Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামের দৃষ্টিতে দুস্থ ও আসহায় শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো ঈমানি দায়িত্ব

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ | প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

শস্য শ্যামলা ও সুজলা-সুফলা আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ দান। বাংলাদেশকে ষড়ঋতুর দেশ বলা হয়। ষড়ঋতুর এ দেশের পরিবেশ ও প্রকৃতি প্রতি বছর ছয়বার ভিন্ন ভিন্ন সাজসজ্জার রূপ ধারণ করে। বাংলাদেশকে ষড়ঋতুর দেশ বলা হলেও আপাতত বাস্তবে দু’টি ঋতু লক্ষ্য করা হয়। শীত ও গ্রীষ্মকাল। পবিত্র কুরআন মাজিদেও আল্লাহ তায়ালা শুধু দুটো ঋতুর কথা উল্লেখ করেছেন। তা হলো- শীত ও গ্রীষ্মকাল। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তাদের (কুরাইশ বংশের লোকদের) অভ্যাস ছিল শীত ও গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ’ (সূরা আল-কুরাইশ-০২)আর শীত শুধু প্রাকৃতিক নিয়মই নয়। এর মাঝে লুকায়িত মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ এবং এর মধ্যেও মহান আল্লাহর আনুগত্যের আহ্বান ধ্বনিত হয়।কেননা তিনি ইরশাদ করেন, যেহেতু আসক্তি আছে কুরাইশদের/ গ্রীষ্ম ও শীতকালে দূরে সফরের/ তারা করুক তবে তাঁর ইবাদত/ কাবার প্রভুর দেওয়া নির্ধারিত পথ (কাব্যানুবাদ, কুরাইশ : ০১-০৩)। এ শাশ্বত ঘোষণায় বোঝা যায় গ্রীষ্ম-শীত সবই মহান আল্লাহর হুকুম এবং সব অবস্থায় তাঁরই ইবাদত করা বান্দার কর্তব্য।
পৃথিবীর আহ্নিকগতির কারণে দিন-রাত্রি এবং বার্ষিকগতির প্রভাবে ঘটে ঋতুচক্রের পরিবর্তন। এর সবই কিন্তু হয় মহান আল্লাহর নির্দেশে। তিনিই রাতকে দিনে এবং দিনকে রাতে পরিবর্তন করেন, তিনি সূর্য ও চাঁদকে নিয়ন্ত্রণ করছেন; প্রত্যেকেই এক নির্দিষ্টকাল আবর্তণ করে। (সূরা ফাতির : ১৩)। ফলে বছর ঘুরে আসে শীত, গ্রীষ্ম ও বর্ষাকাল।গত কয়েকদিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন শীত জেঁকে বসেছে। হিমশীতল কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে দেশ। উত্তরাঞ্চলসহ অন্য জেলাগুলোতে হিমেল হাওয়া এবং শীতের প্রচ- দাপট ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় যাওয়া তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কারণে যেমন শীতের প্রকোপ বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে গরিব-দুঃখী মানুষের দুর্ভোগও।
কারণ, শীতকাল দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য ভীষণ কষ্টের। খাবারের চেয়েও তাদের শীত নিবারণ অতীব প্রয়োজন হয়ে পড়ে। শৈত্যপ্রবাহের কষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার ন্যূনতম ব্যবস্থাপনাও তাদের থাকে না। ফলে অসহায় ও হতদরিদ্রদের কষ্ট কেবল বেড়েই যায়। এছাড়াও শীতজনিত কারণে ছড়িয়ে পড়ছে নানা অসুখ-বিসুখ। তীব্র শীতে বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ অসহনীয় অবস্থায় পৌঁছে যায়। বেড়ে যায় শীতজনিত রোগের প্রকোপ। বৃদ্ধ ও শিশুদের মধ্যে জ¦র, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কোল্ড ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ে। ফুটপাত এবং খোলা আকাশের নিচে বসবাসকারীদের কষ্টের সীমা থাকে না। গরম কাপড় কেনার সামর্থ্য না থাকায় চা শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষেরা ভীষণ কষ্টে দিনযাপন করে।
বিভিন্ন স্থানে দেখা যাচ্ছে দরিদ্র মানুষেরা খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। শীত নিবারণের পোশাক এবং কম্বল-কাঁথার অভাবে অভাবী মানুষের কষ্টের যেন শেষ নেই। হাড়কাঁপানো শীত গরিব মানুষের জীবনকে অসহনীয় অবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এই শীতকাল গরিব-দুস্থ মানুষের জন্য ভীষণ কষ্টের। একবার কি আমরা ভেবে দেখেছি এই শীতে অসহায় গরিব বস্ত্রহীন কর্মঅক্ষম মানুষ কীভাবে রাত কাটাচ্ছেন? তাদের আমাদের মতো দামি গরম পোশাক তো দূরে থাক, সামান্য কাপড়টুকু নেই। ছোট ছোট বাচ্চারা এই তীব্র শীতে কত কষ্টে আছে। অনেকে শীতের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে মারাও যাচ্ছেন। তাই শীতের পোশাক ও কম্বল বিতরণের মাধ্যমে অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোর সময় এখনই।
আল্লাহর ইচ্ছায় প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে ঋতুর পালাবদল ঘটে। কনকনে হিমেল হাওয়া ও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দরিদ্র জনগোষ্ঠী-অধ্যুষিত অঞ্চলে বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং মানুষের অসহায়ত্বকে প্রকট করে তোলে। তাই শীতার্ত হতদরিদ্র মানুষের প্রতি সমাজের সামর্থ্যবান ও বিত্তশালী ব্যক্তিদের সাহায্য ও সহানুভূতির হাত সম্প্রসারিত করে তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে শীতবস্ত্র বিতরণ করে তাদের পাশে এসে দাঁড়ানো দরকার। নিঃস্বার্থভাবে শীতার্ত মানুষের সাহায্য ও সেবা করাই মানবতার সেবা। এমন মহৎ ও পুণ্যময় কাজই সর্বোত্তম ইবাদত। অসহায় মানুষকে দুর্দিনে সাহায্য, সহানুভূতি ও সহমর্মিতার মানসিকতা যাদের নেই, তাদের ইবাদত আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।
সুতরাং নামাজ, রোজার সঙ্গে জনকল্যাণের তথা মানবিকতা ও নৈতিকতার গুণাবলি অর্জন করাও জরুরি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘পূর্ব ও পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফেরানোতে কোনো পুণ্য নেই, কিন্তু পুণ্য আছে কেউ আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতাগণ, সব কিতাব ও নবীর প্রতি ইমান আনয়ন করলে এবং আল্লাহ-প্রেমে আত্মীয়স্বজন, এতিম, মিসকিন, পর্যটক, সাহায্যপ্রার্থীদের ও দাস মুক্তির জন্য অর্থ দান করলে, নামাজ প্রতিষ্ঠা করলে, জাকাত দিলে, প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূর্ণ করলে; অর্থসংকটে, দুঃখ-ক্লেশে ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য ধারণ করলে। এরাই তারা, যারা সত্যপরায়ণ এবং তারাই মুত্তাকি।’ (সূরা আল-বাকারা : ১৭৭)।
সমাজের সংগতিসম্পন্ন ও সচ্ছল মানুষের ঘরে বছর পরিক্রমায় শীতকাল ঋতু হিসেবে আনন্দ ও খুশির বার্তাবহ হলেও দেশের বৃহত্তর জনজীবনে শীত নৈরাশ্য ও বেদনার ধূসর বার্তাবাহক মাত্র। হাড়কাঁপানো শীত ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত জনজীবনে শৈত্যপ্রবাহ থেকে বাঁচার জন্য অসহায় দরিদ্র মানুষের প্রয়োজন অনেক শীতবস্ত্রের। শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে হলেও প্রয়োজন সুচিকিৎসা ও ওষুধপথ্য এবং শীত মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারিভাবে কার্যকর উদ্যোগ। বিশেষ করে শিশুরা গণহারে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের সুচিকিৎসার ব্যাপারে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নিলে শীতের দুর্ভোগ যেমন বাড়বে, তেমনি শীতজনিত মৃত্যুর হারও বাড়বে। তাই জাতি-ধর্ম-বর্ণ, দলমত-নির্বিশেষে সমাজের ধনাঢ্য ও বিত্তবান ব্যক্তিদের শীতার্ত বস্ত্রহীন মানুষের পাশে অবশ্যই দাঁড়াতে হবে। নবী করিম (সা.) মানুষকে অন্ন ও বস্ত্রদানের পরকালীন পুরস্কারপ্রাপ্তির কথা বলেছেন, ‘এক মুসলমান অন্য মুসলমানকে কাপড় দান করলে আল্লাহ তাকে জান্নাতের পোশাক দান করবেন। ক্ষুধার্ত অবস্থায় খাদ্য দান করলে আল্লাহ তাকে জান্নাতের সুস্বাদু ফল দান করবেন। কোনো মুসলমানকে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় পানি পান করালে আল্লাহ তাকে জান্নাতের সিলমোহরকৃত পাত্র থেকে পবিত্র পানি পান করাবেন।’ (আবু দাউদ)।
শীতবস্ত্র ও গরম কাপড়ের অভাবে যে অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের মধ্য দিয়ে শীতার্ত ব্যক্তিদের দিন কাটছে- এ অবস্থার শিগগিরই অবসান ঘটাতে হবে। শীতের প্রভাবে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। যারা শীতজনিত রোগব্যাধিতে ভুগছে, তাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ওষুধপথ্য ও সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করা একান্ত প্রয়োজন। যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই, তাদের দুরবস্থা যে সর্বাধিক, সে কথা বলাই বাহুল্য। বিত্তবান মানুষ শীতবস্ত্র ব্যবহার করে পরিত্রাণ পেলেও দরিদ্র লোকেরা শীতবস্ত্রের অভাবে সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছে। হাড়কাঁপানো শীতে যে বিপুল জনগোষ্ঠী বর্ণনাতীত দুঃখ-কষ্টে-অনাহারে ও অর্ধাহারে দিন যাপন করছে, তাদের পাশে দাঁড়ানো ধর্মপ্রাণ মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। নবী করিম (সা.) অসহায় মানুষকে সাহায্যের কথা বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব একটি মুসিবত দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার মুসিবতগুলো দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো অভাবী মানুষকে সচ্ছল করে দেবে, আল্লাহ তাকে ইহকাল ও পরকালে সচ্ছল করে দেবেন এবং আল্লাহ বান্দাকে সাহায্য করবেন, যদি বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্য করে।’ (মুসলিম)।
ক্রয়ক্ষমতার বাইরে শীতার্ত ব্যক্তিরা না পারে পেট ভরে খাবার খেতে, না পারে কোনো অসুখ হলে চিকিৎসা করাতে। রাতের বেলায় দেখা যায় কীভাবে, কেমন করে শীতবস্ত্রবিহীন মানুষ কষ্টে রাত যাপন করছে। তাদের নেই কোনো শীত নিবারণ করার সম্বল। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে শীতের তীব্রতায় দুস্থ, নিঃস্ব, ছিন্নমূল, গরিব, দুঃখী, বস্ত্রাভাবী শিশু, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ নিদারুণ কষ্ট পায়। তাই সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিরা যদি ইচ্ছা করেন, তাঁদের নিজ নিজ জেলার শীতার্ত অসহায় গরিব-দুঃখী মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে পারেন। হাদিস শরিফে উল্লেখ আছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দুনিয়ায় মানুষকে খাদ্য দান করেছে, সেদিন (রোজ কিয়ামতের দিন) তাকে খাদ্য দান করা হবে। যে আল্লাহকে খুশি করার জন্য মানুষকে পানি পান করিয়েছে, তাকে সেদিন পানি পান করিয়ে তার পিপাসা দূর করা হবে। যে মানুষকে বস্ত্র দান করেছে, তাকে সেদিন বস্ত্র পরিধান করিয়ে তার লজ্জা নিবারণ করা হবে।’ সুতরাং প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মানুষেরই পারস্পরিক মানবতাবোধ ও উদার মানসিকতা থাকা অপরিহার্য। একজন মানুষ বিপদে পড়লে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অসহায় হলে তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করা সমাজের বিত্তবান প্রতিবেশীদের ইমানি দায়িত্ব ও মানবিক কর্তব্য।
পরিশেষে বলতে চাই, সব মানুষের উচিত সমগ্র সৃষ্টির প্রতি দয়া-মায়া, অকৃত্রিম ভালোবাসা, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও সহানুভূতি বজায় রাখা। শীতার্ত গরিব-দুঃখী মানুষের সামান্য উঞ্চতার ব্যবস্থা করে দিলে আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই এর উপযুক্ত বদলা দেবেন। কারণ বান্দার দুঃখ-দুর্দশায় কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি দেন।আর শীতের তীব্রতা খুব বেশি বেড়ে গেলে কিংবা টানা শৈত্যপ্রবাহ থাকলে আমরা শীতবস্ত্র বিতরণের প্রয়োজন অনুভব করি। দান করার ইচ্ছা থাকলে শীতের শুরুতেই অসহায়দের শীত উপকরণ পৌঁছে দেওয়া উচিত। এতে শীতার্তদের কষ্ট লাঘব হয়। তা ছাড়া হাদিসে যথা সময়ে দ্রুত দান করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক সাহাবি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! কোনো দানে সওয়াব বেশি পাওয়া যায়? তিনি বলেন, সুস্থ ও কৃপণ অবস্থায় তোমার দান করা, যখন তুমি দারিদ্র্যের আশঙ্কা করবে ও ধনী হওয়ার আশা রাখবে। দান করতে এ পর্যন্ত বিলম্ব করবে না, যখন প্রাণবায়ু কণ্ঠাগত হবে, আর তুমি বলতে থাকবে, অমুকের জন্য এতটুকু, অমুকের জন্য এতটুকু, অথচ তা অমুকের জন্য হয়ে গেছে।’ (বুখারি : ১৪১৯)। আল্লাহ আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->