পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জমে ওঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৭তম আসর। তীব্র শীত শেষে রোদের দেখা পাওয়ায় ক্রমেই বাড়তে শুরু করেছে দর্শনার্থী। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বেচাকেনা। তবে দাম নিয়ে আগের মতই অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের। এদিকে প্রতিদিন কাঞ্চন ব্রিজের টোল ঘরে টোল আদায়ে ধীর গতি থাকায় যানজট সমস্যা লেগেই আছে। শুধু তাই নয়, মুল মেলার বাইরে হকারদের বসানো অঘোষিত মেলা রূপ নিয়েছে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের বিড়ম্বনায়। মেলায় প্রবেশের সময় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের যার যার অস্থায়ী খাবারের হোটেলে ডেকে নেয় ও খোলা খাবার বিক্রির কারণে এমন বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন তারা। অন্যদিকে মেলায় থাকা শিশুপার্কে শিশু ও অভিভাবকদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, গতকাল সকাল ১০টায় প্রধান ফটক খুলে দিলে প্রবেশ করতে থাকে দর্শনার্থী। এ সময় মেলার পূর্ব ও দক্ষিণপ্রান্তে বাইরের দিকে অস্থায়ী রেস্টুরেন্ট মালিক ও শ্রমিকদের উৎপাতে দর্শনার্থীরা বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়েছেন। রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে আসা তারেক আল মামুন বলেন, একটি আন্তর্জাতিক মানের এ মেলার সামনের অংশে এমন হকারদের উৎপাত মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। মানুষজনকে তাদের হোটেলে খেতে বাধ্য করার মতো পরিস্থিতি কাম্য নয়। অথচ ভেতরে ভালো মানের খাবার ও হোটেল রয়েছে। মেলার দায়িত্বরত খাদ্য নিরাপত্তা পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে মেলার ভেতরে ও বাইরের খাবার হোটেল দেখভাল করছি। তবে বাইরে হোটেলগুলো কোন বলে এখানে রয়েছে তা জানা নেই। তাদের খাবারের মান ও হয়রানির অভিযোগ থাকলে দেখবো।
মেলার প্রবেশদ্বার এলাকায় দেখা যায়, দর্শনার্থীদের লাইন ধরে টিকেট কেটে প্রবেশ করার চিত্র। আশপাশের জেলার লোকজন এবার বেশি এসেছেন যোগাযোগ ব্যবস্থা কিছুটা উন্নতি হওয়ায়। এতদিন শীতের কারণে দূর জেলার লোকজন কিছুটা কম আসছে। অনেকেই স্থায়ী প্যাভিলিয়নের দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা দেখে সেলফী তুলে নিজেদের উপস্থিতি শেয়ার করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে বাইরের পরিবেশ নিয়ে দর্শনার্থীদের অভিযোগের শেষ নেই। গাজীপুরের কালীগঞ্জের শহিদুল ইসলাম বলেন, মেলার বাইরে স্থানে স্থানে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ আবার যত্রতত্র খাবার হোটেল ছাড়াও রয়েছে হকারদের দৌরাত্ম। এসব কারণে মেলার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আমরা দর্শনার্থীরাও হয়রানি হচ্ছি। অন্যদিকে মেলার ভেতরের টয়লেটের ব্যবস্থাপনা নিয়েও রয়েছে অভিযোগ। মেঝেতে পানি জমে স্যাঁতসেতে হয়ে গেছে। দুর্গন্ধযুক্ত এসব টয়লেট ব্যবহার করতে হচ্ছে অনেকটা বাধ্য হয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য মেলায় আসার একমাত্র সড়ক শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পাড়ের ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়কের বেহাল দশায় ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন অনেকেই। আবার ওই সড়কে একটি চাঁদাবাজচক্র হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের বিব্রত করছেন। ইছাখালী এলাকার বাসিন্দা জিন্নাহ হোসেন জনি বলেন, মেলার যাওয়ার পথে রূপগঞ্জের মুশুরী থেকে ভক্তবাড়ি পর্যন্ত প্রতিদিন একটি হাতি দিয়ে সোলেমান নামের এক কিশোর পথচারীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। চাঁদা না দিলে ভয় দেখায়। ওই হাতি দিয়ে চাঁদাবাজের টার্গেট থাকে মেলায় আগত দর্শনার্থীরা।
গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা মাছুম মিয়া বলেন, এবার মেলায় ধুলোবালির কারণেও ভোগান্তি হচ্ছে। ধুলা কমাতে বাণিজ্য মেলার সামনের অংশে সড়কে পানি ছিটানোর প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। রূপগঞ্জের মধুখালীর বাসিন্দা মাহরিা তাসফি প্রভা বলেন, মেলায় যাতায়াতের সময় ধুলায় কাপড়চোপড় একদম নষ্ট হয়ে যায়। পানি ছিটালে রাস্তাগুলো থেকে ধুলা কিছুটা কমবে বলে তিনি মনে করেন।
কাঞ্চন মায়ারবাড়ির বাসিন্দা রুস্তম মিয়া বলেন, গাউছিয়া থেকে মেলায় আসার পথ ঢাকা বাইপাস সড়ক। এখানে পুরো সড়কে কাজ চলমান। তাই ১০ মিনিটের পথ ২ ঘণ্টায় আসতে হয়েছে। কাঞ্চন ব্রিজের টোল ঘরে টোল আদায়ে ধীর গতির কারণে এ সমস্যা হয় বেশি।
বাণিজ্য মেলায় আশপাশের ঢাকা বাইপাসে দায়িত্বরত এটিএসআই নাজমুল ইসলাম বলেন, এ সড়কে সবসময় যানবাহন চলাচলে বাড়তি চাপ থাকে। আর মেলার পাশে কোন হকার বসতে দেয়া হয়নি। পূর্বপাড়ে বসলেও এটা আমাদের দায়িত্ব নয়।
এদিকে মেলা ঘুরে দেখা যায়, মেলার অভ্যন্তরে মাসব্যাপী মেলায় এবার দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কসমেটিকস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইঔেক্ট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহ-সামগ্রী, চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিজাত খাদ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, বাণিজ্যমেলা প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে খোলা থাকছে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)‘র সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধূরী বলেন, গতবারের তুলনায় এবার যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো থাকায় রাজধানীর লোকজন খুব সহজেই মেলায় আসতে পারছেন। আর ঢাকা বাইপাস সড়কের উন্নয়ন কাজ চলমান। তাই কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এ সময় তিনি বলেন, মেলার অভ্যন্তরীণ বিষয় আমার দেখা দায়িত্ব। বাইরের বিষয় আমার নয়, পুলিশের কাজ।
এ বিষয়ে মেলার সার্বিক নিরাপত্তা কাজে দায়িত্বরত নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিন খসরু ইনকিলাবকে বলেন, মেলার অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় আমরা নিয়োজিত। এখানে বাইরের পরিবেশে কেউ বিব্রত বা হয়রানি হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।