মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, প্রেসিডেন্ট হিসাবে তার শেষ কার্যকালের ১২ বছর পর রোববার ৭৭ বছর বয়সে ফের ক্ষমতায় ফিরেছেন। লাতিন আমেরিকার বামপন্থী রাজনীতির ধারক লুলা ক্ষমতায় ফিরে তার সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হয়েছেন, একটি তিক্তভাবে বিভক্ত জাতিকে একত্রিত করা থেকে শুরু করে বিশ্বের বৃহত্তম রেইনফরেস্টের ধ্বংস রোধ করা এবং লাখ লাখ হতাশ দরিদ্র পরিবারের আয় বাড়ানো।
রোববার স্থানীয় সময় বিকেল তিনটার সময় তার অভিষেক অনুষ্ঠান শুরু হয়। অভিষেকের দিন সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর সমর্থকরা সহিংসতা সৃষ্টি করতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে দেশজুড়ে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিল। রাজধানী ব্রাসিলিয়াকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়। তবে শপথ অনুষ্ঠানে লুলার হাজার হাজার সমর্থক, অনেকেই ওয়ার্কার্স পার্টির লাল রঙের পতাকা নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন। লুলার প্রত্যাবর্তন উদযাপনের জন্য ওপেন-এয়ার কনসার্টেরও আয়োজন করা হয়।
ক্ষমতা গ্রহণ করার পরে লুলা বিভক্ত ব্রাজিলকে নতুন করে গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। দেশের সকল মানুষকে নিয়ে তিনি ব্রাজিলকে ‘পুনঃনির্মাণ’ করার ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে গত অক্টোবর মাসে ঐতিহাসিক তৃতীয় বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন লুলা। তার জয়ের ফলে লাতিন আমেরিকায় বামপন্থীদের শক্তিশালী উত্থানের আভাষ মিলেছে। শপথ গ্রহণের পর লুলা বলেন, ব্রাজিলের জন্য আমাদের বার্তা হচ্ছে ‘আশা ও পুনঃনির্মাণ’। তিনি বলেন, ‘এই জাতি যে অধিকার, সার্বভৌমত্ব এবং উন্নয়নের বিশাল স্থাপনা তৈরি করেছিল তা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পরিকল্পিতভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন এই স্থাপনাকে পুনঃনির্মাণ করার জন্য, আমরা আমাদের সমস্ত প্রচেষ্টা পরিচালনা করবো।’ একইসঙ্গে ব্রাজিলের দরিদ্র মানুষের জীবনকে আরও উন্নত করায় কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেয়ার পর তিনি বলেছেন, তিনি সংবিধানকে মেনে চলবেন এবং রক্ষা করবেন। তিনি তিন কোটি ৩০ লাখ মানুষকে ক্ষুধার হাত থেকে বাঁচাবেন। ১০ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যসীমার উপরে তুলবেন। বর্ণ ও লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে তার সরকার কাজ করবে বলে জানান ব্রাজিলের নতুন প্রেসিডেন্ট। পাশাপাশি আমাজন রেইনফরেস্টকে বাঁচাতে সেখানে গাছ কাছা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। অতি-দক্ষিণপন্থি বলসোনারো ব্রাজিলকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেন লুলা দা সিলভা। এখন ব্রাজিল ও আমাজনকে বাঁচিয়ে এই ক্ষতি সামাল দিতে চান তিনি। সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো জঙ্গল যথেচ্ছভাবে কেটে ফেলার পক্ষে ছিলেন। লুলা তার সম্পূর্ণ বিরোধী।
লুলা বলেছেন, বলসোনারো সরকার ব্রাজিলকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে। লুলার অভিযোগ, একেবারে শেষ দিকে বলসোনারো সরকারি টাকা নয়-ছয় করেছেন। তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পুরো অর্থ খরচ করে দিয়েছে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান. প্রযুক্তির ক্ষেত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা পরিবেশকে পুরোপুরি নষ্ট করার কাজ করেছে। স্কুলে খাবার, ভ্যাকসিন ও মানুষের নিরাপত্তার জন্য কোনো অর্থ রাখেনি। লুলা বলেছেন, করোনাকালে ছয় লাখ ৮০ হাজার মানুষ ব্রাজিলে মারা গেছেন। এটা হয়েছে বলসোনারো সরকার ঠিকভাবে ব্যবস্থা না নেয়ায়। তিনি জানিয়েছেন, কৃষির জন্য অ্যামাজনের জঙ্গল কাটার কোনো দরকার নেই। ব্রাজিলের পরিবেশগত যে শক্তি আছে, তা অন্য কোনো দেশের কাছে নেই।
লুলার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা ছিলেন। কিন্তু ছিলেন না সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। ঐতিহাসিকভাবে নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে সাবেক প্রেসিডেন্ট উপস্থি থাকেন। কিন্তু ব্রাজিলের সেই নীতি ভেঙে ক্ষমতা থাকতে থাকতেই যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন বলসোনারো। বর্তমানে তিনি ফ্লোরিডায় আছেন বলে জানা গেছে। অনুষ্ঠানে ছিলেন স্পেনের রাজা, জার্মানি, আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, চিলি, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে ও পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট। শপথের পর লুলা খোলা রোলস রয়েস চেপে প্রাসাদে যান। তাকে অভিনন্দন জানান ৩০ হাজারের মতো মানুষ। সূত্র: ওয়াল স্ট্রীট জার্নাল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।