পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা আজ রোববার। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বেলা ২টার এই জনসভাকে ঘিরে পলোগ্রাউন্ডসহ পুরো নগরীতে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। জনসভায় ব্যাপক লোকসমাগমের প্রস্তুতি শেষ করেছেন নেতারা। তাদের প্রত্যাশা জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নেবে।
দীর্ঘ ১০ বছর নয় মাস পর পলোগ্রাউন্ডে জনসভায় বক্তব্য দেবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। তিনি তার ভাষণে আগামী দিনের রাজনীতি ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনিদের্শনা দেবেন বলে দলের নেতারা জানিয়েছেন। সেইসাথে শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এবার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গিকার ঘোষণা করতে পারেন বলেও জানা গেছে। তিনি চট্টগ্রামে ছোট বড় আরো ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন আজ। যশোরের জনসভার মত চট্টগ্রামের এ জনসভায়ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নৌকায় ভোট চাইবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস, বিদ্যুৎ সঙ্কটের প্রতিবাদ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির চলমান বিভাগীয় গণসমাবেশ শুরু হয়েছিল এ পলোগ্রাউন্ড থেকে। অনেকটা পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে একই ভেন্যুতে দলীয় প্রধানের জনসভা আহ্বান করে আওয়ামী লীগ। আর তাই জনসভার বিশালতার দিক থেকে বিএনপির মহাসমাবেশকে ছাড়িয়ে যাওয়াকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন এখানকার নেতারা। প্রায় এক মাস ধরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়। মহানগর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামেও চলে জনসভার প্রচার।
গতকাল শনিবার কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা শেষবারের মত জনসভাস্থল পরিদর্শন করেন। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জনসভার বাইরেও ৮ থেকে ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে। প্রধানমন্ত্রীর এ জনসভা বিএনপির মহাসমাবেশের চেয়ে কয়েকগুণ বড় হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। অপর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উলম আলম হানিফ বলেন, এটি হবে স্মরণকালের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ জনসভা। শুধু পলোগ্রাউন্ড নয় জনসভাকে ঘিরে পুরো চট্টগ্রামে জনসমুদ্র হবে।
এই জনসভার বর্ণিল ভেন্যু প্রস্তুত। সেখানে নৌকা আকৃতির তিন হাজার ৫২০ বর্গফুট বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। নান্দনিক সৌন্দর্যে ভরপুর নৌকার আদলে তৈরি মঞ্চে বসতে পারবেন ২০০ জন নেতা। মঞ্চকে ঘিরে প্রায় এক বর্গকিলোমিটার এলাকায় কয়েকশ’ মাইক লাগানো হয়েছে। জনসভা সরাসরি সম্প্রচার করতে আশপাশে বসানো হয়েছে সাতটি বড় পর্দা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার স্থলকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে সাড়ে সাত হাজার পুলিশ। আজ সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নগরীর কয়েকটি সড়কে যানবাহন চলাচল সীমিত ও বন্ধ থাকবে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উন্মুখ হয়ে আছেন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রী যেসব এলাকা দিয়ে জনসভাস্থলে পৌঁছাবেন এবং জনসভা শেষ করে ফিরে যাবেন সেসব এলাকাকে নান্দনিকভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, দেওয়াল লিখন, আলোকসজ্জা ও তোরণ নির্মাণসহ নানা সাজসজ্জায় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে মহানগরী।
এর আগে ২০১২ সালের ২৭ মার্চ পলোগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট আয়োজিত সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সর্বশেষ বিগত ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নগরীর পতেঙ্গায় বঙ্গবন্ধু টানেলের বোরিং কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এক সুধি সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। দীর্ঘদিন পর সশরীরে জনগণের সামনে আসছেন তিনি। তাই তার এই জনসভাকে ঘিরে সর্বমহলে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন সামনে রেখে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে মাঠে নেমেছে বিএনপিসহ বিরোধী দল। এ অবস্থায় রাজনীতির ময়দান এখন উত্তপ্ত। এ প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবেলা এবং সেইসাথে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ফের বিজয়ী করার লক্ষ্যে নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন।
গতকাল ময়মনসিংহে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মহাসমাবেশ কাকে বলে সেটি চট্টগ্রামের জনসভায় দেখা যাবে। ওই সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, তার পক্ষ থেকে আমি আজ এ বার্তা দিয়ে গেলাম। এর আগে ২৬ নভেম্বর কর্ণফুলীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের পূর্ত কাজের সমাপনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, গত নির্বাচনে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে অঙ্গীকার তা শতভাগ সফল হয়েছে। আগামী নির্বাচনে অঙ্গীকার হবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া। তিনি নির্বাচনী ইশতিহারে বিষয়টি সংযুক্ত করতে দলীয় সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
দলের নেতারা জানান, প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে উন্নয়নের বিষয়টি অগ্রাধিকার দেবেন। বিগত ১৪ বছরে চট্টগ্রামে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কাজ এখনো চলছে। মেট্রোরেল, কালুরঘাট সেতুসহ বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা দিতে পারেন তিনি। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে বন্দরনগরীতে আসবেন তিনি। এরপর জনসভায় ভাষণ দেবেন এবং ৩০টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। জনসভা শেষে বিকেলে ঢাকায় ফিরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী।
জনসভা সফলে খতমে কোরআন : শেখ হাসিনার জনসভা সফল করতে মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গতকাল বাদ আছর কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদে খতমে কোরআন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মো. ইকবাল হাসান, আসিফ খান, সৈয়দ মোহাম্মদ জাকারিয়া, হাজী মোহাম্মদ হাসান প্রমুখ। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।