চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
প্রশ্ন : ফরজ নামাজের সেজদায় গিয়ে দোয়া করা যাবে কি?
উত্তর : ফরজ নামাজের সেজদায় গিয়ে তাসবীহ পড়া সুন্নত। নির্ধারিত দোয়া ও তাসবীহ পড়াই বিধেয়। ইচ্ছামত দোয়া করা ফরজ নামাজে নিষিদ্ধ। সুন্নাহ অনুযায়ী মুজতাহিদগণ যেভাবে নামাজ সাজিয়েছেন, তাতে বাড়তি কিছু করার সুযোগ নেই। নফল নামাজে বিশেষ করে শেষ রাতের তাহাজ্জুদে অনেক দোয়া দুরুদ সেজদারত অবস্থায়ও করা যায়। হাদীসে যেসব বর্ণনা আছে, তা খুব বড় আলেম ও মুহাক্কেক ব্যক্তিদের কাজ। সাধারণ মানুষের প্রচলিত পদ্ধতিতেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। তা না হলে মুস্তাহাব বা জায়েজ আমল করতে গিয়ে, তারা নিয়ম ভেঙ্গে ফেলবেন। তাতে নামাজ নষ্ট হওয়ারও আশংকা থেকে যায়।
প্রশ্ন : আমি মুসাফির অবস্থায় এমন জায়গায় গিয়ে পৌছলাম যেখানে জুম্মার নামাজ হবে, আমি কি সেই জামাতের ইমামতি করতে পারবো?
উত্তর : পারবেন। কেননা, জোহর আপনার ওপর ফরজ। জুমাও জোহরেরই অন্যরূপ। নামাজও দু’রাকাত। সুতরাং মুসাফির ব্যক্তি স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে জুমা পড়তে পারেন।
প্রশ্ন : মহিলাদের কণ্ঠের পর্দার হুকুম কি? যেসমস্ত প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা শিল্পীদের কিরাত, তেলাওয়াত, ইসলামী সংগীতের অডিও পাওয়া যায় সেগুলো পুরুষের জন্য শ্রবণ করা বৈধ কিনা? বর্তমানে মহিলাদের ওয়াজও পাওয়া যায়, পুরুষের জন্য এগুলো শ্রবণকরা বা মহিলাদের এরকম ওয়াজ করা শরয়ী দৃষ্টিতে বৈধ কিনা জানতে চাই। যদি অবৈধ হয় তাহলে এগুলো শ্রবণকারী ইমামের পিছনে ইকতেদা করা যাবে কিনা?
উত্তর : মহিলাদের কণ্ঠেরও পর্দা আছে। বিশেষ প্রয়োজনে পর পুরুষের সাথে কথা বলার পদ্ধতি এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে শিক্ষা দিয়েছেন। যেখানে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে যদি কথা বল, তাহলে আকর্ষণহীন ভাষায় কাটাকাটা কথা বলবে। নরম ও ললিত ভাষায় কথা বলো না। এতে যেসব পুরুষের মনে রোগ আছে (পরনারীর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ার মত ব্যক্তিদের রোগী বলা হয়েছে) তারা অকারণেই ফেতনায় পতিত হতে পারে। যার দায় আকর্ষণকারীনী নারীকেও নিতে হবে। সুতরাং নারীর কণ্ঠও একরকম পর্দার আওতায় চলে এসেছে। নারীরা নারী মহলে আলোচনা বা ওয়াজ করতে পারে। কিন্তু পুরুষ মহলে পর্দার আড়াল থেকেও তারা কেরাত, হামদ-না’ত বা ওয়াজ নিঃশর্তভাবে করতে পারে না। অল্প বয়সী বালিকারা যারা এখনও প্রকৃতই শিশু রয়েছে, তারা এসব পরিবেশন করতে পারে। যাদের ওপর এখনও পর্দা ফরজ হয় নি। নারীদের কেরাত, না’ত বা ওয়াজের রেকর্ড পরিচ্ছন্ন অন্তরের বয়সী ব্যক্তিত্ববান ও দায়িত্বশীল পুরুষের জন্যও ফেতনা থেকে মুক্ত নয়। সাধারণভাবে তরুণ, যুবকসহ সব পুরুষের জন্য কীভাবে নিরাপদ হতে পারে। এর মধ্য থেকে দিলের খাহেশাত পূরণের নিয়ত না থাকলেও অনিচ্ছাকৃত ভালো লাগাটুকু যে একসময় গুনাহের পর্যায়ে চলে যাবে না, তার নিশ্চয়তা কি? সুতরাং এটি নাজায়েজ বিষয়ের মতোই এড়িয়ে চলতে হবে। ইমাম সাহেবও এর বাইরে নন। তবে, এজন্য যেমন কোনো মুসল্লির নামাজ অশুদ্ধ হবে না, ইমাম সাহেবেরও ইমামতি অশুদ্ধ হবে না। গুনাহকে গুনাহ ভেবে করলে তা ছাড়ার বা তওবা করার সুযোগ থাকে। আর গুনাহকে গুনাহ মনে না করলে ঈমানের মধ্যেও ঘাটতি দেখা দেয়। মাসআলা সবার জন্যই, তবে অধিক সতর্কতা অবলম্বনকারী অধিক নিরাপদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।