পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে গতকাল শুক্রবার ফজর নামাজের পর পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হকের আমবয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে। এরপর সেখানে জুমার নামাজ আদায় করেছেন দেশ-বিদেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।
মুসলিম উম্মার দ্বিতীয় বৃহৎ জামায়াতে খুতবা পাঠ ও ইমামতি করেন কাকরাইল মসজিদের খতিব ও তাবলিগের শুরা সদস্য মাওলানা জোবায়ের। নামাজ শেষে দুই হাত তুলে আল্লাহ তায়াআলার কাছে প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা।
এদিকে ফজরের নামাজের পর থেকেই লাখ লাখ মুসুল্লি স্রোতের মতো তুরাগ তীরে ইজতেমা ময়দানে জড়ো হতে থাকেন।
দুপুরে ইজতেমা প্রাঙ্গণে দেখা যায়, উত্তরা, গাজীপুর ও টঙ্গীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লাখো মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন। সকাল থেকেই সড়ক পথ, রেলপথ ও নৌপথসহ সব পথেই টঙ্গীর তুরাগ তীরে ঢল নামে মুসল্লিদের। দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে হয় জুমার আজান, ১টা ৪০ মিনিটে শুরু হয় জুমার খুতবা। দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে জুমার নামাজ শুরু হয়, শেষ হয় দুপুর ১টা ৫২ মিনিটে।
টঙ্গীর বিভিন্ন উঁচু ভবনের ছাদেও জুমার নামাজে শরিক হন মুসল্লিরা। বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহনে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিরা ইজতেমা মাঠের দিকে ছুটে আসেন। মাঠে স্থান না পেয়ে মুসল্লিরা মহাসড়ক ও অলিগলিসহ যে যেখানে জায়গা পেয়েছে সেখানে নামাজে শরিক হন। এর ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জুমার নামাজের আগে বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ইসমাইল গোদরা। ফজর নামাজের পর মাঠে আম-বয়ান করেন রায়বেন্ডের মাওলানা জিয়াউল হক। জুমার পর মাঠের মূলমঞ্চ থেকে বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ইসমাইল গোদরা। বাদ আসর বয়ান করেন মাওলানা যোবায়ের এবং বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা আহমদ লাট বয়ান করেন। বয়ান অনুবাদ করেন বাংলাদেশের মাওলানা উমর ফারুক।
আগামীকাল ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের ইজতেমা শেষ হবে। মাঝে চারদিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। আগামী ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার দুই পর্বের সমাপ্তি হবে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেছেন, ইজতেমা ময়দানে প্রচুর মানুষ আসছে; স্রোতের মতো। আইনশৃঙ্খলাসহ সবকিছু এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ ইজতেমা ময়দানে সমবেত হয়েছেন। আমরা প্রত্যাশা করছি, এরিয়াটা নিরাপত্তার চাদরে যেহেতু ঢেকে দিয়েছি, সুতরাং কোনোরকম কোনও অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটবে না।
গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় গাজীপুরের টঙ্গীতে তুরাগ নদীর তীরে ইজতেমা ময়দানের অলিম্পিয়া স্কুল মাঠ সংলগ্ন কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
জিএমপি কমিশনার বলেন, কোনও ধরনের নাশকতা, ছিনতাই ও রাহাজানির ঘটনা ঘটবে না বলে আমরা প্রত্যাশা করছি। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা যাতে আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন হতে পারেন, জুমার দিনে সবাই মিলে যেন শান্তিপূর্ণভাবে একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারি, সেদিকে লক্ষ্য রেখে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২ হাজারের মতো বিদেশি মেহমান ময়দানে এসেছেন। তিন শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে ইজতেমা মাঠ ঢেকে দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলার বিভিন্ন সংস্থা মিলে একযোগে কাজ করছি।
টঙ্গীতে তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে। গতকাল ফজর নামাজের পর পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হকের আমবয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমা শুরু হয়। উর্দুতে করা এই বয়ান বাংলাসহ কয়েকটি ভাষায় অনুবাদ করে শোনানো হয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমা শুরুর আগের দিন বৃহস্পতিবার থেকেই মুসুল্লির আগমনে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে ময়দান। মুসল্লিরা ময়দানে স্থান না পেয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ফুটপাত ও মাঠের আশেপাশের খোলা জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন।
এদিকে একদিন আগে বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর থেকেই প্রাথমিক আমবয়ান শুরু হয়। গতকাল শুক্রবার ফজরের নামাজের পর বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার মূল কার্যক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বিশিষ্ট আলেমগণ মূল বয়ান করেন। তাবলীগের ৬ উসুলের এ বয়ান রোববার আখেরি মোনাজাতের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত চলবে। বাংলাসহ বিভিন্ন ভাষা-ভাষীদের জন্য তাৎক্ষণিক তরজমা করা হয়। হেদায়তি বয়ান শেষে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে প্রথম পর্বের ইজতেমা শেষ হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।