নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
জাহেদ খোকন, শিলং (ভারত) থেকে : গৌহাটি-শিলং ১২তম সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে বাংলাদেশের মহিলা ভারোত্তোলক মোল্লা সাবিরার ব্রোঞ্জপদক জয় দিয়েই এবারের আসর শুরু করেছিলো লাল-সবুজরা। গত ৫ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনী দিন তিনি দেশকে প্রথম পদকটি উপহার দিয়েছিলেন। আর গেমসের ১১তম দিনে সোমবার দেশের হয়ে শেষ পদকটি জিতলেন জুডোকা হাবিবুর রহমান। সেটিও ব্রোঞ্জপদক। তিনি ৮১ কেজি ওজন শ্রেণিতে এই পদক জয় করেন। যার ফলে এবারের এসএ গেমসে চার স্বর্ণ, ১৫ রৌপ্য ও ৫৬টি ব্রোঞ্জপদক জিতেই আসর শেষ করলো লাল-সবুজরা।
দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত ক্রীড়া আসর। বাংলাদেশের খুব কাছেই ভারতের দুই রাজ্য আসাম ও মেঘালয়ে বসেছে এবারের এসএ গেমস। যে কারণে বাংলাদেশ ক্রীড়া দলের বহরটি ছিলো বেশ লম্বা। ক্রীড়াবিদ, কোচ, ম্যানেজার, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) ডেলিগেট, বিভিন্ন ফেডারেশনের অতিরিক্ত কর্মকর্তারা ছাড়াও পর্যবেক্ষকদের নামে প্রায় সাড়ে পাঁচশ’ জনের বিশাল এক বহর গৌহাটি ও শিলংয়ে এসেছিলো। কিন্তু এই বহর কি নিয়ে ফিরে গেলো দেশে? এক কথায় বলা যায় হতাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এসএ গেমসে সব সময়ই ভারতের জয়জয়কার। গেমসের অধিকাংশ ডিসিপ্লিনেই তাদের আধিপত্য থাকে। এর আগে ১১টি আসরে ভারতীয়রা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছে। এবার একটু বেশিই অধিপত্য ছিলো তাদের। গৌাটি-শিলং এসএ গেমসে ১৮৮টি স্বর্ণ, ৯০টি রৌপ্য ও ৩০টি ব্রোঞ্জপদক জয় করে ভারতই রইলো সবার আগে। কিন্তু হতাশা ছড়ালো লাল-সবুজরা। ২০১০ ঢাকা এসএ গেমসে ১৮টি স্বর্ণ, ২৩ রুপা ও ৫৬টি ব্রোঞ্জপদক জিতে তালিকার তৃতীয়স্থানে থাকা বাংলাদেশের এবার করুণ দশা। নিজেদের মাটিতে দাপট দেখালেও এবার ভারতের মাটিতে তারা চরম ব্যর্থ হয়েছে। গেমসের ২৩ ডিসিপ্লিনের মধ্যে ২২টিতে অংশ নিলেও পদক তালিকার পঞ্চমস্থানে নেমে এসেছে লাল-সবুজরা। তবে আশার কথা এই যে বাংাদেশের পুরুষ ক্রীড়াবিদদের চেয়ে এবার বেশী উজ্জল ছিলেন মহিলারা। তাদের জয়জয়কারই ছিলো গৌহাটি ও শিলংয়ে। চারটি স্বর্ণের মধ্যে লাল-সবুজের মহিলা সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা দু’টি ও একটি স্বর্ণপদক জিতেন মহিলা ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সিমান্ত। আর শুটার শাকিল আহমেদ এক স্বর্ণ জিতে পুরুষদের মান রাখেন। একইভাবে গেমসের অন্য ডিসিপ্লিনগুলোতেও বাংলাদেশের মেয়েদের জয়জয়কার ছিলো। গৌহাটি-শিলংকে তারা করে তুলেছে যেন এক টুকরো বাংলাদেশ।
কুস্তির মেয়ে রিনা আক্তার, ভারোত্তোলক ফুলপতি চাকমা, দলগত শুটিংয়ে আরদিনা-আরমিনরা, মহিলা খো খো দল, হ্যান্ডবলের মেয়েরা রুপা জিতে দেশের মান রেখেছেন। তবে ঘটনের মধ্যে ছিল হ্যান্ডবলের নিয়মিত গোলকিপার শিলা রায়ের মায়ের ইহলোক ত্যাগ করা। আর শুটিংয়ে মহিলাদের ব্যক্তিগত ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে আরদিনা ফেরদৌসের ইলেক্ট্রোনিক ট্রিগারে ফায়ার না হওয়া। অঘটনের জন্ম দিয়েছেন গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসে ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে রৌপ্যপদক জয়ী আবদুল্লাহেল বাকী। একই ইভেন্টে গৌহাটিতে তিনি পঞ্চম হয়েছেন। তবে এই ইভেন্টে উত্থান ঘটেছে তরুন শুটার শাকিল আহমেদের। গেমসে সবচেয়ে বেশি চমক দেখিয়েছেন শ্রীলংকার ক্রীড়াবিদরা। এতদিন যারা টেবিলের তিনের নীচে থাকতেন, এবার তারাই উঠে এসেছেন পদক তালিকার দ্বিতীয়স্থানে। অবাক হলেও সত্যি বেশিরভাগ ডিসিপ্লিনে লংকান পুরুষ ও মহিলাদের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে জিততে হয়েছে স্বাগতিক ভারতকে। যার ফল হাতে নাতেই পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। ২৫ স্বর্ণ, ৬৩ রুপা ও ৯৮টি ব্রোঞ্জপদক জিতে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে চমক দেখিয়েছে তার।
চূড়ান্ত পদক তালিকা
দেশ স্বর্ণ রৌপ্য তাম্র মোট
ভারত ১৮৮ ৯০ ৩০ ৩০৮
শ্রীলঙ্কা ২৫ ৬৩ ৯৮ ১৮৬
পাকিস্তান ১২ ৩৭ ৫৭ ১০৬
আফগানিস্তান ৭ ৯ ১৯ ৩৫
বাংলাদেশ ৪ ১৫ ৫৬ ৭৫
নেপাল ৩ ২৩ ৩৪ ৬০
মালদ্বীপ ০ ২ ১ ৩
ভুটান ০ ১ ১৫ ১৬
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।