পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের জন্য চলতি বছর সবচেয়ে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছেন মধ্যপ্রাচ্যে জাতিসংঘের দূত টর ওয়েনেসল্যান্ড। ২০০৫ সালে দেশটিতে চলমান যুদ্ধ-সংঘাতে হতাহতের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ শুরু করে সংস্থাটি। এছাড়া তিনি বিদ্যমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং ইসরাইল-ফিলিস্তিন সম্পর্ক পুনর্নবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। খবর এপি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে টর ওয়েনেসল্যান্ড জানান, ক্রমবর্ধমান হতাশা, ক্ষোভ ও অনিশ্চয়তা আবারো সহিংসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে বিপুল মানুষ বিশেষ করে ফিলিস্তিনের অধিবাসীরা নিহত ও আহত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কর্মরত এ সমন্বয়ক জানান, পশ্চিম তীরে চলমান অস্থিতিশীলতা এবং কয়েক দশকের সহিংসতা ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের অধিবাসীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করেছে। দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতায় উদ্যোগের অভাব ও মূল সমস্যাগুলো সমাধানে ব্যর্থতা ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত দিন দিন বাড়িয়ে দিচ্ছে। ওয়েনেসল্যান্ড জানান, ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের সরকারি কর্মকর্তা, দল ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি যে বার্তা দিয়েছেন তা পরিষ্কার। তাৎক্ষণিকভাবে যে বিষয়ে কাজ করতে হবে সেটি হলো উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং ভূখণ্ডে যে নেতিবাচক কাজগুলো রয়েছে সেগুলো বন্ধ করা। তবে মূল লক্ষ্য হবে ফিলিস্তিন সরকারের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা এবং শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তোলা। জাতিসংঘের এ দূত জানান, গত মাসে ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর হাতে ছয় শিশুসহ ৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, অনুসন্ধান ও গ্রেফতার অভিযান এবং তথাকথিত ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আরো ৩১১ জন হতাহত হয়েছে। অন্যদিকে একই সময়ে ফিলিস্তিনিদের পাল্টা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ, সংঘর্ষ, পাথর ও মলোটোভ ককটেল বিস্ফোরণে ইসরাইলি বাহিনীর দুই সদস্য নিহত ও ২৫ জন সাধারণ নাগরিক হতাহত হয়েছে। ওয়েনেসল্যান্ড বলেন, এ মাসে যে পরিমাণ দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও সহিংসতা দেখা গিয়েছে সেটি ২০২২ সালকে পশ্চিম তীরের জন্য সবচেয়ে ভয়ানক বছর হিসেবে চিহ্নিত করেছে। চলতি বছর পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে দুই দেশের সংঘর্ষে ১২৫ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছে। মূলত বসন্তে ইসরাইলে ফিলিস্তিনিদের হামলায় ১৯ জন নিহতের ঘটনায় যুদ্ধ পুনরায় মারাত্মক আকার ধারণ করে। ইসরাইলের সেনাবাহিনীর দাবি, যুদ্ধে ও সংঘর্ষে ফিলিস্তিনের যারা নিহত হয়েছে তারা সবাই জঙ্গি। কিন্তু দেশটিতে অনুপ্রবেশের কারণে ফিলিস্তিনের যেসব তরুণ পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত নয় তাদেরও হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরাইলের সেনাবাহিনী যে গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে সেটি দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের প্রশাসনকে কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে ফেলে দিয়েছে। ১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে পশ্চিম তীর দখলে নেয় ইসরাইল। এরপর দেশটি সেখানে ১৩০টির বেশি বসতি নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে অনেকগুলো ছোট শহরের মতো, যেখানে আলাদা অ্যাপার্টমেন্ট, শপিং মল ও ব্যবসায়িক অঞ্চলও রয়েছে। অন্যদিকে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে পশ্চিম তীরকে অন্যতম প্রধান অংশ হিসেবে চায় ফিলিস্তিন। দেশটিতে ইসরাইলের বসতি স্থাপনের বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য করছে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। এপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।