Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনির গুরুত্ব ও তাৎপর্য : একটি পর্যালোচনা

মো. হাসিম আলী

| প্রকাশের সময় : ৩ ডিসেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

‘আল্লাহু আকবার’ অর্থ আল্লাহ মহান। ‘আল্লাহু আকবার’ পৃথিবীতে উচ্চারিত শ্রেষ্ঠতম তাসবিহ, পবিত্রতম যিকির এবং বরকতময় এক মহান কালিমা। এটি সর্বোৎকৃষ্ট ধ্বনি এবং সর্বশ্রেষ্ঠ স্লোগান। এর সমতুল্য কোনো ধ্বনি কিংবা স্লোগান পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। এ স্লোগানের ভেতর লুকিয়ে আছে স্রষ্টার পরিচয়, তাঁর বড়ত্ব এবং মহত্ব। এর মধ্যে আরো লুকিয়ে আছে অমিততেজ, অসীম বিক্রম, অপরিসীম সাহস, অজেয় শক্তি এবং অদৃশ্য যাদু। এ ধ্বনির যাদু স্পর্শে ভীরুরা পরিণত হয় বীরে , কাপুরুষেরা পরিণত হয় অকুতোভয় সৈনিকে। এ ধ্বনির পরশে বৃদ্ধরা পরিণত হয় টগবগে তরুণে, আর তরুণরা অগ্নিস্ফূলিঙ্গে। আল্লাহ তা‘য়ালাই একমাত্র সর্বশ্রেষ্ঠ এবং মহান সত্তা। শক্তি, সামথ্য কিংবা সম্মান কোনো দিক থেকেই তাঁর চেয়ে বড়, মহৎ, শ্রেষ্ঠ কেউ নেই। তাই একজন মুসলিমের কাছে ‘আল্লাহু আকবার’ এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ ধ্বনি, প্রিয় বাক্য এবং প্রিয় শ্লোগনা কোনো কিছইু হতে পারে না। ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবীর দেয়া রাসূল সা.-এর সুন্নাত, সাহাবাদের আমল। তাদের তাকবীর ধ্বণিতে কাফির-মুশরিকদের অন্তর-আত্মা থর থর করে কেঁপে উঠতো। সহিহ বুখারীর বর্ণনায় আছে, আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূল সা. অতি সকালে খায়বার প্রান্তরে প্রবেশ করেন। সে সময়ে ইহুদিরা কাঁধে কোদাল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। তারা যখন তাকে দেখতে পেল, তখন বলতে লাগলো- মুহাম্মদ সেনাদলসহ আগমন করেছেন, মুহাম্মদ সেনাদলসহ আগমন করেছেন। ফলে তারা দূর্গে ঢুকে পড়ল। তখন আল্লাহর রাসূল সা. তার উভয় হাত তুলে বললেন, ‘আল্লাহু আকবার, খায়বার ধ্বংস হোক।’ (বুখারি)।
‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি আল্লাহ তা‘য়ালার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম এবং অফুরন্ত সওয়াবের ভান্ডার। বিপদে-মুসিবতে, খুশি-আনন্দে, সফরে-সমরে সর্বাবস্থায় মুমিন ব্যক্তি ‘আল্লাহু আকবার’ বলে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করবেন। এটিই ইমানের দাবি। এ ধ্বনি উচ্চারণের মাধ্যমে মুমিন ব্যক্তি তার প্রভুর প্রতি বিশ্বাসের প্রকাশ ঘটান এবং প্রভুর সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলেন। যে মুমিনের অন্তরে তাকবীরের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব যতো বেশি হবে, তার ইমানের প্রভাব ততো বেশি প্রতিফলিত হবে। তাই আল্লাহর নাম ব্যতীত কিংবা আল্লাহর নামের মোকাবেলায় অন্যের নামে ধ্বনি তোলা বা শ্লোগান দেয়া স্পষ্টত: আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করার শামীল। আল্লাহ তা‘য়ালা স্বয়ং তাঁর বড়ত্ব ও মহত্ব ঘোষণার নির্দেশ দিয়ে বলেন: ‘তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর।’ (সূরা মুদ্দাস্সির : ৩) তিনি আরো বলেন: ‘আর সসম্ভ্রমে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর।’ (সূরা বনি ইসরাইল: ১১১)। হযরত উমার রা. বলেন: ‘আল্লাহু আকবার’ দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ বাক্য (তাফসিরে কুরতুবি)।
‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনিকে অবলম্বন করে কবিরা পেয়েছেন কবিতার ভাষা, বীরেরা পেয়েছেন শৌর্য-বীর্য, ভীরুরা পেয়েছেন সাহস-শক্তি। ইতিহাস সাক্ষী, এ ধ্বনির যাদুস্পর্শে ভীরু-কাপুরুষ, আত্মভোলা ঘুমন্ত জাতির প্রতিটি সন্তান পরিণত হয়েছে নরশার্দুলে। এ ধ্বনিই যুগে যুগে মুসলমানদের বিশ্ব জয়ের সাহস, শক্তি ও প্রেরণা এবং মন্ত্রণা দিয়েছে। এ ধ্বনির কারণেই বিশ্বব্যাপী কালিমার পতাকা পত পত করে উড়েছিল। এ ধ্বনির কারণেই কালজয়ী জীবনাদর্শ ইসলামের পদচুম্বন করতে বাধ্য হয়েছিল সমগ্র বিশ^। বিশ্ববাসী আজও ভুলে যাননি বদর, উহুদ, খন্দক, তাবুক, মুতা, ইয়ারমুক, কাদেসিয়া আর ইয়ামামার প্রান্তরের তাকবীর ধ্বনির কথা। নিযূত-কোটি কোটি হৃদয়ে আজও ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয় আবু বকর, উমার , উসমান, আলী, জুবায়ের, খাব্বাব, খুবাইব, খালিদ, খাল্লাদ, খাওলা, সাফিয়্যা, হিন্দা (রা.), তারিক বিন যিয়াদ, মুসা বিন নুসাইব, মুখতার সাকাফি, সালাহউদ্দিন আইয়ুবী, শাহজালাল, শাহ মাখদুম, শাহ তুরকান, শাহ সুলতান বলখী, শরিয়তুল্লাহ, তিতুমীর, শাজারাতুদ্দুর, মুসকান খান-এর মতো বীর-বীরাঙ্গনাদের তাকবীর ধ্বনি।
‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি শয়তান ও তার দোসরদের অন্তরে জ্বালা-পোড়া সৃষ্টি করে এবং তাদের পলায়নপরায়ণতাকে বৃদ্ধি করে। একবর্ণনায় বসনিয়া যুদ্ধে মুজাহিদদের অবস্থানের কথা এভাবে তুলে ধরা হয়েছে, ‘যখন মুজাহিদরা ময়দানে আসতেন এবং ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি উচ্চারণ করতেন। আল্লাহর শপথ! তখন বিপুল পরিমাণে যুদ্ধাস্ত্র থাকা সত্ত্বেও সে অঞ্চলে একটা মুশরিক পুরুষ পাওয়া যেতো না।’ ‘আল্লাহু আকবার’ শ্লোগান শুনে শয়তান ও তার দোসরদের লেজ গুটিয়ে পলায়নের লক্ষ লক্ষ দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে আছে। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। নবি সা. বলেন: শয়তান যখন সালাতের আজান (আল্লাহু আকবার আওয়াজ) শুনতে পায়, তখন পশ্চাত বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালাতে থাকে, যেন আজানের শব্দ তার কানে পৌঁছতে না পারে। মুয়াজ্জিন যখন আজান শেষ করেন তখন সে ফিরে এসে সংশয়-সন্দেহ সৃষ্টি করতে থাকে। সে পুনরায় যখন ইকামাত শুনতে পায়, আবার চলে যায় যেন এর শব্দ তার কানে না যেতে পারে। যখন ইকামাত শেষ হয় তখন সে ফিরে এসে সংশয়-সন্দেহ সৃষ্টি করতে থাকে। (মুসলিম)।
‘আল্লাহু আকবার’ তাকবীর শয়তান এবং তার দোসরদের বিরুদ্ধে কীভাবে প্রতিরোধের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে তা দেখার জন্য বেশি দূর যেতে হবে না। ভারতের কর্ণাটকের কলেজ ক্যাম্পাসে উগ্রবাদি হিন্দু সন্ত্রাসী হায়েনাদের সম্মুখে বাঘিনীকন্যা মুসকান খানের ‘আল্লাহু আকবার’, ধ্বনি আজ বিশ্বের সকল নিপীড়িত মজলুম মানবতার প্রতিবাদের ভাষায় পরিণত হয়েছে। মুসকানের ধ্বনি আজ বিশ্ববাসীকে শক্তি ও সাহস যোগাচ্ছে, নতুন মন্ত্রে উজ্জীবিত করছে, গোলামী জিঞ্জির ছিন্ন করে করে নতুন করে বেঁচে থাকার প্রেরণা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ৯২ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত একটি দেশ। এ দেশ শহীদ-গাজী, অলী-আউলিয়া সাধক-সুফীদের পূণ্যস্মৃতিধন্য। এদেশের মানুষের ঘুম ভাঙে মসজিদের সুউচ্চ মিনার থেকে ভেসে আসা ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনির সুর মূর্ছনায়। তাদের সারা দিনের কর্মযজ্ঞের অবসান ঘটে এ ধ্বনির মাধ্যমে। এ ধ্বনির আহ্বানে সাড়া দিতেই লক্ষ-কোটি মুসলিম প্রতিদিন পাঁচবার ছুটে যান মসজিদ পানে। এদেশের আনাচে-কানাচে প্রতি মুহূর্তে অযুত কন্ঠে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয় এই পবিত্র ধ্বনি। এদেশের গ্রাম-গঞ্জে, শহর-বন্দর-নগরে প্রতি বছর হাজার হাজার তাফসীর মাহফিল, ইসলামী জলসা, ওয়াজ মাহফিল, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম হয়ে থাকে। এসব অনুষ্ঠানে তাকবীর ধ্বনির ক্ষেত্রে সাধারণত ‘লিল্লাহি তাকবীর’, ‘নারায়ে তাকবীর’ ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি এবং এর প্রতিধ্বনি শোনা যায়। এছাড়া, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মিছিল-মিটিংয়ে ‘নারায়ে তাকবীর’, ‘আল্লাহ আকবার’ স্নোগান প্রায়ই ব্যবহৃত হয়।
মোটকথা, বাঙালি মুসলমানদের সংস্কৃতি, বোধ-বিশ্বাস, নিঃশ্বাসে-প্রশ্বাসে মিশে আছে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি। এ ধ্বনি তাদের অস্তিত্বের অংশ। শুধু বাংলাদেশী মুসলমানই নয়; বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলমান ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহ আকবার’ ধ্বনির সঙ্গে ব্যাপকভাবে পরিচিত। এ ধ্বনি বিশেষ কোনো দল বা গোষ্ঠীর নয়। এ ধ্বনি বিশ্বমুসলিমের হৃদয়ের স্পন্দন। তাদের জাতিসত্তার পরিচয়। এ ধ্বনি মুসলিমদের আবেগ-অনুভূতির অপর নাম। তাদের চেতনার বাতিঘর এবং প্রেরণার উৎস। এ ধ্বনি মুসলমানদের প্রতিবাদী শ্লোগান, প্রতিরোধের ভাষা, বিজয়ের মন্ত্রণা। এ ধ্বনি বিশ্ব মুসলিমের সংস্কৃতি, বোধ-বিশ্বাস, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের অংশ। এটি বিশ্ব মুসলিমের জাতীয় শ্লোগান। এ ধ্বনির মাধ্যমে মুসলিম হৃদয়ে জাগ্রত হয় বিশ্বাসের ফল্গুধারা, অমিত তেজ, অসীম বিক্রম।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো- মুসলিম সন্তানদের অনেকেই আজ ইসলাম, ইসলামী আচার-সংস্কৃতি সম্পর্কে অজ্ঞ এবং উদাসীন। তারা মুসলমানদের সমৃদ্ধ ইতিহাস-ঐতিহ্য ভুলে বিজাতীয়দের অন্ধ অনুকরণে মানব রচিত তন্ত্র-মন্ত্র নিয়ে ব্যস্ত। সে কারণে স্রষ্টার মহত্ব ও বড়ত্ব সম্বলিত ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনির পরিবর্তে তারা সৃষ্টির নামে ধ্বনি দিচ্ছে, শ্লোগান দিচ্ছে। অনেকেই আল্লাহর নামের শ্লোগানকে বিশেষ দল বা গোষ্ঠীর জন্য নির্দিষ্ট নির্দিষ্ট করে ফেলছে। কেউ কেউ আল্লাহর নামের ধ্বনিতে বিব্রত বোধ করছে। কেউ কেউ আল্লাহর নামের ধ্বনি পরিত্যাগ করে কিংবা এড়িয়ে চলে কিংবা দূরত্ব বজায় রেখে বিজাতীয় প্রভুদের সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করছে। কেউ আবার আল্লাহর নামের ধ্বনিকে নিজের বাপ-দাদার ধ্বনি বলে দাবি করছে। কেউ আবার ইনিয়ে বিনিয়ে ‘নারায়ে তাকবীর’ ‘আল্লাহু আকবার’ এর মধ্যে বিশেষ জাতি গোষ্ঠীর গন্ধ খোঁজার চেষ্টা করছেন। এখানেই শেষ নয়, ইসলাম বিদ্বেষীদের একাংশ ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিকে সমালোচনা, প্রতিরোধ, চ্যালেঞ্জ, মোকাবেলা এমনকি উৎখাত করার ঘোষণা দেয়ার মতো স্পর্ধা দেখাচ্ছে। অথচ এ দেশে যেসব দল বা গোষ্ঠী রাজনীতির মাঠে আছেন তাদের নামের সাথেও ঐ বিশেষ ভাষা গোষ্ঠীর নাম জড়িত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, দেশের সবচেয়ে বড় এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল ‘আওয়ামী লীগ’। ‘আওয়াম’ উর্দু শব্দ, এর অর্থ জনগণ আর ‘লীগ’ ইংরেজি শব্দের অর্থ দল। একসঙ্গে হয়ে আওয়ামী লীগ অর্থ জনগনের দল। পূর্বে এ দলটির নাম ছিল ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’। তখন উর্দু, আরবি এবং ইংরেজি- তিন ভাষার শব্দ নিয়ে দলটির নামকরণ হয়েছিল। দলীয় নামকরণে উর্দু শব্দ থাকায় এ দলটিকে বিশেষ রাষ্ট্র বা ভাষা কিংবা গোষ্ঠীর তাবেদার বলার অবকাশ কিংবা সাহস কারো আছে কি? অবশ্যই নেই। এমনিভাবে অন্যান্য দলগুলোর নামকরণ ইংরেজি কিংবা আরবি শব্দে হওয়ার কারণে তাদেরকে সে ভাষাভাষির তাবেদার বা অনুসারী বলা যাবে কি? তাও বলা যাবে না। আসলে নানা ভাষার সংমিশ্রণে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে ইসলাম বিদ্বেষীদের তাকবীরের বিরোধীতার ক্ষেত্রে দল, গোষ্ঠী, ভাষা কোনো সমস্যা নয়। তাদের কাছে সমস্যা হলো-ইসলাম, ইসলামী পুনর্জাগরণ ও বিজয়। ‘নারায়ে তাকবীর, লিল্লাহি তাকবীর’, ‘আল্লাহু আকবার’ শ্লোগানের বিরোধীতাকারীরা আসলে ইসলামেরই বিরোধীতা করতে চায়। ইসলামের আওয়াজকে সংকুচিত কিংবা স্তব্ধ করতে চাই। কিন্তু কোটি মুসলমানের দেশে তাদের এ স্বপ্ন-সাধ কোনো দিনই পূরণ হবে না। কাফির-মুশরিক-মুনাফিক এবং শয়তানের উত্তরাধিকারীরা যতোই ষড়যন্ত্র করুক না কেন আল্লাহ তায়ালা তার দ্বীনকে বিজয়ী রাখবেনই। সম্প্রতি সময়ে চট্টগ্রামে এক রাজনৈতিক নেতার ‘নারায়ে তাকবীর’ শ্লোগান নিয়ে, আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্কের খবর সচেতন মহলের সবারই জানা। অথচ এসব অপরিণামদর্শীরা এ উপমহাদেশে ইসলামের প্রভাব, গভীরতা জানে না। জানে না তাকবীরের প্রভাব, তাকবীরের ইতিহাস। যারা অন্তরে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি বিশ্বাস, ধারণ ও লালন করেন তাদের মোকাবেলা কিংবা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা দুনিয়ার কারো নেই। এদেশে শাহজালালের সন্তানরা যদি সম্মিলিতভাবে তাকবীর ধবনি দেয় তাহলে সে তাকবীরের ধ্বনিতে গৌরগোবিন্দদের দম্ভ-মসনদ মুহূর্তের ব্যবধানে খড়কুটোর মতো উড়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।
একজন প্রকৃত মুসলিম কখনো আল্লাহর মোকাবেলায় অন্যের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করতে পারে না। সুতরাং ‘নারায়ে তাকবীর’ লিল্লাহি তাকবীর’ ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি নিয়ে সমালোচনা করা, প্রক্রিয়া দেখানো, গোস্সা করা, ক্ষোভ দেখানো কোনো মুসলমানের পক্ষে শোভনীয় নয়। যদি কেউ আল্লাহকে মহান এবং শ্রেষ্ঠ বলে উচ্চারণ করতে, প্রচার করতে, স্বীকৃতি দিতে দ্বিধা-সংকোচ বোধ করে কিংবা হীনমন্যতার পরিচয় দেয় তাহলে সে কখনোই ইমানের দাবিতে সত্যবাদি হতে পারে না। হতে পারে না ইসলামের মহান ব্যক্তিদের যোগ্যতম উত্তরসূরী। ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি নিয়ে সমালোচনা, প্রতিক্রিয়া দেখানো শুধুমাত্র শয়তান এবং তার দোসর তথা কাফির, মুশরিক, মুনাফিক, মুরতাদ এবং নাস্তিকদের পক্ষালম্বনেরই সাক্ষ্য দেয়। আল্লাহ তা‘য়ালা আমাদেরকে সর্বাবস্তায় তাঁর বড়ত্ব ও মহত্ব ঘোষণার তাওফিক দান করুন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ