বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মো: হায়দার আলী, গোদাগাড়ী (রাজশাহী) : ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। প্রতিবছর এই মাসটি আসলেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ও সাধারণ মুক্তিকামী মানুষ, স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীরমুক্তিযোদ্ধাদের কৃতজ্ঞ চিত্তে স্বরণ করে। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর বাংলার দামাল ছেলেরা পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর হাত থেকে বাংলাদেশকে স্বাধীন করে বাংলার লাল সবুজের পতাকা এনে দেশকে গৌরবোজ্জ্বল করে। তারপর থেকেই আমরা প্রতিবছর ১৬ ডিসেম্বরকে দলমত নির্বিশেষে বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে আসছি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে গোদাগাড়ীর রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা এখান বীর সন্তানরা তাদের সাহসীকতা দিয়ে যেমন সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেছেন। তেমনি শত্রুপক্ষের শিবিরে ত্রাস সৃষ্টি ও তাদের পরাভূত করে ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতার সুর্য। মুক্তিযুদ্ধো গোদাগাড়ীর ৪নং সেক্টর, ৭নং সাব-সেক্টরের অধীন ছিল। এ সাব সেক্টরের অধীনেই ছিলেন, ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দীন আহমেদ চৌধুরী। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি বীরবিক্রম পদকে ভূষিত হন। কর্মক্ষেত্রে ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল পদে উন্নতি হন এবং বিশ্বের ৮টি দেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলার ছাত্র-জনতা সম্মীলিতভাবে অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে, সম্মুখ সমরে শহীদ হন ৭জন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাক সেনাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে নিহত হন, বাসুদেবপুর ইউনিয়নের লস্করহাটি গ্রামের মৃত: ইদ্রিস বিশ্বাসের ছেলে শহীদ গোলাম মোস্তফা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পোঁড়া গায়ে পাক সেনাদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে নিহত হন, চর আলাতুলী মৃত: আবু বক্কারের ছেলে শহীদ ফজলুর রহমান। তানোর থানা আক্রমণ করার সময় পাক সেনাদের গুলিতে নিহত হন রিশিকুল ইউনিয়নের মৃত: হাজী মফিজ উদ্দীনের ছেলে শহীদ একেএম মোনায়েম মঞ্জুর। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে পাক সেনাদের সঙ্গে সাহসীকতার সহিত যুদ্ধে নিহত হন, সেরাপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে শহীদ আব্দুল হক। ইপিআর হেড কোয়ার্টার পিলখানা, ঢাকায় নিহত হন, গোদাগাড়ী পৌর শহরের সারাংপুর গ্রামের মৃত: জেসার মন্ডলের ছেলে শহীদ সিরাজুল ইসলাম। ভারতের কুচবিহার সীমান্তে শহীদ হন, মাটিকাটা ইউনিয়নের ভাটোপাড়া গ্রামের মৃত: আসুরুদ্দীনের ছেলে শহীদ শাহজাহান আলী। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাক সেনা আক্রমণ করার সময় নিহত হন, মাটিকাটা গ্রামের মোঃ মঞ্জুর আলীর ছেলে শহীদ জিল্লার রহমান। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গোদাগাড়ীতে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৫জন। এরা হলেন, রাজাবাড়ীর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক, গোদাগাড়ী পৌরসভার বারুইপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর রহমান, মাদারপুরের মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম পিরু, বুজরুকরাজারামপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা এলতাস হোসেন, লস্করহাটির মুক্তিযোদ্ধা ইসরাফিল হোসেন। গোদাগাড়ী উপজেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার নাম আবু নূর হামিম রিজভী বীর প্রতিক। ১৯৭১ খ্রীস্টাব্দে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে, মমতাময়ী মায়ের নির্দেশে পৈত্রিক নিবাস পিরিজপুর ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় লালগোলা থানার ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম লেখান। ট্রেনিংয়ে পারদর্শিতার জন্য তিনি গ্রুপ কমান্ডারের দায়িত্ব পান। ১৯৭১ খ্রীস্টাব্দে ৭ই নভেম্বর ৪নং সেক্টর ৭নং সাব-সেক্টর অধিনায়ক মেজর গিয়াস উদ্দীন আহমেদ এর নির্দেশে সহযোদ্ধাদের নিয়ে পবা উপজেলার কশবা নামক স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর দু’টি জীপ এবং সৈন্যদের এ্যাম্বুসে ফেলে খতম করে দেন। এই দুঃসাহসিক এবং বীরত্বপূর্ণ অপারেশনের জন্য নূর হামিম রিজভী “বীর প্রতিক” পদকে ভূষিত হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।