Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বঙ্গবন্ধু খুনিদের জান্নাত কামনায় ইউপি চেয়ারম্যানের মোনাজাত

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২২, ১১:০৭ এএম

বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে গিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ সকল খুনিদের জান্নাত কামনা করে মোনাজাত করেছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য লায়ন মো. মাহবুবুর রহমান বাবুল।

এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়ে দল থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। এ ঘটনায় তার নামে মামলাও হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থলে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করে ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল।

মোনাজাতের একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারদের যারা নিঃস্বার্থভাবে হত্যা করেছে তাদের সকলকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করুন। পরে উপস্থিত নেতাকর্মীরা উচ্চশব্দে আমিন-আমিন বলতে থাকেন।’

জাতির পিতার সমাধিস্থলে গিয়ে বাবুলের এমন কাণ্ডে সোশ্যাল মিডিয়ার সমালোচনার ঝড় ওঠে। সামাজিক মাধ্যমে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে সচেতন মহল। এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যে তাকে বহিষ্কারের পরেও কেন তাকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিস্থলে গেলেন উপজেলার নেতারা তা নিয়েও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মীরা।

জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দলীয় চেয়ারম্যানদের বাদ দিয়ে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের পদস্থ নেতারা কীভাবে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে যায়? তবে বিষয়টি চেপে যেতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল বলেন, এর আগেও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সে কটূক্তি করায় উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এতেও শোধরাননি। আবারও যদি সে এমন কথা মোনাজাতে বলে থাকে তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, এমন ঘটনা কখনো মেনে নেওয়া যায় না। তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার (১৯ নভেম্বর) মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের ব্যানারে টুঙ্গিপাড়ায় জিয়ারতে যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। তবে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের এই কমিটির কোনো বৈধতা নেই বলে জানিয়েছেন জেলা সন্তান কমান্ডের নেতারা। তাদের দাবি, নিয়ম বহির্ভূতভাবে একটি স্বার্থন্বেষী মহল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমান্ডকে ব্যবহার করতে চাইছেন। সোনারগাঁও উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের বৈধ কোনো কমিটি নেই।

মোনাজাতের সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সোনারগাঁয়ের সাবেক সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার, উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মাসুমসহ নেতারা।

পরপর এমন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জন্য বারদী ইউপি চেয়ারম্যান বাবুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মোনাজাত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ