Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দেশে ৩০ বছরেই কেন স্তন ক্যান্সার, গবেষণা প্রয়োজন : স্বাস্থ্যসচিব

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ অক্টোবর, ২০২২, ৭:৫৮ পিএম

দেশে ৩০ বছর বয়সেই নারীরা কেন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন, তা জানার জন্য গবেষণা করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। শনিবার (২২ অক্টোবর) ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) শহীদ ডা. সামছুল আলম খান মিলন মিলনায়তনে স্তন ক্যান্সার সচেতনতার মাস উপলক্ষে আয়োজিত ‘স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে, এগিয়ে চলি একসাথে’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ঢামেকের সার্জারি ও রেডিওথেরাপি বিভাগের উদ্যোগে শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করা হয়। এসময় স্বাস্থ্যসচিব বলেন, বিশ্বের অন্যন্য দেশে নারীরা স্তন ক্যান্সার রোগে ৫০ বছরের পর আক্রান্ত হলেও বাংলাদেশে ৩০ বছর পর থেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। এটি কেন হয়, সেজন্য গবেষণা প্রয়োজন। কেন আমাদের দেশের মানুষ আগে আক্রান্ত হচ্ছে সেটা জানা দরকার। গবেষণা হলে একটা ভিত্তি থাকে, যেটাকে নিয়ে কাজ করা যায়। আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, নারীরা দুই ধরনের ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন, একটি জরায়ুমুখ ক্যান্সার ও অন্যটি স্তন ক্যানসার। ইতোমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে নারীদের জরায়ুমুখের ক্যান্সারের স্ক্রিনিং চালু হয়েছে, এই প্রোগ্রামের সঙ্গে যেনো স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিংও করা যায় আগামী বছর থেকে সেব ব্যাপারে দেখা হবে। উদ্যোগ নেয়া হবে।

তিনি বলেন, পরিবারের সবার স্তন ক্যান্সারের বিষয়ে জানা উচিত যে, এটি একটি রোগ, এতে নারীরা আক্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু এটির চিকিৎসা ব্যয় বহুল। অসুস্থ হলে চিকিৎসা নিতেই হবে। ক্যানসার আক্রান্ত নারীদের ৫০ শতাংশ এই রোগে মারা যাচ্ছেন।

আনোয়ার হোসেন বলেন, স্তন ক্যান্সার নিয়ে মানুষের মধ্যে এখনো অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। স্কুল পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার শীর্ষক লিফলেট বিতরণ করে শিশুদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এর সঙ্গে চিকিৎসকরা নিজেদের ও স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেবেন। যেন চিকিৎসকরা সুস্থ থেকে অন্যদের সেবা দিতে পারেন। কারণ চিকিৎসক একজন মারা গেলে তার বিকল্প হিসেবে আরেকজন নেই।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম বলেন, রোগটি নিয়ে কারও সন্দেহ হলে প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষা করতে হবে। শুরুতে শনাক্ত হলে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ্য হওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং ঢাকা মেডিকেল থেকেই শুরু করা হওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি। এর জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে করা হবে। ৫০ বছরের পর পুরুষরা প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এ নিয়েও আমাদের কোনো স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম নেই। এটি নিয়েও কাজ করতে হবে।

ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমাদের স্তন ক্যান্সারের স্ক্রিনিং ব্যবস্থা আছে। এ সেবা আরও উন্নত করার জন্য নতুন মেমোগ্রাফি আমরা কিনেছি। এটা খুব দ্রুত চলে আসবে। এই মেমোগ্রাফিসহ মেশিন পরিচালনার জন্য আমাদের টেকনোলজিস্ট প্রয়োজন। সেজন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে আহ্বান জানাবো। এটা যতদিন না হবে ততদিন আমরা অন্যভাবে চালানোর চেষ্টা করবো।

নাজমুল হক বলেন, এখন মানুষের মধ্যে অনেকভাবেই সচেতনতা তৈরি হয়েছে। এখন মহিলারা তাদের শরীরে কোনো চাকা বা কিছু হলে চিকিৎসকের কাছে চলে আসেন। তবুও সামাজিকভাবে কিছু ট্যাবু রয়ে গেছে। সেজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। যেন মানুষ এ বিষয়ে মানুষ সচেতন হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখে ঢামেকের সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. সালমা সুলতানা, বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহকারী অধ্যাপক মো. ইব্রাহিম খলীল, ধন্যবাদজ্ঞাপন করেন রেডিওথেরাপি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. আলীয়া শাহনাজ। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অফ মেডিসিন বিভাগের ডিন প্রফেসর ডা. শাহরিয়ার নবী শাকিল, ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অসংক্রামক ব্যাধি কন্ট্রোল প্রোগ্রামের লাইন ডিরেক্টর প্রফেসর ডা. রোবেদ আমিন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক প্রফেসরডা. এ কে এম আমিরুল মোর্শেদ প্রমুখ।##

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ