পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গ্রহণযোগ্য কমিশন ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে এই উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে -বিশেষজ্ঞদের মত
আফজাল বারী : নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ। আগামী রোববার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ধারাবাহিকভাবে সংলাপ করবেন। প্রেসিডেন্টের সংলাপকে রাজনৈতিক টনিক হিসেবে দেখছে বিএনপি।
একই মনোভাব পোষণ করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. তারেক শামসুর রেহমানও। তিনি বলেন, আমার ধারণা প্রেসিডেন্টের এই উদ্যোগ বিরাজমান সংকটের সমাধানে পথ দেখাবে। শুধু দেশেই নয় এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ভিনদেশও। উইরোপের ২৮ রাষ্ট্রের জোট ইইউ ডেলিগেশন প্রধান ঢাকায় নিযুক্ত পিয়েরে মায়াদুন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, শক্তিশালী, দক্ষ ও পেশাদার কমিশনই পারে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে কমিশন গঠনে প্রেসিডেন্টের এই উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে।
বিএনপির মতে, সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রথম শর্ত স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। ওই কমিশন সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ সুগম করবে। যাতে দেশজুড়ে বিরাজমান চাপাক্ষোভের প্রসমন ঘটবে। সংলাপের মধ্য দিয়ে বিরাজমান রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান মিলবে।
বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতা ইনকিলাবকে বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা যেহেতু নেই সেহেতু স্বাধীন নির্বাচনই সে শূন্যতা পূরণ করতে পারবে। স্বাধীন কমিশন গঠনে ‘নিরপেক্ষ সার্চ কমিটি’ প্রথম শর্ত। সর্বজন গ্রহণযোগ্য প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ অন্ত:ত বিরোধী রাজনৈতিক দল তথা জাতির সে প্রত্যাশা পূরণে ভূমিকা পালন করবেন। আগামী রোববার শুরু হওয়া প্রেসিডেন্টের সাথে বিএনপিসহ অন্যান্য দলের সংলাপের মধ্য দিয়ে সে দরজা খুলে যাবে বলে আমরা আশা করছি।
আলাপকালে নেতারা আরো জানান, বর্তমান নির্কাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়াও একই ছিলো। তবে এবার সে পুরনো পথ অনুসরণ করলে বিএনপিও সকল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে রাজপথে নামবে। তাদের দাবির প্রতি জনমত গঠনে ইতোমধ্যে মিত্র দলগুলোর সাথে ইনডোর আলোচনা করছে। সময় বুঝে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। গত মঙ্গলবার দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে এ বিষয় নিয়ে করণীয় ঠিক করতে স্পেশাল বৈঠক করেছেন বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আগেই জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বিগত সরকারের ধারাবাহিকতায় এবারও সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে নতুন কমিশন গঠিত হবে। এরই মধ্যে সংসদের বাইরে থাকা প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিও নির্বাচন কমিশন গঠনে ১৩ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে। প্রস্তাবনায় দলটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি বাছাই কমিটি গঠনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনেরও প্রস্তাব দিয়েছে। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার অভিমত ব্যক্ত করেছেন। চলতি সংসদের ১৩তম অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে বিএনপি একটি প্রস্তাব দিয়েছে। এই বিষয়ে প্রেসিডেন্ট সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, আমরা মেনে নেব।’
এর আগে ২০১১ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে বর্তমান কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিলেন। বিএনপি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ওই আলোচনায় অংশ নিয়ে যে প্রস্তাবনা দিয়েছিলো। তার বাস্তবায়ন হয়নি। তাই শুরু থেকেই বর্তমান কমিশনের সমালোচনা করে আসছে। এই কমিশন তাদের দায়িত্ব পালনে নিরপেক্ষতা দেখাতে ’ব্যর্থ’ হয়েছে বলে বিএনপি দাবি করে আসছে। তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের এই উদ্যোগ এবং নতুন নির্বাচন কমিশন সবার কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।
নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনায় বসার জন্য প্রেসিডেন্ট যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাকে শুভ উদ্যোগ বলে অভিহিত করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. তারেক শামসুর রেহমান। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, প্রসিডেন্টের এই উদ্যোগকে ভালা মনে করি। এরই মধ্য দিয়ে সরকার ও সংসদের বাইরে থাকা বিরোধী দলের মধ্যে যে আস্থাহীনতা রয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। আমাদের প্রেসিডেন্ট সর্বজনগ্রহণযোগ্য ও অভিজ্ঞ ব্যক্তি। আমার ধারণা তার এই উদ্যোগ বিরাজমান সংকটের সমাধানে পথ দেখাবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, রাষ্ট্রের কর্তা প্রেসিডেন্ট। জাতি তার কাছে বিরাজমান সঙ্কট সমাধানে একটি নিরপেক্ষ ভূমিকা আশা করে। আমরা মনে করি এবারের সংলাপে সবার প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটবে।
রাষ্ট্র পরিচালনায় যে-ই হোক নির্বাচন পরিচালক নিরপেক্ষ হলে সেটা সকল রাজনৈতিক দলের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে বলে মনে করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য দাবি করে আসছি। আমাদের দাবি পূরণের জন্য স্বাধীন কমিশন পূর্বশর্ত। ইতোমধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন একটি প্রস্তাববালী দিয়েছেন। সাবেক নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন বিশেষজ্ঞসহ সর্বমহলই এই প্রস্তাবকে ভালো বলে স্বীকার করেছে। তারপরও আরো কোনে প্রস্তাব থাকলে তা আলোচনার মাধ্যমে বের হবে। যা প্রেসিডেন্ট তার সংলাপের মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারে। দলবাজদের মধ্যে মোটামোটি দল নিরপেক্ষ কমিশন হলেই বিএনপি সন্তুষ্ট থাকবে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।