Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশ এমনভাবে চলছে যেন সংবিধান বাদ দিলেও কিছু যায়-আসে না

আলোচনা সভায় ড. শাহদীন মালিক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেছেন, বর্তমানে দেশ এমনভাবে চলছে যেন সংবিধান বাদ দিলেও কিছু যায়-আসে না। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন ও সরকার গঠনের ক্ষেত্রে সংবিধানের ১২৩-এর ৩(ক) ধারা অনুসরণ করা হয়নি। সেখানে স্পষ্টভাবে বলা আছে, সংসদ না ভেঙে নির্বাচন আয়োজন করার ক্ষেত্রে চলমান সংসদের মেয়াদ শেষ হলেই শুধু নতুন সংসদ শপথ নিতে পারবে। গতকাল শুক্রবার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের অধ্যাপক এস আই মান্নান হলে বাংলাদেশের সংবিধানের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সংবিধান সরকারের ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করে। সরকার কী করতে পারবে অথবা কী করতে পারবে না, তা সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যই এটি প্রণীত হয়েছে। নির্বাহী বিভাগ জনগণের কোনো কোনো অধিকার পূরণে বাধ্য সংবিধানে তা স্পষ্ট করে লেখা। ফলে এ সরকারের লক্ষ্য ছিল সংবিধান যেন প্রচার না হয়। সরকার চায় না জনগণ সংবিধান সম্পর্কে অবগত থাকুক।
ড. শাহদীন মালিক বলেন, এ পর্যন্ত আইন মন্ত্রণালয় সংবিধান ছাপিয়েছে ১৪ বার। সর্বশেষ ২০১৬ সালে মন্ত্রণালয় মাত্র ৫০০ কপি সংবিধান ছাপিয়েছিল। এরপর আর সংবিধান ছাপানো হয়নি। জনসাধারণের মধ্যে সংবিধান প্রচারে সরকারগুলোর বিশেষ অনীহা রয়েছে। বাহাত্তরের সংবিধানে জনগণের যেসব অধিকার সুরক্ষিত ছিল গত ৫০ বছর তা শুধু খর্বই হয়েছে। নির্বাচনি ব্যবস্থা ও সরকার গঠনের ক্ষেত্রে সাংবিধানিক নিয়ম-নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে না।
শাহদীন মালিক আরো বলেন, সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ তুলে দেয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ইচ্ছা করলেই সকল বেঞ্চ এককভাবে গঠন করতে পারেন, এটি কোনো গণতান্ত্রিক সংবিধানের নজির নয়। বাহাত্তরের সংবিধানে ৬৩তম অনুচ্ছেদে বলা ছিল যুদ্ধ বা যুদ্ধ আসন্ন হলে জরুরি অবস্থা জারি করা যাবে। ১৪১(ক)-এর মাধ্যমে রাষ্ট্রকে; কিন্তু অগাধ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। দেখা গেছে সরকারগুলো এর অপব্যবহার করছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানে মৌলিক অধিকার পরিপন্থি আইন করা যাবে না এমন বিধান থাকলেও এক বছরের মধ্যেই দ্বিতীয় সংশোধনীর মাধ্যমে তা খর্ব করা হয়েছে। এর পর থেকে প্রতিটি সরকার বিভিন্ন কালো আইনের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করেছে। যতগুলো সরকার ক্ষমতায় এসেছে সবাই নিজেদের মতাদর্শের আইনজীবী নিয়োগের মাধ্যমে বিচার বিভাগকে দলীয়করণ অব্যাহত রেখেছে। মৌলিক অধিকার পরিপন্থি সংবিধান পরিবর্তন করা যাবে- এ বিধানটি বাতিল করেতে হবে।
সভায় আইনজীবী রিজওয়ানা হাসান বলেন, যে প্রত্যাশা থেকে সংবিধান প্রণীত হয়েছিল তার সঙ্গে আপস করা হয়েছে। সংবিধান সংশোধন করে জনগণকে বিভক্ত করা হয়েছে, ফলে সংবিধানে রক্ষিত জনগণের মৌলিক অধিকারের বিষয়গুলো চলে গেছে দৃষ্টির বাইরে। মৌলিক অধিকারের প্রতি জনগণের দৃষ্টি সরিয়ে, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছে।



 

Show all comments
  • Abu Bakar ৬ নভেম্বর, ২০২২, ১২:৪১ এএম says : 0
    Constitution can't be and should not be changed or ammended to bring any changes that is against the main spirit of the constitution like,to allow somebody or a group of people to run or conduct the tenure of the election,who are not represented by the public or elected by the people as being demanded by BNP.
    Total Reply(0) Reply
  • Yousman Ali ৫ নভেম্বর, ২০২২, ১০:০৪ এএম says : 0
    Need cayer taker for people
    Total Reply(0) Reply
  • Abu Bakar ৬ নভেম্বর, ২০২২, ১২:৪১ এএম says : 0
    Constitution can't be and should not be changed or ammended to bring any changes that is against the main spirit of the constitution like,to allow somebody or a group of people to run or conduct the tenure of the election,who are not represented by the public or elected by the people as being demanded by BNP.
    Total Reply(0) Reply
  • Mukto Ural Pakhi ৫ নভেম্বর, ২০২২, ৮:১৯ এএম says : 0
    সংবিধান কে সরকার কই ভাজা করছে আর আপনি তাতে কিছু ঘি ঢেলে দিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Ripon Mohammad ৫ নভেম্বর, ২০২২, ৮:১৯ এএম says : 0
    সংবিধান একটি বই যেটি মানুষের উপকারের জন্য রচিত। তাইতো ১৬ বার সংশোধন হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Atik ৫ নভেম্বর, ২০২২, ৮:২০ এএম says : 0
    রাষ্ট পরিচালনায় এক নায়ক বা রাজতন্ত্রে কোন সংবিধানের প্রয়োজন হয় না ! বাংলাদেশ বত'মানে কোন তন্ত্রে পরিচালিত হচ্ছে তা কোন সচেতন নাগরিক বুঝে উঠতে পারছে না !
    Total Reply(0) Reply
  • শাহেদ আকবর ৫ নভেম্বর, ২০২২, ৮:২০ এএম says : 0
    কেয়ার টেকার সরকার ফিরিয়ে আনতে হবে জনগনের স্বার্থে,
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ