Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বেনাপোল বন্দরে সবকটি ক্রেন বিকল লোড-আনলোডে স্থবিরতা শত শত ট্রাক আটকা

| প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বেনাপোল অফিস : দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল বন্দরে ব্যবহৃত ৪টি ক্রেনই বিকল হওয়ায় মালামাল লোড-আনলোড অচলাবস্থার সৃস্টি হয়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে বন্দরের কার্যক্রম। কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা ও অবহেলায় গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে এ বন্দরের ৪টি ক্রেনই বিকল হলেও টেকসইভাবে মেরামতের কোন উদ্যোগ নেই। যে কারণে বন্দরে শ শ পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকে আছে। সরকারের রাজস্ব পরিশোধ করেও শ শ ট্রাক আমদানিকৃত পণ্য নিতে পারছে না আমদানিকারকরা।
সরজমিনে তদন্ত করে দেখা গেছে, বেনাপোল স্থলবন্দরে ভারী পণ্য লোড-আনলোড করতে ৫টি ক্রেন থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৪টি। এর মধ্যে গত দেড়/দুই মাস ধরে বড় দুটি ক্রেন বিকল থাকায় কোন কাজ হচ্ছে না। দুটি ক্রেন কোনরকম সচল থাকলেও ঠিকমত কাজ করছে না। যার ফলে বেনাপোল স্থল বন্দরে ব্যবহৃত ৪টি ক্রেনই এখন কাজের অনুপযোগী। কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও বন্দরের ঠিকাদার কোম্পানির দায়িত্বহীনতার কারণে বেনাপোল স্থলবন্দরে সকল প্রকার ভারী পণ্য লোড-আনলোড একেবারই স্থবির হয়ে রয়েছে। এ কারণে বন্দরের অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। ক্রেন বিকল হওয়াতে বেনাপোল বন্দরের ইক্যুইপমেন্ট ঠিকাদার কোম্পানি মেসার্স এস আই এস লজিস্টিক্যাল সিস্টেম (জেভি) এর অফিস থাকলেও অফিসের কর্মকর্তারা অসহায় হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে বেনাপোল স্থল বন্দরের ১২নং শেডের সামনে বন্দরের গ্যারেজের ক্রেন ম্যাকানিক জয়নাল জানান, ক্রেনের খুচরা যন্ত্রপাতি পাওয়া যায় ন্ া। যে কারণে ক্রেন ঠিক করা সম্ভব হচ্ছে না।
ক্রেন চালক মিলন হোসেন জানান, কর্তৃপক্ষ ক্রেন ঠিক না করলে আমরা কি করব। ক্রেন ম্যাকানিক জানান, ক্রেনের ক্লাস প্লেট, কপার ড্রাম, ব্রেকসহ অনেক সমস্যা রয়েছে। যা ঠিক করতে সময় লাগবে। তারা জানান, ৬৫ মেট্রিক টন ও ৪০ মেট্রিক টনের দুটি ক্রেন প্রায় দুই মাস ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান বলেন, বেনাপোল বন্দরের অবস্থা খুবই করুন। ক্রেন নষ্ট হওয়াতে আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তিনি বলেন বন্দর কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে বেনাপোল বন্দর অচল হওয়ার উপক্রম । তিনি অবিলম্বে নষ্ট ক্রেন মেরামতের জন্য দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ পরিচালক রেজাউল করিম জানান, স্থল বন্দরের ক্রেন নষ্ট হয়েছে তবে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন বেনাপোল স্থলবন্দরে কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি করতে আরও বেশি ক্রেন ও ফরকিপ সরবরাহের প্রয়োজন। বন্দরে ঠিকাদার কোম্পানির ৫টি সচল ক্রেন দেয়ার কথা থাকলেও তারা ৪টি পুরানো ক্রেন দিয়ে কাজ করছে।
এ ব্যাপারে বেনাপোলে ঠিকাদার কোম্পানির অপারেশন পরিচলক হাফিজুর রহমান জানান, অচিরেই বেনাপোল বন্দরে ক্রেনের সমস্যা নিরসন হয়ে যাবে। তিনি বলেন বন্দরের মধ্যে ক্রেন চলাচলের রাস্তা না থাকায় এবং ধুলা ও কাদার কারণে বেশিরভাগ ক্রেন নষ্ট হয়। এ ছাড়া ক্রেনের যন্ত্রাংশ চট্রগ্রাম এবং দেশের বাইরে থেকে আনতে হয়। তিনি বলেন এখন বন্দরে লোহা এবং ভারী পণ্য বেশি আসাতে ক্রেনের প্রয়োজনীয়তা বেশি হয়ে পড়েছে। এজন্য ৭০ মেট্রিক টনের একটি ক্রেন ইতোমধ্যে বন্দরে আনা হয়েছে। হাফিজুর আরও বলেন গত ৫বছর বেনাপোল বন্দরে ক্রেনের কোন অসুবিধা ছিল না। যেহেতু নতুন করে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। যে কারণে এ সমস্যা হচ্ছে। ওয়ার্ক পারমিটের মামলা মিটে গেলে ক্রেন সমস্যা থাকবে না বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ্ব মফিজুর রহমান স্বজন এ প্রতিনিধিকে জানান, বেনাপোল বন্দর এভাবে চলতে পারে না। বাংলাদেশের
বৃহত্তর এ বন্দরের সমস্যা খোদ সরকারের নজরে আসা উচিত। তিনি বলেন বেনাপোল বন্দর জাতীয় অর্থনৈতিক অবকাঠামোর একটি অংশ। সেখানে ক্রেন বিকল জটিলতা দুঃখজনক বিষয়। তিনি জানান, বারবার বন্দর কর্তৃপক্ষকে বলা সত্ত্বেও ক্রেন সমস্যার কোন সমাধানের উদ্যেগ দেখা যাচ্ছে না। তিনি এ বিষয়ে বন্দর চেয়ারম্যানের দৃষ্টি কামনা করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্থলবন্দ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ