পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তীব্রতর হওয়ার সাথে সাথে মধ্যপ্রাচ্যের দুই শক্তি ইরান ও সউদী আরব, যারা সাধারণত বেশিরভাগ ইস্যুতে পরস্পরের বিপক্ষে অবস্থান করে, মস্কোকে সাহায্য করছে। ইরান ইউক্রেনে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে অস্ত্র, যেমন ড্রোন এবং সম্ভবত ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করছে বলে জানা গেছে। সউদী আরব তার তেল উৎপাদনকে রাশিয়ার জন্য এমনভাবে অস্ত্রে পরিণত করেছে, যা মস্কোর যুদ্ধের খরচ যোগাতে সাহায্য করছে। দীর্ঘদিনের পশ্চিমা অংশীদার রিয়াদ এবং দীর্ঘদিনের পশ্চিমা শত্রু তেহরান উভয়ই মূলত একটি কারণে এটি করতে অনুপ্রাণিত হয়েছে। সেটি হ’ল যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট জ¦ালানি সঙ্কট সউদী আরবের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানকে আরো শক্তিশালী করতে দেশটিকে আক্রমণাত্মক খেলায় বড় উৎসাহ যুগিয়েছে। এ মাসে রিয়াদ তার কৌশল দ্বিগুণ করে ওপেক প্লাসের (ওপেক সদস্য এবং রাশিয়ার সমন্বয়ে গঠিত অন্যান্য অ-সদস্য উৎপাদক) সম্মিলিত তেল উৎপাদন প্রতিদিন ২০ লাখ ব্যারেল কমিয়ে দিয়েছে। এটি এমন একটি সময়ে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ তেলের দাম কমানোর ও উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আসছে, যাতে উভয়ভাবেই রাশিয়ান কোষাগার খালি হয়ে যায় এবং পশ্চিমে জীবনযাত্রার ব্যয়-সঙ্কটকে কমে যায়।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রাশিয়াকে সউদী আরবসহ অন্যান্যদের কাছে বাজারের থেকে কম দামে তেল বিক্রি করতে বাধ্য করেছে। এ হিসাবে, একটি সর্বনিম্ন মূল্যের চড়া বৃদ্ধি মস্কোর জন্য এখনও তার জ¦ালানি সম্পদ থেকে মুনাফা করার এবং তার ব্যয়বহুল যুদ্ধ টিকিয়ে রাখার প্রধান উপায়। ইরানের দিক থেকে, যদিও দেশটি একাধিকবার আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে যে, এটি একটি নিরপেক্ষ খেলোয়াড় এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার জন্য অস্ত্র পাঠায়নি, তবে এটি স্পষ্ট যে, এ যুদ্ধ একটি নতুন মঞ্চে পরিণত হয়েছে, যেখানে তেহরান মনে করে যে, যুক্তরাষ্ট্রকে দুর্বল করে দেয়ার লক্ষ্যে রাশিয়ার সাথে তার সম্পর্ককে শক্তিশালী করা যেতে পারে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা মনে করেন, ইরানের তৈরি মারাত্মক ড্রোনের একটি বড় চালান রাশিয়া ইউক্রেনে মোতায়েন করেছে। এছাড়াও মার্কিন গোয়েন্দা বহিনীর তথ্য বলছে যে, ক্রিমিয়াতে ইরানের সামরিক প্রশিক্ষক রয়েছে এবং তেহরান রাশিয়াকে ইউক্রেনে ব্যবহারের জন্য ইরানের তৈরি ‘সারফেস টু সারফেস’ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে সম্মত হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে, ইরান ও সউদী আরব উভয়ই ইউক্রেন সঙ্ঘাতকে পশ্চিমা আধিপত্য হ্রাস করার জন্য ব্যবহার করছে। এক্ষেত্রে পশ্চিমারা কীভাবে সবচেয়ে কার্যকরভাবে তার অবস্থানের পরিবর্তন ঘটাবে, তা স্পষ্ট নয়।
রিয়াদ এবং তেহরানকে আরো অনেকগুলো কারণ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যেতে প্রভাবিত করেছে। তবে সবচেয়ে বড় কারণ হ’ল, ক্রমবর্ধমান বহুমুখী বিশ্বব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থানকে শক্তিশালী করা। কয়েক দশক ধরে পশ্চিমা শক্তির দ্বারা চাপ সহ্য করা ও নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পর, ইরান এবং সউদী আরবের মতো আঞ্চলিক খেলোয়াড়রা বৈশ্বিক পরাশক্তিদের ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, তাদের সম্পর্ক এখন একটি দ্বিমুখী রাস্তায় চলে গেছে এবং তারা নিজেদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে অ-পশ্চিমা নেতাদের সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করতে চাইছে।
এ প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তেল নীতিতে সহযোগিতা করতে সউদী অস্বীকৃতির মানে মোটেই রাশিয়ার পাশে থাকা নয়। ইরানের বিপরীতে সউদী আরব ইউক্রেন-সম্পর্কিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে, ইউক্রেনকে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার সাহায্য প্রদান করেছে এবং একটি চুক্তিকে সমর্থন করেছে, যা ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হাতে আটক পশ্চিমা নাগরিকদের মুক্তি দিয়েছে। সউদী আরবের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলি ওয়াশিংটনের পাশে না থাকার বিষয়টিকে বেশি প্রতিফলিত করে। দেশটি মনে করে যে, যুক্তরাষ্ট্র আর নির্ভরযোগ্য অংশীদার নয়।
দশকব্যাপী মার্কিন-সউদী অংশীদারিত্বের একটি মৌলিক ভিত্তি ‘নিরাপত্তার বিনিময়ে তেল’ ওবামা এবং ট্রাম্প প্রশাসন দ্বারা নিশ্চিতভাবে ভেঙে পড়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৯ সালে ইরান-সমর্থিত বাহিনীর উৎক্ষেপিত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের আঘাতে সউদীর গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নিয়ে কটূক্তি করেছেন।
জ্বালানি বাজারে রাশিয়াকে প্রতিহত করার প্রয়োজনীয়তা যদি না থাকতো, তাহলে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও সম্ভবত বছরের পর বছর ধরে মোহাম্মদ বিন সালমানের সমালোচনা করতে থাকতেন। সউদী নীতিনির্ধারকরা এখন যুক্তরাষ্ট্রকে স্পষ্ট বার্তা পাঠাচ্ছেন যে, রিয়াদ একটি সউদী-প্রথম মেজাজে রয়েছে, তাদের অংশীদারিত্বের মৌলিক বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করলে মার্কিন প্রত্যাশার আকারটি হ্রাস পাবে, মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চল বহুমুখী হয়ে উঠেছে এবং সউদী আরব নিজেকে চরম কৌশলগত খেলার অধিকারী বলে মনে করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।