Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম

| প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রশ্ন : কাবলি পাঞ্জাবি পরে ইমামতি করা যাকে কি না, এক ধরনের আলেম একে নাজায়েজ বলে থাকেন, সঠিকটা কী?
উত্তর : ইমামতি বা নামাজ জায়েজ হওয়ার জন্য হাঁটু থেকে নাভি পর্যন্ত ঢেকে থাকে, এমন কিছু পরলেই হয়। শোভনীয়ভাবে নামাজ আদায় করতে চাইলে গোটা দেহ, দুই হাত ও মাথা ইত্যাদি সবই জামা, পাঞ্জাবি, পায়জামা, লুঙ্গি ও টুপিতে আবৃত করতে হবে। ইমামতি শুদ্ধ হওয়ার পথে কাবলি পাঞ্জাবি কোনো বাধা নয়। তবে মসজিদের ইমামের জন্য কেবল বৈধতার সীমারেখা বরাবর চলাই যথেষ্ট নয়। তার জন্য ধর্মীয় উন্নত রুচিবোধ ও শোভনীয় আচরণবিধি মেনে চলারও প্রয়োজন রয়েছে। যা সাধারণ মুসল্লিদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়। এ ধর্মীয় মর্যাদাসম্পন্ন পদবির বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব বিবেচনায় যদি কোনো বিজ্ঞ আলেম, সামাজিক ভাবগাম্ভীর্যহীন (অথচ অবৈধ নয়) কোনো পোশাক ইমাম সাহেবের জন্য অশোভনীয় মনে করেন, তবে তা অন্যায় হবে না, এটাও শরিয়তেরই অন্যতম বিবেচ্য দিক। ইসলামে মুসলিম জনসমাজের আচরিত প্রতিটি সুন্দর রীতি-পদ্ধতিরই বিধিগত মর্যাদা রয়েছে। ‘বৈধ বা অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে সবকিছু নির্দ্বিধায় সমাজে চালানো যায় না। উদাহরণস্বরূপ, ধূমপান করা শরিয়তে অবৈধ নয়। মুসলিম সমাজে এর প্রচলনও অত্যধিক। তাই বলে মসজিদের ইমাম বা প্রখ্যাত আলেমগণের ধূমপান করা কি আমাদের সমাজ ভালো চোখে দেখবে? এ ধরনের আরো অনেক বিষয় আছে, চিন্তা করে দেখলেই মূল ব্যাপারটি বুঝে আসবে।
প্রশ্ন : আমার এক মামাতো ভাই, তিন মাস বয়সে ওর মা মারা যায়। তারপর থেকে আমার আম্মার দুধ খেয়ে আমাদের পরিবারেই লালিত পালিত হয়। এখন ওর বয়স ২০ বছর। মাদ্রাসায় পড়ানোর অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। তাবলীগে তিন চিল্লায় পাঠিয়েছি, কোন ফায়দা হয়নি। নামায পড়ে না, সিগারেট খায়, বাজে বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়ায়। সবচে বড় সমস্যা আমার আব্বু আম্মুর সাথে অতিরিক্ত খারাপ ব্যবহার করে। এ পর্যায়ে ওকে যদি ফ্যামিলি থেকে বের করে দেই এটাকি আমাদের অন্যায় হবে। নাকি অন্য কোন পরামর্শ আছে?
উত্তর : আপনার দুধভাই মূলত আপনার ফ্যামিলি মেম্বার নয়। মামাত ভাইকে লালন পালন ও আশ্রয় দেওয়া খুবই সওয়াবের কাজ। এর ওপর তার আরেকটি পরিচয় হলো, যেমনটি আপনি প্রশ্নে উল্লেখ করেছেন, সে আপনার দুধভাই। আপনারা অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা ও চেষ্টা তার পেছনে করেছেন। কিন্তু সে ভালো হয় নি, ভালো হচ্ছে না। ইচ্ছা করলে আরও সুযোগ দিতে পারেন, ইচ্ছা করলে দূরেও সরিয়ে দিতে পারেন। বিশেষ কোনো গুনাহ বা অন্যায় হবে না। অবশ্য এতে আপনার বাবা মায়ের সম্মতি আছে কি না, তারা তাদের ওপর চাপিয়ে নেওয়া এ দায়িত্ব পালনে অক্ষম হয়ে গিয়েছেন কি না, কিংবা তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করার পরও তারা কি এ ছেলেটিকে আরও ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে কিছুদিন সুযোগ দেবেন কি না, এসব ভেবেই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ, আপনি এককভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অবস্থানে আসেননি। তবে, সবাই যদি মনে করেন, এখন আর তার দায় নেবেন না, তাহলে তাকে দূরে ঠেলে দিতে শরীয়তে কোনো বাঁধা নেই। কারণ, দুধমায়ের সম্পর্ক নীতিগতভাবে আপন মায়ের মতোই। তবে, দায়-দায়িত্ব বা উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে এসম্পর্ক কোনো কাজে আসে না। এরপরও উত্তম আচরণের কিছু দাবী থেকেই যায়। যা পূরণ করতে যদি আপনারা প্রস্তুত থাকেন, তাহলে তাকে আরও একবার সুযোগ দিয়ে দেখুন। সময়ে সবকিছুই পবিরর্তন হতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ