বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকু- থেকে : সীতাকু-ে আনুমানিক ১০ লাখ টাকার চোরাই সেগুন কাঠভর্তি একটি কাভার্ড ভ্যানসহ তিন কাঠ পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল (রোববার) সকালে বারোআউলিয়া হাইওয়ে থানা পুলিশ কাঠসহ পাচারকারীদের হাতেনাতে আটক করে। এদিকে দীর্ঘ দিন পর কাঠ পাচারকারীদের নিরাপদ এ রুটে একটি চালান আটক হলেও প্রতিদিন আরো বেশ কিছু চোরাই কাঠবাহী গাড়ি এ পথে অনায়াসে যাতায়াত করছে বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট বনবিট কর্মকর্তাদের ভূমিকাও রহস্যজনক বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকু- উপজেলা এখন চোরাই কাঠ পাচারের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে। এ পথে প্রতিদিনই খাগড়াছড়ি, রাউজান, রাঙামাটি, বান্দরবানসহ বিভিন্ন পার্বত্য এলাকা থেকে বন উজাড় করে বিপুল পরিমাণ মূল্যবান কাঠ পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এসব কাঠ পাচারকারী চক্রের সাথে উপজেলার মাদামবিবিরহাটে অবস্থিত বনবিট কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকায় যাতায়াতের পথে পাচারকারীরা সেখানে গাড়ি থামিয়ে কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করে যান। আর এ দেখা সাক্ষাতের পর চোরাই কাঠ ভর্তি গাড়িগুলোর বিরুদ্ধে আর কোনো অভিযোগ থাকে না কর্মকর্তাদের। ফলে সেগুলো অনায়াসে পার হয়ে গন্তব্যের পথে পাড়ি জমায়। এভাবে প্রতিদিন অনায়াসে কোটি কোটি টাকার কাঠ পাচার করে বনদস্যু চক্র।
অভিযোগ রয়েছে, মহাসড়কে দায়িত্বরত পুলিশও এ বিষয়ে অনেকটাই নীরব। কাঠবাহী গাড়িগুলো কোনো পুলিশ অফিসারের সামনে পড়লে তারাও ম্যানেজ হয়ে গাড়িগুলো ছেড়ে দেন। ফলে এ রুটে চোরাই কাঠ আটকের সাফল্য নেই বললেই চলে। যা মহাসড়কের মাদামবিবিরহাটে অবস্থিত বনবিটের একমাত্র চেকপোস্টটির কার্যক্রমের অবস্থা খতিয়ে দেখলেই বোঝা যায়। এলাকাবাসীর কাছে তাদের এসব অনিয়মের কথা জেনে একাধিকবার ওই বিট অফিসে গিয়ে কয়েক মাসে তারা কী পরিমাণ কাঠ আটক করেছেন বা চোরাই কাঠ উদ্ধারে কি ভূমিকা রেখেছেন তা জানতে বারবার তথ্য চাইলেও তারা বারবার সময় নিয়েও কোনো তথ্য বা পরিসংখ্যান দিতে পারেননি। শুধু তাই নয়, নিজেদের দুর্বলতার কারণে দায়িত্বশীল কর্মকর্তার চেয়ারে বসে থেকেও নিজেদের নাম পরিচয়ও দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে একে অন্যের দোহাই দেন তারা।
চেকপোস্টের আশপাশের দোকানীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ অফিসের কর্মকর্তারা কাঠ বোঝাই ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান বা অন্য কোনো গাড়ি পেলেই সেটি রাস্তার পাশে আটক করে রেখে গাড়ি চালক বা পাচারকারীদের ডেকে অফিসের ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে আপোষরফা শেষে গাড়িটি ছেড়ে দেয়া হয়। ফলে শুধু ব্যক্তি বিশেষের পকেট ভরলেও তাদের সাফল্যের খাতায় লেখার মতো তথ্য অবশিষ্ট থাকে না। তবে মাঝেমধ্যে হিসাবে না মিললে দু’য়েকটি গাড়ি ও কাঠ আটক হতে শোনা যায়। সেসব নিয়েও নানান গুঞ্জন রয়েছে এলাকায়। কাঠ নিয়ে বারোআউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের ভূমিকাও নিয়েও নানান প্রশ্ন রয়ে গেছে। যদিও মাঝে মধ্যে তারা দুয়েকটি গাড়ি আটক করে তারা নিজেদের কাঠ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রমাণের চেষ্টা করেন। তেমনি এক অভিযানে (রোববার) কাঠভর্তি একটি কাভার্ড ভ্যান (নং ঢাকা মেট্টো ট-১৮-১৩৮৬) আটক করে বারোআউলিয়া হাইওয়ে পুলিশ। বারোআউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি মো: ছালে আহমদ পাঠান প্রতিবেদককে বলেন, রোববার সকালে ওই কাভার্ড ভ্যান ভর্তি চোরাই সেগুন কাঠ পাচারকালে হাইওয়ে পুলিশ গাড়িসহ কাঠগুলো আটক করে। একই সাথে আটক করা হয় তিন কাঠ পাচারকারীকেও। আটক পাচারকারীরা হলোÑ জয়নাল (২৬), মোরশেদ (২০) ও মহিন উদ্দিন (২৪)। ওই কাভার্ড ভ্যান যোগে রাউজানের গহিরা এলাকার বাসিন্দা মো: নাজিম উদ্দিন আনুমানিক ১০ লাখ টাকা মূল্যের কাঠগুলো পাচার করছিলেন। তারা কাঠ, তিন আসামি ও আটক গাড়িটি থানায় সোপর্দ করেছেন বলে জানান। সীতাকু- থানার ওসি (তদন্ত) মো: মোজাম্মেল হক প্রতিবেদককে বলেন, বারোআউলিয়া হাইওয়ে থানার সদস্যরা আটক সেগুন কাঠ ও আসামিদের ব্যাপারে একটি মামলা করতে থানায় এসেছেন। মামলাটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।