পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুদ্ধ ও করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। তার ধাক্কাটা আমাদের দেশে এসেও পড়েছে, মূল্যস্ফীতির কারণে সব দেশ হিমশিম খাচ্ছে। প্রত্যেকের রিজার্ভ ব্যয় করেই তাদের চলতে হচ্ছে। আমাদেরও করতে হচ্ছে এবং সেটা মানুষের জন্য। তিনি বলেন, সরকারকে উচ্চ মূল্যে সার, জ¦ালানি তেল এবং ভোজ্য তেল কিনতে হচ্ছে উল্লেখ করে সেদিকে লক্ষ্য রেখে সবাইকে তিনি মিতব্যয়ী এবং সঞ্চয়ী হতে হবে। তিনি যুব সমাজকে চাকরির পেছনে না ছুটে বরং সমবায় গঠনের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন যেমন হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষ ও অন্যান্য কাজে যুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন।
গতকাল ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবস-২০২২ উদযাপন এবং জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তো অর্থনীতি অঞ্চল করছি সেখানে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প তৈরি করে আমাদের নিজেদের দেশের চাহিদা মিটিয়ে আমরা বিদেশেও পাঠাতে পারব। এই ক্রান্তিকালীন সময়ে এ ব্যাপারে সবাইকে আরও কাজ করতে হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চাই বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা যেন কোনোমতেই ব্যাহত না হয়। আমরা যে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলাম- কোভিড, যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে আমাদের কিছুটা থমকে দাঁড়াতে হয়েছে এটা ঠিক; কিন্তু এই অবস্থা অতিক্রম করে আমরা এগিয়ে যাব। আমাদের লক্ষ্য জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা কায়েম করব।
তিনি বলেন, আমাদের বিভিন্ন গৃহীত পদক্ষেপে আজকে আমরা আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করেছি, আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি প্রতি ঘরে ঘরে, যদিও এখন ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে।
সবাইকে উৎপাদন বাড়ানো এবং সঞ্চয়ের দিকে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, বর্তমান যুগে সারা বিশ্বের খাদ্যাভাব জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। আমেরিকা- ইংল্যান্ডের মতো উন্নত দেশগুলোর কথা আমি বলছি। সেই ক্ষেত্রে আমাদেরকে আরও উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং সঞ্চয় করতে হবে যাতে করে এই অভিঘাত থেকে আমাদের দেশের মানুষকে রক্ষা করা যায় সেই ব্যবস্থাটা নিতে হবে।
বৈশ্বিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, যদিও এই যুদ্ধ ও করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। তার ধাক্কাটা আমাদের দেশে এসেও পড়েছে, মূল্যস্ফীতির কারণে সব দেশ হিমশিম খাচ্ছে। প্রত্যেকের রিজার্ভ ব্যবহার করেই তাদের চলতে হচ্ছে। আমাদেরও করতে হচ্ছে এবং সেটা মানুষের জন্য।
সমবায়ের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করে সরকার প্রধান বলেন, আমি মনে করি আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নের সমবায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। যদি যুব সমাজ এগিয়ে আসে এবং সমবায়ের মাধ্যমে সমস্ত গ্রামের মানুষকে এক করতে পারে তাহলে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণ করাই সরকারের লক্ষ্য এবং এ জন্য সমবায়কে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি কিন্তু নিজের জীবন-জীবিকাকে উন্নত করার প্রত্যেক মানুষেরও আলাদা একটা চিন্তা থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রে এই কাজগুলো করার সুযোগ আমরা করে দিতে চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার প্রত্যেকটি সেক্টরকেই বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। যার প্রধান লক্ষ্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি। সে ক্ষেত্রে আমাদের কৃষি উৎপাদন ও মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য সমবায় একান্তভাবে অপরিহার্য্য। কারণ, এতটা ঘন বসতির দেশে সমবায়ই আমাদের অনেক সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সমবায় আন্দোলনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি উপজেলা পর্যায়ে দুগ্ধ সমবায়ের কার্যক্রম বিস্তৃত করায় সমবায় অধিদপ্তরকে ধন্যবাদ জানান। কারণ, এর ফলে প্রায় ৫ হাজার পরিবার উপকৃত হবে। শিশুরা যেমন দুধ খেতে পারবে তেমনিভাবে বয়োবৃদ্ধদেরও পুষ্টির সংস্থান হবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সমবায় ভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি সমবায়ের মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবন-মান উন্নয়নেও প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।
সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে আমরা পশু কোরবানীর ক্ষেত্রে নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি উল্লেখ করে সরকার প্রধান সকল ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীল হবার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
সরকার ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের প্রকল্প নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঋণের বোঝা তাদের টানতে হবে না। সমবায়ের থেকে নেওয়া ঋণ থেকে তাদেরকে সঞ্চয়ী হতে হবে। এর মাধ্যমে কেউ আর পর মুখাপেক্ষী থাকবে না। সবাই নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী উদাহারণ দেন ‘তারা যদি দু’শো টাকা সঞ্চয় করতে পারে তাহলে সরকারের তরফ থেকে আরো ২ বছর পর্যন্ত তাদের আরো দু’শো টাকা করে দেওয়া হবে এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে সেটা জমা থাকবে। আর পরবর্তীতে প্রকল্পে না থাকলেও সে ব্যাংকের মূলধন দিয়েই তার সমস্ত কার্যক্রম চালাতে পারবে।
সরকার প্রত্যেকটি গ্রামকেই শহরে রূপান্তরিত করতে চায় উল্লেখ করে সরকারের ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ প্রকল্প প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফসলী জমি নষ্ট করে বিক্ষিপ্তভাবে ঘর-বাড়ি তৈরি না করে সরকার ‘পল্লী জনপদ’ নামেও একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। যেখানে সমবায়ের মাধ্যমে উন্নত ঘর বাড়ি করে দেওয়া হচ্ছে, যেখানে তারা চাইলে ফ্লাট কিনতে পারবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য,সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক ড. তরুণ কান্তি সিকদার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মো. মশিউর রহমান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।