Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সিত্রাংয়ে ১৯ জেলার ৫৯ হাজার হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

২৪ জুলাই দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশের ১৯ জেলায় ৫৯ হাজার হেক্টর ফসলী জমি ক্ষতির কবলে পড়েছে। এরমধ্যে ৩৩ হাজার ৭০০ হেক্টর আমন ধান ও ২৫ হাজার ২০০ হেক্টর সবজি ও অন্যান্য ফসলের জমি রয়েছে। আক্রান্ত এসব জমির মধ্যে আমন ধান হেলে পড়ছে ও সবজির মাঠে পানি উঠেছে। ফলে এসব ফসলের ক্ষয়-ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে। তবে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনও নির্ধারণ করা যায়নি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয়নি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সেভাবে প্রভাব ফেলেনি। প্রাথমিকভাবে যা দেখছি তাতে বলা যায়, সেভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অর্থাৎ ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলকভাবে কম।

এ প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক হাবিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ক্ষয়ক্ষতি তেমন নেই। ১৯ জেলায় ৩৩ হাজার ৭০০ হেক্টর আমন ধানের জমি হেলে পড়েছে। আর অতিবৃষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে ১৪ হাজার হেক্টর সবজি ক্ষেত। তিনি বলেন, ১৯ জেলা নয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারাদেশেই কিছু না কিছু ফসল আক্রান্ত হয়েছে। তবে আমরা প্রাথমিকভাবে ১৯ জেলার তথ্য তৈরি করছি। বুধবার ৬৪ জেলার তথ্য আমাদের হাতে আসবে। তবে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমবে। ধারণা করা হচ্ছে, ৬ হাজার হেক্টর ধানের ক্ষতি হবে। আর সবজির ক্ষতি হবে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ হেক্টর।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সরেজমিন উইংয়ের তথ্যমতে, সিত্রাংয়ে দেশের ১৯টি জেলা আক্রান্ত হয়েছে। বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর।

প্রতিষ্ঠানটির তৈরি করা প্রাথমিক এক প্রতিবেদনের তথ্য মতে, এই ১৯ জেলায় ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ৩৩ হাজার ৭০০ হেক্টর আমনের জমি। এসব জেলায় সবজি ও অন্যান্য ফসলের আবাদ হয়েছে ৪২ হাজার ৬১৮ হেক্টর। সিত্রাংয়ে আক্রান্ত হয়েছে ২৫ হাজার ২০০ হেক্টর। ১৯ জেলায় মোট আক্রান্ত জমির পরিমাণ ৫৮ হাজার ৯০০ হেক্টর।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপকূলীয় ১৯ জেলাসহ দেশের সব জায়গায় কৃষি ফসলের কিছু কিছু ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে, আক্রান্ত ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, যেসব ধান হেলে পড়েছে সম্ভব হলে ৫ থেকে ৬টি করে ধানের গোছা একসঙ্গে রশির সাহায্যে বেঁধে দিয়ে খাড়া করে রাখতে হবে। এতে ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তবে ধান যদি আধা পাকা বা পাকার কাছাকাছি থাকে তবে জমি থেকে দ্রুত পানি সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি একটি শঙ্কার কথাও জানিয়েছে। বর্তমান বৃষ্টির কারণে সুগন্ধি জাতে শীষ ব্লাষ্ট ও অন্যান্য কিছু রোগবালাই দেখা দিতে পারে। এই রোগগুলো হয়ে গেলে আর দমন করা যায় না।

এছাড়া ঝড় বৃষ্টির কারণে ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতাপোড়া রোগ দেখা দিতে পারে। ধানের ফুল আসার পর এ রোগটি দেখা দিলে ফলনের তেমন কোন ক্ষতি হয় না বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিত্রাং

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ