের কিছু স্টলের কাজ চলায় পরিবেশ বিব্রতকর। অন্যদিকে বিআরটিসি বাসের ভাড়া আর স্থানীয় পরিবহনের সব ভাড়া বাড়িয়ে দেয়ায় ভোগান্তিও রয়েছে।
মেলার ১৬ দিনের দিনেও স্টল নির্মাণ কাজ করা শ্রমিক মোতালিব মিয়া বলেন, স্টলটি খালি পড়ে ছিলো, গাজীপুরের এক ব্যবসায়ী কোনো কায়দায় দুটি স্টল ম্যানেজ করেছেন দেরিতে। তাই কাজ পরে শুরু করেছে। আবার শুনছি মেলার মেয়াদ বাড়াবে। তাই আরও ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতি নিচ্ছে।
মেলায় আসা দর্শনার্থীদের তথ্য ও নিরাপত্তা জনিত সহায়তায় রয়েছে স্থানীয় ১৭৫ জন স্বেচ্ছাসেবক। তাদের সহযোগিতা পেয়ে খুশি দর্শনার্থীরা। সোনারগাঁও থেকে আসা দর্শনার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, টিকেট কাটতে দীর্ঘলাইনে দাড়িয়ে কিছুটা হয়রানি হতে হয়েছে। এ সময় স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় সুশৃঙ্খলভাবে প্রবেশ করি।
স্বেচ্ছাসেবক টীম লিডার আবদুল আজিজ বলেন, মেলায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় দর্শনার্থীরা প্রবেশ, ভ্রমণ, মালামাল নিরাপত্তাসহায়তা পাচ্ছে। তারা যাতে হয়রানির শিকার না হয়, হকারদের দ্বারা প্রতারিত না হয়, এসব বিষয়ে সহযোগিতা প্রদান করছি।
এদিকে মেলায় বেচাকেনা বেড়েছে। বিকালে প্রচুর দর্শনার্থী হয়। তাই মেলার অন্য ব্যবসায়ীরাও ছাড় দেয়া শুরু করেছে। এবার আসরটি পুরোপুরি জমজমাট হবে জানিয়ে মেলার হরেক পণ্যের ব্যবসায়ী শরীফ মিয়া বলেন, মেলায় সাধারণ ক্রেতারা ১৩০ টাকার পণ্য ক্রয়ে আগ্রহী হচ্ছেন। তবে ক্রেতাদের দাবি গত বছর যে পণ্যের দাম ৯৯ টাকা ছিলো এবার তা ১৩০ টাকা করেছে।
জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোক্তার হোসেন বলেন, বাণিজ্য মেলার আসর রূপগঞ্জে হওয়াতে স্থানীয় শিক্ষিত যুবকদের কর্মসংস্থান হয়েছে। এবার গতবারের তুলনায় দর্শনার্থী হচ্ছে বহুগুন বেশি।
সূত্র জানায়, এবার মেলায় সাধারণ, প্রিমিয়াম, সংরক্ষিত, ফুড স্টল ও রেস্তোরসহ ১৩ ক্যাটাগরিতে স্টল রয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে রয়েছে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। এবার দেশি-বিদেশি মিলে মেলায় মোট ৩৩৩টি স্টল, প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। গতবার এই সংখ্যা ছিল ২২৫টি।
দেশি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া, ভারতসহ ১০টি বিদেশি রাষ্ট্রের ১৭টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিয়েছে। এছাড়া গতবার শিশুপার্ক ছিল না, এবার মিনি শিশুপার্ক রয়েছে। যদিও এটি বেসরকারি উদ্যোগে। আবার দর্শনার্থীদের আনা-নেওয়ার জন্য ৫০টি শাটল বাস চালু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন। বাসের ভাড়া যাত্রিপ্রতি ৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিকাশের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধ করলে যাত্রিরা ৫০ শতাংশ ছাড়ও পাবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।