Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্থনীতি ও জ্বালানি সঙ্কট গুরুত্ব পাবে

সচিব সভায় প্রধানমন্ত্রীর ২০ অগ্রাধিকার প্রকল্পের পর্যালোচনা হবে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধসহ সচিবদের ২৬ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়ন নেই

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০২ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০ অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং সংকট মোকাবেলায় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বৈঠকে বসছেন আগামী রোববার। সরকারি অফিস আদালতের কক্ষের জানালার পর্দা ব্যবহার না করা এবং ৫০ ভাগ বৈদ্যুতিক লাইট বন্ধ রেখে দিনের আলো যথাযথভাবে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার নিদের্শনা। অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধসহ সচিবদের ২৬ দফা নির্দেশনা গত ২০১৮ সালে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে নিদের্শনা কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে সে বিষয়ে তা বলা হয়নি কার্যপত্রে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে আগামী ২৭ নভেম্বর সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। করোনা মহামারির পর এবারই প্রথম প্রধানমন্ত্রী সশরীর সচিবালয়ে সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন। এতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা অংশ নেবেন। এর আলোচ্যসূচিতে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনীতি, জ্বালানি সংকট মোকাবিলাসহ গুরুত্বপূর্ণ ২০টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ গুলোর মধ্যে রয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ প্রকল্প বা উদ্যোগগুলো মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্প, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন, কমিউনিটি ক্লিনিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, বিনিয়োগ বিকাশ এবং পরিবেশ সুরক্ষা। পার্রত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও জ্বালানি নিরাপ্তÍা নিশ্চিত করা, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতিকে সুসংহত রাখা, সরকারি সেবা প্রদানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ক পরিকল্পনা, সরকারি কাজে আর্থিক বিধি-বিধান অনুসরণ করা, বন্ধ পাটকল ও বস্ত্রকল গুলো ইজারা-পিপিপি’র মাধ্যমে চালু করণ,পতিত জমি আবাদের আওতায় আনা,সারের যোগান নিশ্চিতকরণ,পিছিয়ে থাকা প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন, সরকারি চাকরির শূন্য পদ পূরণ এবং নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা থাকছে বলে জানা গেছে।

সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান ইনকিলাবকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে সব সচিবকে নিয়ে সরকার প্রধানের বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে চলমান সংকট নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আবার আলোচ্য সূচির বাইরেও প্রশাসনের সচিবও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সুযোগ সুবিধান নিয়ে আলোচনা হবে। এ বৈঠক থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

বিবিধ প্রশাসনিক বিষয়ের উপরে আলোচনায় বলা হয়, লোকবলের অপ্রতুলতা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থান সংকট থাকার কারণে দাপ্তরিক কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। অর্পপ সংখ্যক কর্মকর্তা দিয়ে ৬৬টি মন্ত্রণালয়/ বিভাগ এবং বিভিন্ন সংস্থার নথি ভেটিং করা হয়। ফলে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ভোটিংকর্ম সম্পাদন করা ককষ্টসাধ্য হয়ে দাড়ায়। বাষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির সূচকগুলো নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন নিয়ে সদস্যা সৃষ্টি হয়।

সুশাসন ও শুদ্ধাচার বিষয়ে আলোচনায় বলা হয়. সোসাল মিডিয়ার অবব্যবহার রোধে সচেতনামুলক সেমিনারে আয়োজন আরো বেশি করা এবং অংশীজনের অংগ্রহনের সভা অনুষ্ঠিত করা। প্রতিক্ষার ব্যবস্থা বিষয়ক প্রশিক্ষণ, তথ্য অধিকার বিষয়ক প্রশিক্ষণ, সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি বিষয়ক প্রশিক্ষণ, সভা সেমিনার, কর্মশালা ও পযালোচনার আয়োজন করা। দক্ষ ও জবাবদিহিতামুলক প্রশাসন গড়ে তোলার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া ভালো কাজে পুরুস্কার প্রদান করা হয় এবং অন্যায় করলে প্রচলিত বিধি-বিধান অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করা হয় সে বিষয়টি থাকছে। মূলত ২৭ নভেম্বরের সভায় করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচিবদের দিক-নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিশ্লেষণে যে খাদ্য সংকটের পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছে, এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী সচিবদের বিশেষভাবে নির্দেশনা দিতে পারেন।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বর্তমান সরকারের ১৩ বছরের মন্ত্রণালয় ভিত্তিক উন্নয়ন কার্যক্রমের অগ্রগতি ও সাফল্য সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছানোর উপায় ও কৌশল নির্ধারণের জন্য একাধিক বৈঠক করেছেন। উন্নয়ন-সংক্রান্ত সব উপকরণ একীভূত করার জন্য প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তাদের দায়িত্বও দিয়েছেন। সরকারের এসব উন্নয়ন কার্যক্রম আগামী নির্বাচনের আগে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সচিব ইনকিলাবকে বলেন,দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও জ্বালানি নিরাপ্তÍা নিশ্চিত করা, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতিকে সুসংহত রাখা, সরকারি সেবা প্রদানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ক পরিকল্পনা, সরকারি কাজে আর্থিক বিধি-বিধান অনুসরণ করা জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের কিছু চ্যালেঞ্জ ও অর্জনের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। পাশাপাশি নির্বাচনপূর্ব সময়ে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হবে। এসব বিষয়ে পরিস্থিতি অনুযায়ী করণীয় নির্ধারণ করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও ঠিক হতে পারে।

এক বছরেরও বেশি সময় পরে সচিব সভা হচ্ছে। এর আগে গত বছরের ১৮ আগস্ট রাজধানীর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে এ সভা হয়েছিল। সভায় প্রধানমন্ত্রী গণভবন প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন। এর আগে গত ২০১৮ সালের ৪ মার্চ সচিব সভা হয়, যাতে অংশ নেন ৭৬ জন সচিব। সাধারণত প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত না থাকলে সচিব সভায় সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এর আগে ২০১৭ সালে ২ জুলাই সচিবদের নিয়ে সর্বশেষ বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধসহ সচিবদের ২৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ