পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নারায়ণগঞ্জের জেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিটের শুনানি আজ
মালেক মল্লিক : আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আইনি জটিলতা ও শঙ্কা দিন দিন বেড়েই চলছে। ইতোমধ্যে দু’টি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে জেলা পরিষদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন উচ্চ আদালত। এছাড়া গতকাল সাতক্ষীরার দু’টি ইউনিয়নের ভোটার তালিকা দুই মাসের জন্য স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত। নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ও ভোটার তালিকা স্থগিত চেয়ে রিটের শুনানি আজ বুধবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে ২০০০ সালে আবেদনে একটি আবেদনের শুনানি শেষে রুল জারি করা হয়। বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। এদিকে আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনকে জটিলতায় শঙ্কা দেখছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। তবে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ সুজনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে কোনো আইনি জটিলতা নেই। আগামী ২৮ ডিসেম্বর সারা দেশের পার্বত্য তিনটি জেলা ব্যতিত ৬১ জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন। কিন্তু নির্বাচন তো আর স্থগিত করেনি। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে কোনো আইনি জটিলতা নেই বলে মতামত দেন তিনি। তিনি আরো বলেন, আর যদি নির্বাচনের পর রায় আসে, তাহলে এটা আবার আপিল হবে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ইনকিলাবকে বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের কয়েকটি ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে আদালত কর্তৃক এ নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা হতে পারে।
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার জেলা নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের জটিলতা সৃষ্টির আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তিনি বলেছেন, জেলা পরিষদের আইনের ৪ (২), ১৭ ও সংশোধিত আইনের ৫ ধারা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। দেখা যাচ্ছে যে, রুলের জবাব দেয়ার নির্ধারিত তারিখের পূর্বেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর যদি এই রিটের রায়ে নির্বাচনী তফসিল বা পরোক্ষ ভোটের বিধান অবৈধ ঘোষণা করা হয়, তবে আর এক ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রিটকারীর আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ ইনকিলাবকে বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন আইনি জটিলতায় মধ্যে রয়েছে। আমি মনে করি, সরকারের উচিত নির্বাচন ডিসেম্বর না করা।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ নভেম্বর ৬১ জেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। রিটে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক দাবি করে জেলা পরিষদ আইনের তিনটি ধারা চ্যালেঞ্জ করা হয়। রিট আবেদনকারীর, সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে প্রশাসন পরিচালিত হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধির বিষয়ে সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদেও বলা আছে। অথচ ২০০০ সালের জেলা পরিষদ আইনের ৪(২) ও ১৭ ধারা সংবিধানের ওই দুই অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানে আছে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি বাছাইয়ের কথা। অথচ জেলা পরিষদের ওই ধারায় আছে একটি নির্বাচকম-লী গঠন হবে। এখানে জনগণের অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। ওই আইনে ২০১৬ সালে ধারা ৫ সংশোধনী আনা হয়, রিট আবেদনে এটিও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বিবাদী করা হয়। পরবর্তীতে হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন। এরপর আরো একটি রিটের শুনানি নিয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের বেঞ্চ। একই সঙ্গে রুলে জেলা পরিষদ আইন-২০০০ এর ৪(২) ও ১৭ নম্বর ধারা এবং জেলা পরিষদ সংশোধিত আইন-২০১৬ এর ৫ নম্বর ধারা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
এর আগে জেলা পরিষদ আইন-২০০০ এর ৪(২) ও ১৭ নম্বর ধারা এবং জেলা পরিষদ সংশোধিত আইন-২০১৬ এর ৫ নম্বর ধারার বেধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। রিট আবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ১১ ও ৫৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনগণের সরাসরি ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে হবে। কিন্তু জেলা পরিষদ আইনের ৪, ৫ ও ১৭ ধারা অনুযায়ী জেলা পরিষদের প্রশাসকরা নির্বাচিত হচ্ছেন প্রতিনিধিদের ভোটে, যা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ নিয়ে জেলা পরিষদ আইন নিয়ে হাইকোর্ট পৃথক তিনটি রিট আবেদনে রুল জারি করলেন। এর আগে ২০০০ সালে রুল জারি করা হয়।
সাতক্ষীরার দুই ইউনিয়নের ভোটার তালিকা হাইকোর্টে স্থগিত, চেম্বারেও বহাল : জেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য করা সাতক্ষীরার শ্যামনগরের রমজাননগর ও কৈখালী ইউনিয়নের ভোটার তালিকার ওপর এ স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্টের বেঞ্চ। এরপর গতকাল মঙ্গলবার চেম্বারেও ওই দুই ইউনিয়নের ভোটার তালিকার স্থগিতাদেশ বহাল থাকে। জেলা পরিষদ নির্বাচনে শ্যামনগর উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ভোটার তালিকা স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশে স্থগিতাদেশ দেননি চেম্বার বিচারপতি মো: নিজামুল হক। দুই ইউনিয়নের ভোটার তালিকা স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল রইল বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী।
স্থগিত চেয়ে রিট : নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ও ভোটার তালিকা স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট আজ বুধবার শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারীর আইনজীবী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।