Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা আবার আসছে : বিজিবি

১৯টি নৌকা ফেরৎ দেয়া হয়েছে

| প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে চলমান সেনা অভিযান থেকে বাঁচতে নাফ নদী দিয়ে নৌকায় চড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা দুই শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলমানকে ফেরত পাঠিয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষীরা। জানা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে স্রোতের মতো রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসতে শুরু করলেও গত কয়েকদিন ধরে তাদের আসার হার কিছুটা কমেছিল। কিন্তু এখন গত শুক্রবার রাতে উনিশটি নৌকা ভর্তি রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর ঘটনা বলে দিচ্ছে, আবার তারা আসছে।
একটি বার্তা সংস্থার খবরে জানা যাচ্ছে, জাতিসংঘের কাছে তথ্য রয়েছে মিয়ানমারের ওই এলাকাটিতে প্রতিদিনই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি বলছে, শুক্রবার রাত থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে বিভক্তকারী আন্তর্জাতিক নাফ নদী দিয়ে টেকনাফের উপকূলে ভেড়ার চেষ্টার সময় অন্তত ১৯টি নৌকাকে মিয়ানমারের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এগুলোতে কারা ছিল, সেটা স্পষ্ট নয়, তবে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ বলছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সাম্প্রতিক সেনা অভিযান এবং সৈন্যরা যে হত্যাকান্ড ও ধর্ষণ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে তা থেকে বাঁচার জন্য পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলমানেরা ছিল এই নৌকাগুলোতে।
ঠিক কতজন মানুষ ছিল নৌকাগুলোতে তা নির্দিষ্ট করে জানা যাচ্ছে না। তবে টেকনাফে বিজিবির উপ অধিনায়ক মেজর আবু রাসেল সিদ্দিকী বলছেন, প্রতিটি নৌকায় গড়ে দশ বারো জনের মত মানুষ ছিল। মেজর সিদ্দিকী বলছেন, মাঝখানে রোহিঙ্গাদের আসা কমেছিল, কিন্তু গত শুক্রবার রাতের ঘটনা বলে দিচ্ছে আবার তারা আসছে। রাখাইন রাজ্যের রাজধানী মংডু থেকে সরাসরি নৌকায় যারা নাফ নদী পাড়ি দেয় তারা এসে ওঠে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে।
বিগত সপ্তাহগুলোতে এই হোয়াইক্যং দিয়েই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূর আহমেদ আনোয়ারীও বলছেন, সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের আসার হার কিছুটা কমেছে বলে তিনি দেখতে পাচ্ছেন। তবে প্রায়ই অনেক রোহিঙ্গা ভর্তি নৌকা ফেরত পাঠালেও বিজিবি স্বীকার করছে বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের সীমান্ত পুরোটা সুরক্ষিত না থাকার কারণে অনেকেই ঢুকে পড়তে পারছে বাংলাদেশে। গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশে হাজার হাজার রোহিঙ্গা ঢুকে পড়েছে বলে স্বীকারও করেছে দেশটির সরকার। এরা যেহেতু একটা মারাত্মক সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে, ফলে যারা ঢুকে পড়ছে তাদের সাথে মানবিক আচরণ করারও সিদ্ধান্ত রয়েছে। চেয়ারম্যান জনাব আনোয়ারী বলছেন, যারা আসছে তাদের সাথে মানবিক আচরণ করছেন তারা। রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে বাংলাদেশীদের নেতিবাচক মনোভাব থাকলেও বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা রোহিঙ্গাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করছে।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হচ্ছে, জাতিসংঘ প্রায় প্রতিদিনই মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদেরকে হত্যা ও ধর্ষণ করার খবর পাচ্ছে। সেখানে স্বাধীনভাবে কোনো ধরনের পর্যবেক্ষণ কিংবা তদন্ত করতে দেয়া হচ্ছে না বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কর্যালয়।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মিয়ানমারের চলমান সঙ্কটে শান্তিতে নোবেল জয়ী অং সাং সু চি-র নেতৃত্বাধীন সরকার অদূরদর্শী ও অনুভূতিহীন ব্যবস্থা নিয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ এই বলে সতর্ক করে দিয়েছে যে এটা ওই এলাকাকে দীর্ঘ মেয়াদে অস্থিতিশীলতার ঝুঁকিতে ফেলেছে। সূত্র : বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ